২৭ নভেম্বর ১৯৭১ঃ হিলি যুদ্ধ ও যুদ্ধ ক্ষেত্রে লে. জেনারেল নিয়াজী
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র বলেন হিলিতে ভারতীয় ১৬৫ ব্রিগেডের ৮ গার্ড বাহিনী বিমান বাহিনী, সাঁজোয়া এবং গোলন্দাজ সাপোর্ট নিয়ে হিলির উত্তর দিক থেকে আক্রমন চালাচ্ছে। এখানে পাকিস্তানের ৪ এফএফ তাদের প্রতিরোধ করে। ৪ এফএফ এর লেঃ সেলিম ও হাবিলদার ইসাফ যুদ্ধে বীরত্ব প্রদর্শন করেন। ইসাফকে পরে তমঘা ই জুরাত পদক দেয়া হয়েছিল। এখানে দুটি ভারতীয় ট্যাঙ্ক ধ্বংস এবং ৮ জন অফিসার সহ ১৩৯ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে। পাকিস্তান পক্ষে নিহত হয় ১১ জন, আহত হয় ২২ জন। এ যুদ্ধে পাকিস্তানী কমান্ডার লেঃ কর্নেল আব্বাসী আহত হন। তার পরিবর্তে সিও হিসেবে ৪ এফএফ এ যোগ দেন ডিভিশন হেড কোয়ার্টার এর জিএসও ওয়ান লেঃ কঃ মমতাজ। লে. জেনারেল নিয়াজী এদিন নাটোর হয়ে হিলি এলাকা পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি বেশ কয়েকটি বাঙ্কার পরিদর্শন করেন। কম সৈন্য নিয়ে একের পর এক ভারতীয় আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হওয়ায় তিনি সৈন্যদের প্রশংসা করেন। হিলিতে তিনি কিছু বিদেশী সাংবাদিকদের সাক্ষাত প্রদান করেন এবং একজন মহিলা সাংবাদিককে ঢাকায় সাক্ষাত দিবেন বলে তার হেলিকপ্টারে ঢাকা নিয়ে আসেন। রাতে তিনি তাকে সাক্ষাৎকার দেন। পরদিন তা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে নিউইয়র্ক টাইমসেও তার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন সাতদিনের যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনী এবং তার মিত্র মুক্তিবাহিনী শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়েছে।
তাদের সাফল্য একটাই প্রদেশের জনগণকে ভীত সন্ত্রস্ত করা। তিনি বলেন তাদের তিনজনের সমান আমাদের একজন। পাকিস্তানী সৈন্য অদ্বিতীয়। আমরা কখনো পরাজিত হইনি। ইতিহাস খুজে দেখতে পারেন। ভারতীয়রা কোনদিন জিততে পারেনি। আমি সহজেই তাদের তিনজনকে কাবু করে ফেলতে সক্ষম। সাভারে রাজাকার কোম্পানী কমান্ডারদের প্রথম দলের প্রশিক্ষণ এর বিদায়ী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন লে. জেনারেল নিয়াজী। রাজাকারদের ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, দেশের শত্রুদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। রাজাকারদের উপর নির্ভর করছে দেশের ভিতরের শান্তি-শৃঙ্খলা। রাজাকার কমান্ডারদের আরেক ব্যাচের ট্রেনিং ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হবে বলে এদিন জানানো হয়।