২৭ নভেম্বর ১৯৭১ঃ যুদ্ধ পরিস্থিতি
পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন গত সাত দিনে সহস্রাধিক ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। ভারত পূর্ব পাকিস্তানের ৫ দিকে আক্রমন চালাচ্ছে। তাদের প্রত্যেকটি হামলাই ব্যাটেলিয়ন শক্তি সম্পন্ন এবং মর্টার এবং আর্টিলারির সাহায্য নিয়ে হচ্ছে। কুমিল্লা এবং যশোরে ট্যাঙ্ক ব্যাবহারও করা হচ্ছে। আজ ভারতীয় বাহিনী বিলোনিয়ায় দুটি, চৌগাছায় দুটি এবং আখাউরায় একটি হামলা করেছে। আজ ৪৩ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত এবং ১০০ জন আহত হয়েছে। পাকিস্তান পক্ষে ৩ জন নিহত ১১ জন আহত হয়েছে। আখাউরার হামলাটি ছিল নতুন ফ্রন্ট এটি মুকুন্দপুর রেল স্টেশনে খোলা হয়েছে। ফেনীর গিলাবারিয়া এবং গাজীপুরে তারা অপর হামলা দুটি করে। চৌগাছায় একটি আব্দুলপুরের দিকে অপরটি যশোরের ১০ মাইল পশ্চিমে কায়েমকোলায় হামলা করা হয়। এক প্রশ্নের উত্তরে মুখপাত্র বলেন ১৬ জন বিদেশী সাংবাদিক যুদ্ধ কভার করছেন তাদের ইচ্ছামত ঘুরতে দেয়া হচ্ছে। এখনও কোন সাংবাদিক পূর্ব পাকিস্তান গেলে একই সুযোগ পাবেন।
ফেনী
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র বলেন ফেনীর উত্তরে গিলামালিয়াতে ভারতীয় বাহিনীর সাথে পাকিস্তানী বাহিনীর দুই দফা প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়েছে। তিনি বলেন ভারতীয় বাহিনী ও তাদের চরদের সাফল্য জনক ভাবে মোকাবেলা করা হয়েছে। তাদের সেখানেই প্রতিহত করা হয়েছে।
ভারতীয় বাহিনীর সাথে দায়িত্ব পালনরত একদল সাংবাদিক ফেনীর উত্তরে পীর বক্স হাটে মুক্তিযোদ্ধাদের ভিডিও চিত্র ধারন করেছেন। এতে তার ভাষ্য মতে মুক্তি বাহিনী চট্টগ্রাম শহরের ৪০ মাইলের মধ্যে অবস্থান করছেন। তারা চট্টগ্রামে তিন দিক থেকে অগ্রসর হচ্ছেন। এ দলের সাথে তিন ইঞ্চি মর্টার আছে তাই তারা সামনের যুদ্ধে সফল হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
যশোর
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র বলেন চৌগাছা দখলের পর আরও শক্তিশালী রুপে ভারতীয় বাহিনী যশোরের দিকে অগ্রসর হলে আব্দুলপুরে তাদের সাথে পাক বাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। যশোরের পশ্চিমে কায়েমখলায় ভারতীয় বাহিনীর আরও একটি বড় আক্রমন প্রতিহত করা হয়েছে। জেনারেল নিয়াজি গতকাল এখানে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিজে দেখে যান। ভারতীয় বাহিনী যশোরের ৫ মাইলের মধ্যে আছে ভারতীয় বেতারে প্রচারিত এমন সংবাদ মুখপাত্র অস্বীকার করেন। ভারত বিদেশী সাংবাদিকদের জন্য আজ বয়রায় আটক পাকিস্তানী অস্রের এক প্রদর্শনী করেছে।নতারা তিনটি ট্যাঙ্ক সহ প্রচুর অস্র প্রদর্শন করেছে। প্রদর্শনীতে তাদের পিটি ৭৬ ট্যাঙ্ক ও তারা রেখেছিল। আটক কৃত অস্র গুলো ছিল চীনের তৈরি। ৪৫ কেভেলরির অধিনায়ক বিবিসি সাংবাদিক ডেভিড সেল কে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন।
পঞ্চগড়
জগদ্দলহাট থেকে পিছিয়ে পাক বাহিনী পঞ্চগড়ের চারদিকে বৃত্তাকার অবস্থানে শহর প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত থাকে। ভারতীয় বাহিনীর ৭ মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রি সুগারমিল এলাকা দিয়ে আক্রমন শুরু করে। এদিন ভারতীয় বাহিনী সুগার মিল ও শহরে পাক বাহিনীকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পাকিস্তান দাবী করে এদিনের যুদ্ধে ভারত এখানে বিমান বাহিনীর সাহায্য ও ট্যাঙ্ক এর সাহায্য নেয়।