জকিগঞ্জে বেসামরিক প্রশাসন চালু হয়েছে
(স্টাফ রিপাের্টার) শত্রুমুক্ত জকিগঞ্জে এখন বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক প্রশাসন পুরাপুরি চালু হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ পরম উল্লাসে মুক্তিবাহিনী ও তাদের নির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে স্বাগত জানাচ্ছে। ঘরে ঘরে স্বাধীন বাংলার পতাকা শােভা পাচ্ছে। হানাদারদের অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে স্থানীয় যে সব অধিবাসী এতদিন ঘর বাড়ী ছেড়ে প্রবাস যাপন করছিল তারা এখন পরমানন্দে নিজ নিজ গৃহে ফিরছে। দোকানপাট ও হাট বাজার স্বাভাবিকভাবে চালু হয়েছে। ছেলেমেয়েরা আগের মত স্কুলে যাতায়াত শুরু করেছে। শতাধিক পাক-তস্কর বন্দী হয়েছে। গত ২৫শে নভেম্বর জকিগঞ্জ মুক্ত করার পর এ পর্যন্ত প্রায় দেড়শত পাকসৈন্য ও তাদের স্থানীয় সশস্ত্র তাবেদারদেরকে জীবন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে। বন্দীদের মধ্যে একজন ক্যাপ্টেন ও একজন জেসিও সহ প্রায় ৪০ জন নিয়মিত সৈন্য এবং শতাধিক রাজাকার ও তাবেদার পুলিশ রয়েছে। এদের অনেকেই ‘যুদ্ধে পরাজয়ের পর আত্মসমর্পণ করেছে। যুদ্ধে শত্রুপক্ষের হতাহতের সর্বশেষ সংখ্যা। দুইশতাধিক হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এখনও মৃত দেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। লে: আফজাল হাজীরের আত্মহত্যা। পাকবাহিনীর লেঃ আফজাল হাজীর মুক্তিবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এড়াবার জন্য আত্মহত্যা করে। প্রকাশ, পরাজয় অবশ্যম্ভাবী জেনে লেঃ আফজালের অধীন ১০ জন সেপাই প্রাণভয়ে পালাতে শুরু করে তাকে পিছনে ফেলে। হাজীর তাদের বিরত করতে না পেরে পলায়মান কাপুরুষদের উপর গুলি চালায়। এবং নিজে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
মুক্ত বাংলা ॥ ১ : ১০ ॥ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪