গুলি করে শরণার্থী আগমন ঠেকানাে যেত কিন্তু
ইন্দিরা গান্ধী লন্ডন, ২৭শে অক্টোবর : হয়ত এপার থেকে গুলি চালিয়ে বাংলাদেশের শরণার্থীদের ভারতে আসা বন্ধ করা যেত, কিন্তু তা করা যায় না। রােজই কাতারে কাতারে লােক এখনও বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসছে এ দেখার পরও কোন শরণার্থী দেশে ফিরে যাবে কি আশা করা যায়? তবে, যেসব শরণার্থী এদেশে এসেছে, তাদের কিছুতেই ভারতের নাগরিক করা হবে না। শ্রীমতি গান্ধীর মতে : সমস্যার যদি কোন সুরাহা হয় তাহলে আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তন নিয়ে মাথা ঘামানােই শ্রেয়ঃ। তিনি বলেন : অনেকে বুঝাতে চাইছেন যে, সমস্যার মূলে হল ভারত ও পাকিস্তানের বিবাদ। এ ধারণা মােটেও সত্যি নয়। বিবাদ যদি কারও সাথে থেকে থাকে তবে তা হল, পাকিস্তানের জঙ্গীশাহীর সঙ্গে সে দেশের জনগণের।
শ্রীমতী গান্ধী আরও বলেন : এদিক দিয়ে দেখতে গেলে সমস্যাটি পাকিস্তানের ঘরােয়া ব্যাপার কিন্তু যখন ৯০ লক্ষ লােক অন্য দেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় তখন বিষয়টি আন্তর্জাতিক সমস্যায় রূপ নেয়। পাকিস্তানের নিজেদের সমস্যার সমাধানপত্র যদি এই হয় যে, এক বিপুল সংখ্যক লােক অস্বস্তি র কারণ অতএব তাদের অপর এক দেশে তাড়িয়ে নিশ্চিত হব তা হলে তা নিশ্চয় তাজ্জবের ব্যাপার। তবে এ বিষয়ে আমি কৃতসঙ্কল্প যে বিপাকে পড়ে যারা ভারতের আশ্রয় নিয়েছে আপাততঃ তাদের আশ্রয় দিলেও ওদের স্বদেশে প্রেরণে ভারত দৃঢ়সংকল্প।
বাংলাদেশ (১) ॥ ১: ১৯ ১ নভেম্বর ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪