সােয়েলের কাছে বাঙলাদেশের স্বীকৃতির প্রশ্নটি ভাবাবেগজাত
সংখ্যালঘুদের জাতীয় কনভেনশনে
লক্ষৌ, ৬ জুন (ইউ এন আই)-কাওয়াস বাগ বারাদরীতে বাঙলাদেশ প্রসঙ্গে ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির জাতীয় কনভেনশনের আজ সকালে উদ্বোধন হয়। লােকসভার সহকারী অধ্যক্ষ জি, এস, সােয়েল বলেন, বাঙলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়াটাই শেষ কথা নয়। যদিও সম্মেলনের উ অন্যতম দাবি হলাে অবিলম্বে স্বীকৃতি দান।
কনভেনশনের কাছে যারা শুভেচ্ছা বাণী পাঠিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের অন্যতম। তিনি ঐ প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে, বাঙলাদেশ সম্পর্কে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তগুলি সমর্থন করে সরকারের হাত শক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকারী অধ্যক্ষ শ্রীসােয়েল অবশ্য এরকম একটা আভাস দিয়েছেন যে পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী শরণ সিং’এর প্রত্যাবর্তনের পর বাঙলাদেশের স্বীকৃতি দান সম্পর্কে একটা সিদ্ধান্ত হতে পারে। শ্রীসিং বিশ্বের বিভিন্ন রাজধানীতে ভারতের অভিমত জানাতে ও জানতে গেছেন।
বক্তৃতা প্রসঙ্গে, সােয়েল বলেছেন বাঙলাদেশ সরকারের স্বীকৃতির প্রশ্নটি একটি ভাবাবেগজাত। তার ধারণা এর দ্বারা ভারত পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জুন্টার ফাঁদে পা দেবে। কারণ পশ্চিম পাকিস্তান সমগ্র বিষয়টি সাম্প্রদায়িক রূপ দিতে চায়। সে জন্য শ্রীসােয়েলের পরামর্শ হলাে বাঙলাদেশের স্বীকৃতি যা আদৌ শেষ কথা নয় তার জন্য উন্মুখ হয়ে না থেকে লক্ষ্য সার্বভৌমতা। শান্তি ও সমৃদ্ধি কিভাবে অর্জন করা যায় সেজন্য কাজ করা।
কনভেনশনের উদ্বোধন করে কেন্দ্রীয় খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ফরুদ্দীন আলি আমেদ বাঙলাদেশ সম্পর্কে ভারত সরকারের নীতি ব্যাখ্যা করে বলেন, এ লড়াই অবাঙ্গালী বা অ-মুসলমানদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম নয়। একটা সামরিক রাজত্বের বিরুদ্ধে সমগ্র জনতার সংগ্রাম।
স্বীকৃতি দানে আর দেরী নয়
বাঙলাদেশের পক্ষে তিন জনের যে সংসদীয় প্রতিনিধিদলটি ভারত সফর করেছেন তার অন্যতম সদস্য শ্ৰীমতী নুরজাহান মুর্শিদ ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেন যে বাঙলাদেশকে স্বীকৃতি দানে আর যেন দেরী করা না হয়। তিনি বলেন বাঙলাদেশ এখন মুক্ত দেশ। জাতি হত্যার পর বাঙলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের আর কোন সম্পর্ক নেই। এই সংকটময় মুহূর্তে ভারত সরকার এগিয়ে এসে বাঙলাদেশের জনতাকে রক্ষা করবে বলে তিনি আকুল আবেদন জানান।
সূত্র: কালান্তর, ৭.৬,১৯৭১