জুন ২৫, ১৯৭৩ সােমবার ঃ দৈনিক বাংলা
রেশনে খাদ্য শস্য বাবদ ভুর্তকি ৬৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা কোটালিপাড়া, ফরিদপুর, ২৩ জুন (বাসস)। অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ আজ এখানে বলেন, চলতি অর্থ বছরে রেশন ব্যবস্থায় খাদ্য শস্য বাবদ ভুর্তকি (আর্থিক সাহায্য) প্রদানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। তিনি বলেন, এ টাকার ব্যবস্থা বাজেটে নেই এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলাে থেকে ঋণ নিয়ে এ আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ সকালে এখানে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১০১তম শাখার উদ্বোধন করছিলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থ বছরে এই আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩২ কোটি টাকা।
কারণ তখন খাদ্য শস্য সরবরাহ বাবদ ভুর্তকির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় সরকার প্রায় ৩০ কোটি টাকা পাবেন। রেশন ব্যবস্থায় খাদ্য শস্য বাবদ আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ হ্রাসের পেছনে যে কারণ রয়েছে তা যথাযথভাবে তুলে ধরার জনাব তাজউদ্দিন আহমদ জাতীয় সংবাপত্রগুলােকে ধন্যবাদ দেন। জনাব আহমদ বলেন, শহরের লােকের মাসিক উপার্জন প্রায় নিশ্চিত। মাসের শেষে তারা যাই কিছু একটা পাবেন, এটা প্রায় নিশ্চিত । কিন্তু গ্রামের লােকেরা জানেন না, মাসের শেষে তারা কি পাচ্ছেন। সেই ভিত্তিতেই সরকার ভুতর্কির পরিমাণ হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে শুধু শহরবাসীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কৃষি আয়কর বাড়ানাে হয়েছে বলে কোন কোন মহলের সমালােচনাকে অর্থমন্ত্রী ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, যার কর দিতে হবে এমন কৃষি আয়ের সীমা বার্ষিক ৬ হাজার ও তদূর্ধ্ব অংকে নির্ধারিত করা হয়েছে। বর্তমানে এই সীমা হচ্ছে বছরে ৪ হাজার টাকা। দেশের বন্ত্রের প্রয়ােজনীয়তার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বলেন, পাকিস্তানী শাসকরা বাংলাদেশকে তার ৪০ কোটি গজ কাপড়ের বাজার হিসেবে ব্যবহার করত। তাই বাংলাদেশে বস্ত্র শিল্পের প্রসার ঘটুক, এটা তারা চাইত না। স্বাধীনতার পর পর অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করে এই কাপড়ের চাহিদা পুরণ করা হচ্ছে।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি