বিলোনিয়া যুদ্ধ ৫ নভেম্বর ১৯৭১
ভোর হওয়ার আগেই চিথলিয়া থেকে পরশুরামের মাঝখানে পূর্ব-পশ্চিম বরাবর বাংকার খুঁড়ে নিজেদের অবস্থান মজবুত করে নেন মুক্তিযোদ্ধারা। বিলোনিয়া থেকে ফেনী পর্যন্ত রেললাইনের সঙ্গে সমান্তরাল কাঁচা রাস্তায়ও মুক্তিবাহিনী অপেক্ষা করছিল বাংকারে। এসময় একটি ট্রলিতে পাকিস্তানি সেনারা অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে আসছিল চিথলিয়ার দিক থেকে। আগের রাতে নীরবে যে মুক্তিযোদ্ধারা এতো কাছে চলে এসেছে তা ঘুনাক্ষরেও জানতো না হানাদারেরা। ট্রলিটি তখন মাত্র কয়েক গজ দূরে। পথের ধারের বাংকার থেকে গর্জে ওঠে হাবিলদার এয়ার আহাম্মদ এবং তার সঙ্গীদের অস্ত্র। উল্টে গেল ট্রলি, মারা পড়ল হানাদারেরা।
আবেগকে সংবরণ করতে না পেরে এয়ার আহম্মদ ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে উঠে গেলেন শত্রুদের অস্ত্র কেড়ে নেয়ার জন্যে। এমন সময় চিথলিয়া ঘাঁটি থেকে হানাদারদের একটি বুলেট এসে বিঁধলো এয়ার আহম্মদের বুকে। বাঙ্কারের মুখেই ঢলে পড়লেন তিনি। এরই মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনী বুঝতে পারলো, পরশুরাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে যাচ্ছে। বাংকার লক্ষ্য করে গুলিবৃষ্টি করতে থাকে তারা। শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মুক্তিযোদ্ধারাও। পরশুরামের হানাদারেরা মরণপণ যুদ্ধে লিপ্ত হলো। তাদের লক্ষ্য ছিল, যে করেই হোক চিথলিয়ার সাহায্য পাওয়া। কিন্তু সেটাকে অসম্ভব করে তোলেন ১০ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যরা এবং মুক্তিযোদ্ধারা।