জানুয়ারি ১৫, ১৯৭৪ মঙ্গলবার ঃ দৈনিক পূর্বদেশ
ভারতের সাথে কোন গােপন চুক্তি নেই : নেত্রকোনা, ১৪ জানুয়ারি বাসস। স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের সাথে কোন গােপন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন স্পষ্টভাষায় একথা বলেন। গত রবিবার এখানে এক জনসভায় ভাষণ দানকালে জনাব তাজউদ্দিন এ ব্যাপারে তার বক্তব্য রাখেন। অনুরূপ চুক্তির রটনাকারীদের প্রতি চ্যালেঞ্জ প্রদান করে তিনি বলেন যে, অনুরূপ একটি চুক্তির অস্তিত্ব কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২-এর মার্চে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর বাংলাদেশ সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তির বিবরণ জনসাধারণ্যে প্রকাশ করা হয়েছে এবং সংসদে তার প্রতিটি বাক্য পড়ে শােনানাে হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে আমাদের যে সব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় সে সবের ভিত্তি হল আদর্শগত সমঝােতা, সার্বভৌমত্ব, সমতা ও পরস্পরের প্রতি পরস্পরের শ্রদ্ধাবােধ। জনাব তাজউদ্দিন আহমদ অভিমত প্রকাশ করেন যে, স্বাধীনতা সংগ্রাম বিরােধীরাই নিজেদের দুষ্কর্ম চাপা দেয়ার জন্য ধুম্রজাল সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
বিরােধী দলীয় নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার কাউকে দেশে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অধিকার দেয় না। জনগণের মধ্যে বিশৃংখলা ও বিভ্রান্ত সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে এবং দুর্নীতিপরায়ণ, মুনাফাখাের ও অনুরূপ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরােধ গড়ে তােলার জন্য মন্ত্রী সমস্ত দেশপ্রেমিক লােকের প্রতি আহ্বান জানান। সর্বনিম্ন স্তর থেকে ঐক্য জোরদার করতে হবে : নেত্রকোনা, ১৩ জানুয়ারি, বাসস। বাংলাদেশ সােভিয়েট মৈত্রী সমিতির নেত্রকোনা শাখার উদ্যোগে আজ সকালে এখানে আয়ােজিত এক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ সর্বনিম্ন স্তর থেকে ঐক্য গড়ে তােলার জন্য গণ-ঐক্যজোট কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশ সােভিয়েট মৈত্রীর প্রশ্নে জনাব তাজউদ্দিন বলেন, এটা উভয় দেশের আদর্শগত সমঝােতার ওপর প্রতিষ্ঠিত । তিনি বলেন, দুঃসময়ে সােভিয়েট ইউনিয়ন বন্ধু বেশে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি