মুন্নার দুঃস্বপ্ন
স্টাফ রিপাের্টার
“আব্বার কাছে যাব”-এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই মুন্না জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তারপর ওর কাছে কোন কথারই জবাব পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ কূটনৈতিক মিশনে শ্রীহােসেন আলীর স্ত্রী বেগম আলী জানান, তিনদিন আগে কলকাতার ট্রাফিক পুলিশ এই মেয়েটিকে রাস্তায় একা পেয়ে মিশনে নিয়ে আসে। সেই থেকে সে বেগম আলীর সঙ্গেই আছে। ওর কাছ থেকে গত তিন দিনে যেসব খবর পাওয়া গিয়েছে তা হলাে : মেয়ের চোখের সামনেই তার বাবা ও দাদাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। মেয়েটির ভালাে নাম কুমারী আয়েশা হােসেন। বয়স তের। গত মাসে কুষ্টিয়া শহরে পাক হানাদাররা আক্রমণের সময় মুন্নাদের বাড়িতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুন্নার চোখের সামনে তার বাবা শ্রীনাসিরউদ্দিন হােসেন ও দাদা শ্রীনজরুল হােসেনকে খুন করে। বীভৎস সেই দৃশ্য দেখে দিশেহারা মুন্না প্রাণভয়ে অন্ধের মত দৌড় দেয়। মা কোথায় আজও মুন্না জানে না। বেগম আলী বলেন, মুন্না এখন ঘুমের ঘােরে দুঃস্বপ্ন দেখে চেঁচিয়ে ওঠে। অতীতের প্রায় কিছুই তার মনে পড়ে না। মুন্নার এক চাচা পশ্চিমবঙ্গে আছে বলে তার বাবার কাছে শুনেছে। কিন্তু তাঁর নাম ঠিকানা সে জানে না।
Reference:
১২ মে ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা