দালালের কণ্ঠস্বর
গত ৫ই অক্টোবর জাতিসংঘে পাকিস্তানী প্রতিনিধিদল বলেন, শেখ মুজিব ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আপােস। করিতে রাজী না হওয়ায় পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রতিনিধি দলের নেতা মাহমুদ আলী অভিযােগ করে বাংলাদেশের নেতা এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি। করেন যাহা দেশের আইন বিরােধী।”
বাংলার বাণী ॥ ৭ সংখ্যা ॥ ১২ অক্টোবর ১৯৭১
অস্ত্রসহ রাজাকারের আত্মসমর্পণ
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণ ক্ষমা ঘােষণা করার পর গত ১১ই অক্টোবর কালিয়াকৈর পাক দস্যুদের ঘাটি থেকে চারজন রাজাকার অস্ত্র ও গােলা বারুদসহ আমাদের মুক্তিবাহিনীর নিকট আত্ম। সমর্পণ করে।
জাগ্রত বাংলা ॥ ১; ৪ ১৪ অক্টোবর ১৯৭১।
রাজাকারদের অবস্থা
গত ১১ই অক্টোবর দেওপাড়া পাক ঘাটী হইতে ৩০ জন রাজাকার পলায়ন করিলে জল্লাদের দলের বাকী। ২৮ জন রাজাকারকে মেশিনগানের গুলিতে হত্যা করে।
জাগ্রত বাংলা ॥ ১: ৪ # ১৪ অক্টোবর ১৯৭১।
মােনায়েম খান খতম
১৩ অক্টোবর ॥ বৃহস্পতিবার পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর পাঞ্জাবী শাসকের ঘৃণা দোসর কুখ্যাত মােনায়েম খান ঢাকায় | মুক্তিবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে বলে বিশেষ সুত্রে জানা গেছে। রেডিও পাকিস্তানও এই সংবাদের সত্যতা স্বীকার করেছেন। মােনায়েমের মৃত্যু সংবাদে পাক দালালদের মধ্যে গভীর আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এবং তারা নিজেদের ঘরবাড়ী ছেড়ে সামরিক ছাউনিতে রাত কাটাচ্ছে।
প্রতিনিধি ॥ ১ : ৩ ॥ ১৫ অক্টোবর ১৯৭১
মােনেম খান খতম
বাংলার বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাসের অন্যতম মীরজাফর, যার নির্দেশে বাংলার পথে প্রান্তরে ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত শত সহস্র মুক্তিকামী ছাত্র, তরুণ, শ্রমিক, কৃষক, বুদ্ধিজীবী অকালে প্রাণ হারিয়েছেন, কারাগারের অন্তরালে দুঃসহ বন্দী জীবন যাপন করেছেন সেই কুখ্যাত মােনেম খান গত | ১৩ই অক্টোবর ঢাকার বুকে মুক্তি বাহিনীর গেরিলাদের বুলেটের গুলীতে গুরুতররূপে আহত হয়ে ১৪ই | অক্টোবর মারা গিয়েছে-জয় বাংলার মুক্তি বাহিনীর জয়।
জয়বাংলা (১) x ১: ২৩ ১৫ অক্টোবর ১৯৭১
সংগ্রামী অভিনন্দন।
দালালদের হােতা মুখ ভােলা হচ্ছে। সংগ্রামী অভিনন্দন ॥ ঢাকার হামিদুল হক ওরফে হরিবল (Horrible) হক চৌধুরীর ‘পাকিস্তান অবজারভার’ কাগজ খানা শীঘ্রই আপনাদের চোখে পড়েছে কিনা জানিনা। এই পত্রিকায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে মুক্তি বাহিনীর গেরিলা ইউনিটের গুলিতে নিহত তিনজন অবাঙালী রাজাকারের মৃতদেহের ছবি ছেপে বলা হয়েছে, এরা দুষ্কৃতিকারীদের হাতে নিহত হয়েছে। বাংলাদেশে ‘দুষ্কৃতিকারী’ কারা হরিবল হক চৌধুরীর কাগজ খানা তা ভালভাবেই জানে। হরিবল হক চৌধুরী এবং তার স্যাঙ্গত দালালেরাও জানে শীঘ্রই তাদের ওই মৃত রাজাকারদের অনুগমন করতে হবে। হরিবল হক। তাই দেশে থাকতেও এখন ভরসা পায় না।
জয়বাংলা (১) ॥ ১: ২৩ ॥ ১৫ অক্টোবর ১৯৭১।
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪