নিয়াজি বীভৎসতা
গত মহাযুদ্ধের কুখ্যাত জার্মান কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অত্যাচারের ইতিহাস বিশ্ববাসীর চিরকালের নিন্দার বস্তু হয়ে রয়েছে। কিন্তু পাক বর্বরতা তাকেও হার মানিয়েছে। নাৎসি বাহিনীর কায়দায় পাকবাহিনী তাদের অন্তিমকালের ‘অল বদর’ নামে সেরূপ একটি ধর্মোন্মত্ত মুসলিম সংস্থা গঠন করে পৈশাচিক তান্ডব নীতি পতনের শেষ কয়দিন চালিয়ে যায়। এরা নারী ধর্ষণ থেকে শুরু করে শেষ কয়দিনে বুদ্ধিজীবিদের যে ভাবে ধরে এনে হত্যা করেছে তার কথা সম্প্রতি জানা যাচ্ছে। ঢাকা বুড়ীগঙ্গার অপর তীরে ‘রায়ের বাজার’ নামে এক জলভূমিতে মৃতদেহগুলি আবিষ্কৃত হবার পরই এই নৃশংস হত্যাকান্ডের কথা জানা যায়। আজ আমেরিকার পতাকা থেকে নিশ্চয়ই তারাগুলাে খসে গেছে, নয় গণতন্ত্রের বুলির আড়ালে তাদের বিবেক এত স্তব্ধ থাকতে পারতাে না। কিন্তু মুক্তিবাহিনী ও বাংলা দেশের সংগ্রামী মানুষ এ পৈশাচিকতা কখনই বরদাস্ত করবে —কারণ এ পৈশাচিকতা কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্থান পায় না। তাই বাংলাদেশের দিকে দিকে ‘অলবদর’ ও এ জাতীয় পিশাচদের খুঁজে চিরতরে উৎখাত করার অভিযান শুরু হয়েছে।
বিপ্লবী বাংলাদেশ ॥ ১: ১৮ ॥ ১৯ ডিসেম্বর ১৯৭১
গণ-হত্যাকারীদের বিচার করা হবে
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার এক ঘােষণায় বলা হয়েছে যে, পাক হানাদার বাহিনীকে যে সব লােক সহযােগিতা করেছে তাদের উপযুক্ত বিচার করা হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছে এবং দেশবাসীর মধ্যে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে তাদের বিচারের জন্য বিশেষ বিচারপতি নিয়ােগ করা। হবে। সরকার, প্রত্যেক থানায় নির্দেশ দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে গণহত্যার সহযােগীদের যেন অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিপ্লবী বাংলাদেশ ॥ ১: ১৮ ॥ ১৯ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪