মুক্তিযুদ্ধ তিনটি প্রধান ব্যাধি দূর করেছে
বাঙলাদেশের জাতীয় আওয়ামী পার্টির সভাপতি অধ্যাপক মুজফফর আহমেদ নয়া দিল্লিতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, বাঙলাদেশ এখন একচেটিয়া কারবারী, সামন্ততন্ত্রী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ক্রীড়নকদের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে, এবং এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে জাতির শক্তি।
জাতির মুক্তিসংগ্রামে সমাজব্যবস্থার তিনটি প্রধান ব্যধিকে দূর করা হয়েছে। পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তানে পশ্চিম পাকিস্তানের একচেটিয়া ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলাের অধিকার নির্মূল হয়েছে। বড় বড় ভূস্বামীরাও বিছিন্ন হয়েছে, যারা পশ্চিম পাকিস্তানের লােক ছিল।
মুক্তিসংগ্রামের সময় বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী বাজনৈতিক দলের মধ্যে যে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, বাঙলাদেশের জনগণ চায় একটা জাতীয় সরকার গঠন করে তা যেন টিকিয়ে রাখা হয়।
সি আই এ-র অদৃশ্য হস্তক্ষেপ জাতির ভবিষ্যতের পক্ষে সর্ববৃহৎ বিপদ সৃষ্টি করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাঙলাদেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতির সুযােগ নেবার চেষ্টা করবে এবং উদার হস্তে অর্থ দান করে বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিক দলগুলাের মধ্যে অনুপ্রবেশ করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার প্রচারযন্ত্রগুলাের ভিতর দিয়ে ভারতীয় ও মুক্তি বাহিনীকে ‘দখলদার বাহিনী বলে। চিত্রিত করে ইতিমধ্যেই ভারতবিরােধী অভিযান শুরু করে দিয়েছে।
ভারতীয় সৈন্যবাহিনী তাদের দৃষ্টান্তস্থানীয় আচরণ ও বন্ধুত্ব দিয়ে বাঙলাদেশের মানুষের হৃদয় জয় করেছে। বহুদেশ সি আই-এর ক্ষমতা কম করে দেখে ভুল করেছে, তবে আমরা অথবা ভারতে কেউ-ই সে ভুল করব না।
অধ্যাপক আহমেদ বলেন, বর্তমানে তার দেশের অব্যবহিত সমস্যা হচ্ছে জনসাধারণের সর্বনিম্ন মৌলিক প্রয়ােজনগুলাে মেটানাে।
সূত্র: সপ্তাহ, ৭ জানুয়ারি ১৯৭২