You dont have javascript enabled! Please enable it! নিঃশেষে প্রাণ যে করবে দান - পাকিস্তানের কাঠামােতে কোন আপােষের প্রশ্নই উঠতে পারে না তাজুদ্দীন - নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারী দল - সংগ্রামের নোটবুক

নিঃশেষে প্রাণ যে করবে দান

গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের পরিবারবর্গের সমগ্র দায়িত্ব নিজ হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘােষণা করেছেন। তা ছাড়া যারা মুক্তিযুদ্ধে আহত বা পঙ্গু হয়েছেন তাদের ভরণপােষণের দায়িত্বও সরকার নিজ হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘােষণা করেছেন।  এ সম্পর্কে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের সাহায্য ও পুনর্বাসন দপ্তরের এক সার্কুলারে বলা হয় যে। দেশমাতৃকার স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর মুক্তি যােদ্ধাদের শৌর্য ও ত্যাগ চিরকাল জাতির জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন অথবা আহত বা পঙ্গু হয়েছেন তাদের সম্পর্কে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকারকে প্রয়ােজনীয় তথ্য সরবরাহ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরােধ জানান হয়েছে।

জয়বাংলা (১) ॥ ১ : ৪ ৪ ২ জুন ১৯৭১

পাকিস্তানের কাঠামােতে কোন আপােষের প্রশ্নই উঠতে পারে না তাজুদ্দীন

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। পাকিস্তানের কাঠামােতে কোন রকম আপােষ| মীমাংসার প্রশ্নই উঠতে পারে না।” গত রােববার মুজিব নগরে ‘জয় বাংলা প্রতিনিধির সাথে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজুদ্দীন এ ঘােষণা করেন। বহির্বিশ্বে বিভিন্ন মহলে বাংলাদেশ সমস্যার ‘রাজনৈতিক সমাধান সম্পর্কে যে সব কথা-বার্তা উঠেছে তৎসম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে  জনাব তাজুদ্দীন উপরােক্ত ঘােষণা করেন। জনাব তাজুদ্দীন আরও বলেন, যে কোন মূল্যের বিনিময়ে বাংলাদেশের জনগণ তাদের পৃথক  সত্ত্বা ও স্বাধীনতা রক্ষা করবে।’ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর হাতে নিশ্চিহ্ন হওয়ার আগেই যদি  তথাকথিত পাকিস্তানের সামরিক জান্তা তাদের খুনী সৈন্যবাহিনীকে বাংলাদেশের মাটি থেকে সরিয়ে | নেন, তবে সেটাই হবে তাদের পক্ষে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।’

জয়বাংলা (১) ॥ ১: ৪ [ ২ জুন ১৯৭১

নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারী দল

তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি বাংলাদেশ পার্লামেন্টারী প্রতিনিধিদল গত ২৫শে মে নয়াদিল্লীর উদ্দেশ্যে মুজিব নগর ত্যাগ করেছেন। নয়াদিল্লীতে তাঁরা ভারতীয় পার্লামেন্টের বিভিন্ন দলের | নেতৃবৃন্দের সাথে উভয় দেশের সাধারণ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলােচনা করবেন। আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য মিঃ ফণীভূষণ মজুমদারের নেতৃত্বে।  গঠিত উক্ত প্রতিনিধি দলের অপর সদস্যদ্বয় হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মহিলা শাখার সাধারণ সম্পাদিক ও জাতীয় পরিষদ সদস্য বেগম সরােয়ার মাের্শেদ এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য শাহ মােয়াজ্জেম হােসেন। প্রতিনিধি দলটি ভারতের কতিপয় অঙ্গ রাজ্যের রাজধানী সফর করবেন এবং সে সব স্থানে বিভিন্ন। রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে মিলিত হবেন।  সপ্তাহব্যাপী সফর শেষে তারা মুজিবনগর প্রত্যাবর্তন করবেন এবং বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সফর সম্পর্কে এক রিপাের্ট পেশ করবেন।

জয়বাংলা (১) [১: ৪ ॥ ২ জুন ১৯৭১

সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৩