You dont have javascript enabled! Please enable it! 1974.10.04 | দৈনিক পূর্বদেশ -বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দরিদ্র দেশের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ - সংগ্রামের নোটবুক

অক্টোবর ৪, ১৯৭৪ শুক্রবার ঃ দৈনিক পূর্বদেশ

বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দরিদ্র দেশের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ ঃ ওয়াশিংটন, ২ অক্টোবর, এনা। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ আজ এখানে বলেন যে, বিশ্ব পণ্য বাজারে অস্বাভাবিক হারে মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের মত দেশগুলােকে রীতিমত বেঁচে থাকার সংকটে নিক্ষেপ করেছে। বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের গভর্নরদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দান প্রসঙ্গে তিনি উপরােক্ত অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য | স্থিতিকরণের সুপারিশ করেন এবং এই দিকে সজাগ দৃষ্টি দেয়ার জন্য বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের প্রতি আবেদন জানান। অস্থিতিশীল আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পণ্য ক্রয়ে বিশ্বের নবীন রাষ্ট্রগুলাে যে অসুবিধা ভােগ করছে জনাব তাজউদ্দিন সেগুলাের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, খাদ্য শস্য কেনার জন্য আমাদের ব্যয়-বরাদ্দ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গৰ্ম ক্রয়ে তিনগুণ বেশি দাম দিতে হচ্ছে ও চালের বেলায় দিতে হচ্ছে পাঁচগুণ দাম, ভােজ্য তেল কিনতে ব্যয় হচ্ছে চারগুণ অর্থ, জ্বালানির জন্য পাঁচগুণ, জাহাজে পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে চারগুণ। অর্থমন্ত্রী বলেন, নিত্য প্রয়ােজনীয় পণ্য যেমন, বস্ত্র ও গৃহ নির্মাণ সামগ্রীর দামও বেশ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানী করতে সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থের দায় পরিশােধ করতে হচ্ছে এবং এই পরিস্থিতিতে দেশে পুঁজি গঠনের প্রশ্নই উঠে না। জনাব তাজউদ্দিন দুঃখ করে বলেন যে, আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে কিছুসংখ্যক দেশ লাভবানই হয়েছে। কিন্তু পাট ও চা রফতানিকারক বাংলাদেশের কোন অর্থনৈতিক সুবিধাই এতে হচ্ছে না। তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলাের জন্য এ ব্যাপারে যে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা চলছে তার আলােকে আর্থিক ঋণের শর্ত ও মেয়াদ অপেক্ষাকৃত নরম ও সহজ করার জন্য তিনি বিশ্বব্যাংক ও অর্থ তহবিলের গভর্নরদের প্রতি আবেদন জানান।

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি