৩০ নভেম্বর ১৯৭১ঃ সোহরাওয়ার্দী কন্যা আখতার সোলায়মান
সোহরাওয়ার্দী কন্যা বেগম আখতার সোলায়মান রাওয়ালপিন্ডিতে এক সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন ভুটটো এবং নুরুল আমিনের সাথে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পরবর্তী বৈঠকে একটি জাতীয় সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত হবে। ভারত পূর্ব পাকিস্তানে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু করায় এই সঙ্কট উত্তরনে জাতীয় সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তা গুরুত্বের সাথে অনুধাবন করতে হবে। তিনি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে ইয়াহিয়া খানের প্রতিশ্রুতির পুনরুল্লেখ করেন এবং বলেন জাতীয় স্বার্থেই নেতৃবৃন্দকে একতাবদ্ধ হতে হবে। শত্রুর বিরুদ্ধে লড়বার জন্য তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। তিনি বলেন ভারত স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের নামে পূর্ব পাকিস্তানকে তার ভূখণ্ডের সাথে একীভূত করতে চায় যা কোনদিন বাস্তবে রূপ পাবে না কারন পাকিস্তানীরা যেখানেই থাকুক না কেন তারা পাকিস্তানীই।
তিনি বলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দুরভিসন্ধি ধরা পড়েছে এবং পূর্ব পাকিস্তানীরা ইহা টের পেয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশ আন্দোলনের ছদ্মাবেশে ভারতীয় খেলা ও কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জনের স্বরূপ সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তানীরা সম্পূর্ণ সচেতন রয়েছে। ভারতীয় হামলার প্রেক্ষাপটে পূর্ব পাকিস্তানীরা অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষে আরও দৃঢ় সঙ্কল্প হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের উপযুক্ত ভাবে পরিচালিত করা নেতৃবৃন্দের দায়িত্ব। তিনি সশস্র বাহিনীর প্রশংসা করে বলেন তারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা দেশকে নিজেদের চাইতে বেশী ভালবাসে। এই দেশপ্রেমিক বাহিনী দেশের প্রতি ইঞ্চি ভুমি হতে শত্রুদের বিতারন করবে। তিনি বলেন সকল শরণার্থী ভারতে পাড়ি জমাবার পর তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে এখন তারা দেশে ফিরতে অত্যন্ত উদগ্রীব কিন্তু তাদের ফেরার পথ সহজ করতে সাধ্যমত চেষ্টা করার জন্য আগামী সপ্তাহে তিনি পূর্ব পাকিস্তান সফর করবেন। তিনি বলেন শতকরা ৯৯ জন শরণার্থী দেশে ফিরার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে কিন্তু তাদের ফেরার পথ কণ্টকাকীর্ণ। আমাদের জনগন যাতে বিভাগ পূর্ব হিন্দুদের অধীনস্থ না হয়ে পড়ে ইহাই আমরা আন্তরিকভাবে কামনা করি। তিনি বলেন বিভাগ পূর্ব মুসলমানেরা হিন্দুদের দাস হয়ে থাকতো আমরা তাদের এ ধরনের ভাগ্যবরন হতে বাচাতে চাই।