হানাদারদের বর্বরতা
নিউজ উইক-এর সংবাদদাতা উল্লেখ করেছেন ঢাকার নিকটস্থ ডেমরা অঞ্চলের কথা। এখানে মুক্তি বাহিনীর লােকরা লুকিয়ে আছে শুনে গুলি করে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে সব পুরুষ মানুষকে হত্যা করেছে পাক ফৌজ। কিশােরী, যুবতী ও প্রৌঢ়াদের উপর চালিয়েছে পাশবিক অত্যাচার। অথচ ঐ এলাকায় কোন মুক্তিযােদ্ধাই ছিল না। রাজাকারদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে নিউজ উইক-এর সাংবাদিক বলেছেন, রাজাকার বাহিনী তৈরী করা হয়েছে গুন্ডা ও বদমাসদের নিয়ে। এসব ছােকরারা হাতে বন্দুক পেয়ে ধরাকে সরান্নান করছে। এদের কেউ কিছু বলে না বলে, এরা গ্রামে গ্রামে চালাচ্ছে জঘন্য অত্যাচার। লােকের কাছ থেকে এরা টাকা পয়সা কেড়ে নিচ্ছে। মেয়েদের উপর করছে পাশবিক অত্যাচার। এতে গ্রামবাসীর মনে ভীতির চাইতে জাগছে ঘৃণা। তারা বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর প্রতি হয়ে উঠছে বিশেষভাবে শ্রদ্ধাশীল। পাকিস্তান সরকারের অদূরদর্শনিীতি সারা বাংলাদেশের মানুষকে তাদের প্রতি শত্রু ভাবাপন্ন করে তুলেছে। নিউজ উইক-এর সাংবাদিক মন্তব্য করেছেন যে, পাক সামরিক কর্তৃপক্ষ গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে বিশেষ কোন জ্ঞান রাখেনা। বাঙালী গেরিলা যােদ্ধাদের রণনিপুণতা এখন বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তাদের পশ্চাতে রয়েছে বাঙলাদেশের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন।।
নিউজ উইক পত্রিকার মতে বাংলাদেশের শতকরা ২৫টি থানা এখন মুক্তিবাহিনীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জয়বাংলা (১) ॥ ১: ৩০ ॥ ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১
বগুড়া শহরে পাক জল্লাদদের নর হত্যা
(নিজস্ব সংবাদদাতা) সব রণাঙ্গনে পরাজিত হইয়া পাক বাহিনী দখলীকৃত শহরগুলিতে পাড়া মহল্লা ঘেরাও করিয়া মানুষ খুন করিতেছে। গত ৯ই নভেম্বর পাক জল্লাদরা বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া পাড়া ঘেরাও করিয়া ১৪ জন তরুণকে ধরিয়া নিয়া শহরের উপকণ্ঠে গুলি করিয়া মারিয়াছে। এই ১৪ জন শহীদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মাহফুজার রহমান (মান্নান) রহিয়াছেন।
মুক্তিযুদ্ধ ॥ ১ : ২২ ॥ ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪