You dont have javascript enabled! Please enable it! রাজাকার তালেবুরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ॥ কলাপাড়া তােলপাড় - সংগ্রামের নোটবুক

সেই রাজাকার তালেবুরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ॥ কলাপাড়া তােলপাড়

স্টাফ রিপাের্টার, বরিশাল ॥ রাজাকার তালেবুর রহমান সম্পর্কে দৈনিক জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর কলাপাড়ায় তােলপাড় শুরু হয়ে যায় । এই ঘাতকের বিরুদ্ধে শহীদ মিনার ভাঙ্গার অপরাধে থানা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রবিবার মামলা দায়ের করা হয়েছে। থানা ম্যাজিস্ট্রেট নূরুল আলম মামলাটির আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলায় বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য, তিন সাবেক সংসদ সদস্যসহ ১১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। কলাপাড়ায় রবিবার তালেব রাজাকার ছিল টক অব দ্য টাউন। দৈনিক জনকণ্ঠ সেখানে পৌছবার আগে সংবাদ পৌছে যায়। ফলে দৈনিক জনকণ্ঠ পৌছার সাথে সাথে। কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। ৭ টাকার জনকন্ঠ তিনগুণ দামেও বিক্রি হয়েছে। ফটোকপি চলেছে ২ টাকা করে। অসংখ্য ফটোকপিতে ছেয়ে গেছে কলাপাড়া। বর্ধিষ্ণু এই থানা শহরের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জনকণ্ঠের স্থানীয় প্রতিনিধিকে এ ধরনের একটি সংবাদ প্রকাশের জন্য বার বার ধন্যবাদ জানান। বিএনপির রাজাকার অংশটি দৈনিক জনকণ্ঠ কলাপাড়ায় পৌঁছার পর চুপসে যায়। সৈয়দ মােয়াজ্জেম হােসেনের নেতৃত্বাধীন বিএনপির নেতা-কর্মীরা দ্বিগুণ উৎসাহে সভা সমাবেশ করেছে। এদিকে ১৯৭১ সালের ২৮ মে শহীদ মিনার ভাঙ্গার অপরাধে অভিযুক্ত করে তালেবুর রহমানকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী মুক্তিযােদ্ধা মােঃ জহুরুল হক।

পেশায় পল্লী চিকিৎসক। ১৯৭১ সালে তালেবুরের রাজাকার বাহিনী শহীদ মিনার ভাঙ্গার সময়ে এই জহুরুল হকই বাধা দিয়েছিল। সে কারণে তাকে নির্যাতনও সইতে হয়। মামলার বিবরণে বলা হয়, তালেবুর রহমান স্বাধীনতার আগে জামায়াত নেতা ছিল। যাত্রাগানের আসরে এক নর্তকীর নাচ দেখে সে উন্মাদ হয়ে তাকে বিয়ে করে। ঘটনার দিন ২০/২৫ রাজাকার নিয়ে তালেবুর রহমান শহীদ মিনার ভাঙ্গার নেতৃত্ব দেয়। শাবল খােন্তা দিয়ে সকাল ১০-১২টার মধ্যে চুরমার করে শহীদ মিনার। বাধা দিতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয় জহুরুল হক। পরে পাগল সেজে প্রাণে রক্ষা পায়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে বিনােদ বিহারী দত্তকে হত্যার অভিযােগ আনা হয়। ১৯৯২ সালে ভারতে বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার পরবর্তী সময়ে কলাপাড়ার মাছুয়াপট্টির আখড়াবাড়ি ভাঙ্গার নেপথ্য নায়ক তাকেই বলা হয় । জহুরুল হক দেশে এতদিন মামলা দায়েরের পরিবেশ না থাকায় বিলম্বে মামলা করার কারণ হিসাবে জানান। তার পক্ষে আইনজীবী জালাল উদ্দিন তালুকদার ও হাফিজুর রহমান চুন্ন তালেবুর রহমানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২৯৫/১২৪(ক)/১৪৪/১৫০/৩২৩ ধারায় অভিযােগ আনেন।

জনকণ্ঠ ॥ ১৫-০১-২০০১

সূত্র : সেই রাজাকার – জনকন্ঠে প্রকাশিত রিপোর্টের সংকলন