১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ পশ্চিম পাকিস্তান
রাওয়ালপিন্ডিতে সরকারী মুখপাত্র বলেছেন পূর্ব পাকিস্তানে সিভিলিয়ান এবং যুদ্ধবন্দীদের সাথে মুক্তিবাহিনীর অত্যাচার এর জন্য ভারতীয় বাহিনীকেই দায়ী করা হবে। মুখপাত্র জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী তাদের প্রতি আচরন করার জন্য ভারতের প্রতি আহবান জানান। মুখপাত্র বলেন ভারত আগেই ঘোষণা করেছিল মুক্তি বাহিনীর কম্যান্ড তাদের হাতে। তিনি ভারত সরকারের কাছে সেখানকার সংখ্যালঘুদের (বিহারী)নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছেন এবং তাদের আবাস স্থলে বোমাবর্ষণ বন্ধ করার দাবী জানিয়েছেন।
পাকিস্তান বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল রহিম বলেছেন ভারত তাহার বিমান বাহিনীর পূর্বে মোতায়েন ৩টি স্কোয়াড্রন সরিয়ে এনে পশ্চিম সেক্টরে মোতায়েন করেছে। তিনি উভয় সেক্টরে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বেসামরিক নাগরিকদের উপর বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে।
সন্ধ্যায় আরেক মুখপাত্র বলেছেন ভারতীয় বিমান বাহিনী কুমিল্লা রাজেন্দ্রপুর ভৈরবে বেসামরিক নাগরিকদের উপর বোমা হামলা করেছে।
পাকিস্তানের ৮ নেতা লাহোরে যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও জনগন বীরত্ব এর সাথে লড়ে যাচ্ছে। তারা আশা করেন পাকিস্তানের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো পাকিস্তানের প্রকৃত সাহায্যে এগিয়ে আসবে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন মিয়া মমতাজ দৌলতানা, খান আব্দুল কাইউম, মালিক মোহাম্মদ কাশিম, মওলানা শাহ আহমেদ নূরানী, নবাবজাদা নসরুল্লাহ খান, মিয়া হোসাইন মোহাম্মদ, মওলানা শামসুল হক খান্দি,
ভারত ডিসি ৩ বিমান থেকে নিক্ষেপ করা অবাঙ্গালী সহযোগীদের উদ্দেশে লিফলেটে বলা হয়েছে তারা আত্মসমর্পণ করলে তাদের জীবন এবং সম্পত্তির নিরাপত্তা দেয়া হবে।
লাহোরে একক ভাবে বিবৃতিতে পিপিপি নেতা মাহমুদ আলী কাসুরী বেসামরিক নাগরিকদের উপর বিমান হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন এ ধরনের আচরন মানব সভ্যতার ইতিহাসে নজির বিহীন। লাহোরে দলীয় এক কর্মী সমাবেশে পিপিপি ধর্ম সম্পাদক কাওসার নিয়াজি বলেছেন সাধারন পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাশ হলেও ভারত তা না মানায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পিডিপি সাধারন সম্পাদক শেখ নাসির হোসাইন বলেছেন জাতীয় যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পিছনে জনগনের সর্বাধিক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।