নারী নির্যাতনে ইয়াহিয়ার সৈন্যরা মধ্যযুগের বর্বরতাকে হার মানিয়েছে
বদরুন্নেসা আহমদ পার্লামেন্ট সদস্যা। নারী নির্যাতন কথাটি নতুন নয়। যুগে যুগে দেশে দেশে যুদ্ধের সময় বা অন্য কোন সামাজিক বিপর্যয়ের সময় নারী নির্যাতনের কাহিনী শােনা যায়। ইতিহাস তার সাক্ষ্য দেয়। নাদির শাহের আমলে, চেঙ্গিস খার আমলে এমনকি ভারতবর্ষে মধ্যযুগে রাজপুত রমণীদের উপর বহু নির্যাতনের কাহিনী ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে। কিন্তু ১৯৭১ সালে ইয়াহিয়ার আমলে বাংলাদেশের মা-বােনেরা বর্বর পাক সৈন্যের হাতে যেভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ইতিহাসে তার নজির নাই। এই নজিরহীন অত্যাচারের শিকার হয়েছে বাংলাদেশের দখলীকৃত এলাকার অসংখ্য মা-বােন। অল্প বয়সী বা যুবতী নারীদের এই অনেকেই নর খাদকদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি। যদি কেউ তাদের হাত থেকে রেহাই পেয়ে থাকেন সেটা তাদের নিতান্ত ভাগ্যের জোর বলতে হবে।
আমি স্ব-কর্ণে অনেক অত্যাচারের কাহিনী শুনেছি এবং চাক্ষুষ অনেক দেখেছি। সে সব কাহিনী বলতে গেলে নিজের মাথা ক্ষোভে রােষে হেট হয়ে যায়। স্বাধীন বাংলার প্রধান মন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ ঠিকই বলেছেন যে, “এই সব পাক সৈন্যদের পশুদের সঙ্গে তুলনা করলে পশুদেরও ছােট করা হয়।” পাক সৈন্যরা আজ পশুরও অধম। বর্বর আদিযুগের মানুষের হয়ত বা বিবেক ছিল। কিন্তু আজ পাক সৈন্যরা বিবেকহীন জানােয়ারে পরিণত হয়েছে। নিজেদের লােভ ও লালসা চরিতার্থ করার জন্য গ্রাম বাংলার নিরীহ যুবতী, গৃহিনী এবং কন্যাদের সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে তাদের চোখের সামনে ঘুরে। বেড়াতে বাধ্য করছে। মা ও মেয়েকে একই সাড়িতে দাঁড়াতে হয়েছে এবং তাও তাদের স্বামী বা পিতার সামনে। শুধু তাই নয় সেই সব নর পশুরা বাবা বা স্বামীর সামনেই তাদের ধর্ষণ করছে। দলে যতগুলাে পশু ছিল তারা সবাই একই মেয়ের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। অত্যাচারে জর্জরিত বহু মেয়ে মারা। গেছে। কেউবা লজ্জা ও গ্লানি ভােলার জন্য আত্মঘাতী হয়ে মরেছে। শুধু গ্রামে নয়, শহরেও তাদের অত্যাচার সমান ভাবে চলছে। ঢাকা শহরের মেয়েরা আজ পথে বের হতে ভয় পায়। আমি নিজে ঢাকার কোন একটি পাড়ার খবর জানি, যেখানে বাবা নিজ কন্যাকে নিজ স্ত্রী পরিচয় দিয়েও রক্ষা করতে পারে। নি। বাবার বুকের উপর বেয়নেট বসিয়ে কন্যাকে বলপূর্বক জিপে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছে। উত্তর বাংলার কোন একটি ডাক্তারকে হত্যা করে তার তিনটি কন্যাকে সামরিক ছাউনিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকার কোন একটি সুন্দরী মেয়ের বাবাকে বলা হয়েছে, হয় মেয়েকে তাদের ক্যাম্পে পাঠাতে হবে অন্যথায় এক লাখ টাকা সৈন্যদের কম্যান্ডারকে দিতে হবে। বাবা কন্যা বা টাকা কোন কিছুই দিতে না চাইলে তাকে হত্যা করা হয়। শােনা যায় সেই হতভাগ্যের কন্যা আজ ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে বন্দিনী। এছাড়া। সময় সময় ঘরের যুবতী স্ত্রী বা কন্যাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ক্যাম্পে গান বা নাচ দেখাইবার অছিলায় এবং সেখানে দিনের পর দিন চলে অকথ্য অত্যাচার, এই সব অত্যাচারের জন্য ঢাকায় টেলিভিশনের পর্দায় কোন মেয়ে সহজে আসতে রাজী হয় না, রাজী হয় না ঢাকার রেডিওতে গান গাইতে—এমনকি দিন দুপুরে ঢাকার রাস্তায় অল্প বয়সী মহিলাদের ঘুরতে দেখা যায় না।
নারী ধর্ষণ ছাড়া আরও বহু ধরণের অত্যাচারের কাহিনী বাঙ্গালাদেশের দখলীকৃত এলাকার আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে আছে। যুবতী নারীদের স্তন কেটে ফেলে দেওয়া পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের কাছে খেলা স্বরূপ। এমনও নজীর আছে যে নারীদের ধর্ষণ করার পর বেয়নেট ঢুকিয়ে তাদের মেরে ফেলা হয়েছে। সন্তান সম্ভবা মেয়েদের পেটে বেয়নেটের খোঁচা মেরে পেট কেটে দিতে তাদের একটুও বাধে না। হাজারাে রকমের অত্যাচারে বাংলার নারী আজ প্রপীড়িত ও জর্জরিত। তাদের কান্নায়। বাঙ্গলাদেশের অধিকৃত এলাকার আকাশ-বাতাস আজ ভারী হয়ে গিয়েছে। পাক সৈন্যরা আজ ক্ষিপ্ত কুকুরের মত ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাদের বীর অসম সাহসী মুক্তি বাহিনীর কাছে মার খেয়ে তারা বন্য পশুর মত ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই জঘণ্য অত্যাচারের মুখােমুখি দাঁড়িয়ে আমাদের মা-বােনেরা তাদের মনােবল হারায়নি। আমি শুনেছি ঢাকার আশে পাশের একটি গ্রামের মেয়েরা দা-বটি নিয়ে বর্বর সৈন্যদের বেশ কিছুদূর নিয়ে যায়। তাছাড়া আমাদের দেশের বুদ্ধিমতী মেয়েরা কামােন্মত্ত সৈন্যদের চোখ ইশারায় প্ররােচিত করে নিজেদের ঘরে নিয়ে এসে তাদের হত্যা করছে— এমন নজীরও আছে।
এই বিংশ শতাব্দীতে, আমরা হিটলার মুসােলিনীর কাহিনী শুনেছি ভিয়েৎনামের নির্যাতন। শুনেছি বাইয়াফ্রার ইতিহাস। কিন্তু ইয়াহিয়া আজ সমস্ত ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে। বর্বর অত্যাচারের ও নজীর হীন নির্যাতনের মুখােমুখি সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালী আজ দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর কোন শক্তির কাছে যদি আমরা সাহায্য না পাই, তাহলেও আজ এ কথা হলফ করে বলা যায় পশু শক্তি আমাদের কাছে মার খাবেই। সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালী পর্বত প্রমাণ সাহস ও মনােবল নিয়ে এক হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের পরাজিত করে এমন শক্তি কারাে নেই। আজ আমরা নিজেদের বলে বলীয়ান। আমাদের জয় হবেই। জয় বাংলা।
জয়বাংলা (১) ॥ ১: ১৬ ॥ ২৭ আগস্ট ১৯৭১
ভিয়েতনাম পদ্ধতিতে গণহত্যার জন্য ইয়াহিয়া খান বিশেষ জল্লাদ বাহিনী গড়ে তুলেছে।
পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে যুগে যুগে যে সমস্ত জল্লাদ সম্রাট ও রাষ্ট্রনায়ক বিশ্বের বুকে তান্ডব সৃষ্টি করেছে, নৃশংস হত্যার শিকার সাধারণ মানুষের রক্ত দিয়ে বর্বর শাসনের ইমারতে গাঁথুনি দিয়েছে পিন্ডির ইয়াহিয়া তাদের সমগােত্রীয়। অতীতের নির্যাতনকারী হত্যার নায়কদের ব্যতিক্রম তিনি নন। ২৫শে মার্চের বহু পূর্ব থেকেই এই মানব সভ্যতা বিরােধী হত্যাবাজ জেনারেল অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে গণহত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ক্রমে ক্রমে রুদ্ধদ্বার ভেদ করে অবিশ্বাস্য হত্যাকান্ডের পরিকল্পনার সংবাদ প্রকাশ পাচ্ছে। সব জানােয়ারকে যেমন পােষ মানানাে যায় না, তেমনি সব মানুষকে দিয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যার জন্যে ঝুঁকি নেয়া সম্ভব নয়। সেজন্যেই রক্ত-পিপাসু ও পশু প্রকৃতির সেনাদের বাছাই করে হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এদের বিশেষ ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা হয়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিকামী ভিয়েত্রমী নাগরিকদের বেছে বেছে হত্যা ও ধ্বংসের উদ্দেশ্যে যেমন করে গুপ্ত ট্রেনিং প্রাপ্ত একটি বাহিনী প্রেরণ করেছিল—যার নাম সরকারী ভাবে “গ্রীন ব্যারেট” ইয়াহিয়া সরকারও ঠিক তেমনি করে গােপনে ট্রেনিং দিয়ে একটি বিশেষ হত্যাকারী বাহিনী গড়ে তুলেছে। ব্যাপক গণহত্যা, বেছে বেছে জীবন নাশ, হিটলারের এস-এস অফিসারদের পদ্ধতিতে নির্যাতন, ধ্বংস ও অগ্নিকান্ড সম্পর্কে এদের বিশেষজ্ঞ করে তােলা হয়েছে। জেনারেলদের ফাইলে একে “বিশেষ বাহিনী ” বা “স্পেশ্যাল ফোর্স” বলে উল্লেখ রয়েছে। | বেলুচিস্থানের রাজধানী কোয়েটা’র কাছাকাছি অঞ্চলে যে স্থানটিতে বৃটিশ আমল থেকেই সামরিক ছাউনী রয়েছে, তার নাম কাকুন। সাধারণ প্রশাসনিক কাজে কাকুন স্থানটির নাম উল্লেখ থাকে না। এই বিশেষ ছাউনীতে, সভ্য জগত থেকে বিচ্ছিন্ন এই নিচ্ছিদ্র কাকুনে বাংলাদেশে হত্যার জন্যে বিশেষ জল্লাদ বাহিনী ট্রেনিং লাভ করে।
বিদেশী তথ্য অনুযায়ী, কাকুনে প্রায় এক ডজন আমেরিকান বিশেষজ্ঞ ইয়াহিয়ার স্পেশ্যাল ফোর্স তৈরীর কাজে ট্রেনিং দিচ্ছেন। দক্ষ হত্যাকারী গড়ে তােলাই এই বিদেশী বিশেষজ্ঞদের কাজ। বেতনভুক্ত এই হত্যা বিশেষজ্ঞদের আমদানী করা হয়েছে উত্তর ক্যারােলিনী থেকে। আইয়ুব খার আমলে ১৯৬৪ সাল থেকেই এই ধরণের একটা বিশেষ বাহিনী গঠনের চেষ্টা চলছিল। আর সে সময়ে জেনারেল মুসাও বর্তমান জেনারেল ইয়াহিয়া উক্ত বাহিনীর উপর বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেন। প্রধানত: পাঞ্জাবী ও আরাে কয়েকটি রেজিমেন্ট থেকে বাছাই করা পাঁচ শত অস্বাভাবিক চরিত্রের সেনাকে পাঠানাে হয় আমেরিকায় হত্যা বিশেষজ্ঞদের ট্রেনিং লাভ করতে। এই ব্যবস্থাটা এতােই গােপনে করা হয়েছিল যে, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট দূরের কথা, অধিকাংশ পশ্চিম পাকিস্তানী সেনা প্রধানও তা জানতেন না। এই সমস্ত হত্যা ও ধ্বংসের সেনাদের সমন্বয়ে যে হত্যাকারী নরপিশাচের দল গঠন করা হয়, তার নাম “স্পেশ্যাল ফোর্স”। দশ জনের এক একটি দল করে তাদের পঞ্চাশটি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়।
আমেরিকার উত্তর ক্যারােলিনাস্থ “ফোর্ট ব্র্যাগ”-এ মার্কিন স্পেশ্যাল ফোর্স ট্রেনিং ক্যাম্পটিতে এই ধরনের বিশেষ ট্রেনিং প্রাপ্ত হত্যা-বাহিনী তৈরী করা হয়ে থাকে। ইয়াহিয়ার স্পেশ্যাল ফোর্স প্রথমে এ “ফোর্ট ব্র্যাগ” ক্যাম্পেই লালিত হয়েছে। বর্তমানে কোয়েটাস্থ “কাকুন” পশ্চিম পাকিস্তানী উন্মাদ জেনারেলদের “ফোর্ট ব্র্যাগ”। আর কাকুন’ থেকে বিশেষভাবে শিক্ষাপ্রাপ্ত হত্যাকারী বাহিনীই হচ্ছে তাদের “গ্রীন ব্যারেট”। জনৈক বিদেশী সাংবাদিকের তথ্য অনুযায়ী, অতীতে ও বর্তমানে ট্রেনিং প্রাপ্ত হত্যা বিশেষজ্ঞগণ বাংলাদেশে নরহত্যা ও ধ্বংসের অবিশ্বাস্য অভিযানে যুক্ত রয়েছে। কাকুন গুপ্ত শিবিরে এদের তিন সপ্তাহ ট্রেনিং দেয়া হয়ে থাকে। ট্রেনিং প্রাপ্ত জল্লাদদের সংখ্যা দিন দিনই এততা বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, ভবিষ্যতের দুর্যোগের কথা বিবেচনা করে পশ্চিম পাকিস্তানের কোন কোন বিদ্রোহ স্থানে এদের পােষ্ট করার ব্যবস্থা হয়েছে।
২৫শের রাত্র থেকে মেজর জেনারেল মিঠার উপর দায়িত্ব পড়েছিল ইয়াহিয়ার গেরিলা বাহিনীর। আর রক্তপিপাসু “স্পেশ্যাল বাহিনী” তারই সামগ্রিক নেতৃত্বের আওতায় আসে। এ-রাত্র থেকে এবং পরবর্তী কালে এই বাহিনীই ইয়াহিয়ার গণহত্যার পরিকল্পনা কার্যকরী করেছে। কিন্তু সেই স্পেশ্যাল বাহিনীর রক্ত লালসা শেষ হবার পূর্বেই তারা নিজেদের রক্ত প্রবাহ দেখে। আঁৎকে উঠেছে। আর নিজের সঙ্গীর মৃত দেহের পাশে দাঁড়িয়ে শিউরে উঠেছে পরবর্তী ভয়াবহ মুহূর্তের কথা ভেবে। ভিয়েনামে যেমন “গ্রীন ব্যারেটদের” পালিয়ে যেতে হয়েছে, বাংলাদেশের মাটিতে ঠিক তেমনি ভাবে। ইয়াহিয়ার স্পেশ্যাল বাহিনীকে বিলীন হয়ে যেতে হচ্ছে। নৃশংস হত্যা আর ধ্বংসের শিকার দেশপ্রেমিক সাধারণ নাগরিকদের প্রত্যেকটি রক্ত কণিকা থেকে আজ জন্ম নিচ্ছে মুক্তিসেনা। তাদের দুর্জয় অভিযানের মুখে, তাদের প্রতি আক্রমণের তীব্রতার ঝলকে হত্যাকারী হায়নাদের জীবনে বিভীষিকার হাতছানি। মৃত্যু, উচ্ছেদ আর পরাজয়ের কালিমা তাদের আজ কলঙ্কিত ইতিহাসের ধিকৃত জীব বলে চিহ্নিত করছে।
জয়বাংলা (১) ॥ ১: ১৬ ॥ ২৭ আগস্ট ১৯৭১
এমন বর্বরতা জীবনে দেখিনি
“পূর্ব বাংলার জনগণের উপর যে নির্মম অত্যাচার হয়েছে, আমি অতীতে কখনও তা প্রত্যক্ষ করিনি।’ যুক্ত আরব প্রজাতন্ত্রের প্রাক্তন উপ-মন্ত্রী জনাব আলী হাফিজ গত রবিবার কলকাতায় একথা বলেন। জনাব হাফিজ বিশ্ব স্কাউট ব্যুরাের সদস্য এবং আরব স্কাউট লীগের সভাপতি। তিনি শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে কলকাতায় ফিরে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নিজের চোখে শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশার চিত্র দেখে এসেছি। যারা শরণার্থীদের এই পরিস্থিতির মধ্যে টেনে এনেছে। তাদের মানবিকতার কোন বালাই নেই।’
জয়বাংলা (১) ॥ ১: ১৬ ॥ ২৭ আগস্ট ১৯৭১।
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪