ডিসেম্বর ৬, ১৯৭২ বুধবার ঃ দৈনিক বাংলা
রুশ-ভারত সহযােগিতা চুক্তিই ছিল ভিত্তি ঃ মুজিব নগরে তখন নতুন প্রস্তুতির পালা। উত্তপ্ত হৃদয়ে সুস্পষ্ট ঘােষণা। চল, ঢাকা চল। এ শুধু স্লোগান নয়। যেন সাগরের আহ্বান। সেই আহ্বানের প্রতিধ্বনি ওঠে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের কণ্ঠে। বিপ্লবী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ এর মাত্র কিছুদিন আগে বৃটিশ পার্লামেন্টের জনৈক এম.পি.কে বলেছিলেন, আগামী ডিসেম্বরেই। ঢাকায় দেখা হবে। কূটনৈতিক দূরদর্শিতা ও বাস্তব পরিস্থিতির উপলব্ধি থেকেই। তার পক্ষে সেদিন এ মন্তব্য করা সম্ভব হয়েছিল। মাত্র এক বছরের মাথায় স্বাধীন বাংলার মুক্ত রাজধানীর বুকে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জনাব তাজউদ্দিন আহমদ দৈনিক বাংলার প্রতিনিধিকে বলেন, ১৯৭১ সালের ৯ আগস্ট সম্পাদিত ঐতিহাসিক ভারত-সােভিয়েট মৈত্রী ও সহযােগিতা চুক্তিই ছিল স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাকে স্বীকৃতি দানের প্রথম ভিত্তি। এটি ছিল বর্তমান বিশ্বের কূটনীতির ক্ষেত্রে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর অসাধারণ সাফল্য। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের অনুরােধ জানিয়ে ১৯৭১ সালের ১৫ অক্টোবর প্রথম শ্রীমতী ইন্দিরাকে চিঠি লিখি । এর পর ২৩ নভেম্বর আর একখানা চিঠি দেই। ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ঘােষিত যুদ্ধের ঠিক আগের দিন ২ ডিসেম্বর ও পরের দিন ৪ ডিসেম্বর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। ৬ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় ভারতীয় পার্লামেন্ট বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের কথা। ঘােষণা করার পর শ্রীমতী ইন্দিরা আমাকে একখানা আনুষ্ঠানিক চিঠি দেন। ৭। ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল সােয়া তিনটায় মুজিব নগরে সে চিঠি আমার হাতে এসে পৌছে।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি