You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.30 | পূর্বদেশ-সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রবর্তন করাই সরকারের লক্ষ্য - সংগ্রামের নোটবুক

ডিসেম্বর ৩০, ১৯৭১ বৃহস্পতিবার ঃ দৈনিক পূর্বদেশ

সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রবর্তন করাই সরকারের লক্ষ্য ঃ ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর (এপিবি)। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ | দেশকে একটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ এবং সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তােলার জন্য দেশপ্রেমের মনােভাব নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করে যাওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সকল প্রকার শােষণমুক্ত একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রবর্তন করাই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য। গতকাল বুধবার খিলগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিস উদ্বোধন উপলক্ষে আয়ােজিত এক কর্মী সভায় প্রধানমন্ত্রী উপরােক্ত অভিমত প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মুক্তিযুদ্ধে যে সব বীর আত্মত্যাগ করেছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তাদের এই ত্যাগ বৃথা যেতে দেব না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশের জনগণ ন্যায়নীতি ও মানবিক অধিকার আদায়ের জন্য সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে সফল হয়েছে। আমাদের মত বিশ্বের কোন দেশই স্বাধীনতার জন্য এত বেশি রক্ত দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় সাহায্য করার জন্য ভারতীয় জনগণ, সরকার ও প্রধানমন্ত্রী মিসেস গান্ধীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন বলেন যে, মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গু মুক্তিযােদ্ধা ও বেসামরিক ব্যক্তিদের স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি নির্যাতিত মহিলাদের পূর্ণ সম্মানের সাথে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,  যে সব দেশ আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেবে তাদের সাথে আমরা শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থানের নীতি মেনে চলব। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশের তরুণদের নিরস্ত্র করা হবে না, কারণ তারাই স্বাধীনতার রক্ষক। তিনি বলেন, পূর্বতন কাজে ফিরে না গেলে তাদের জাতীয় মিলিশিয়াতে নিয়ে নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাসপাতাল পরিদর্শন : বাংলাদেশের আহত মুক্তিযােদ্ধা ও পাকবাহিনীর বর্বরােচিত আচরণের শিকার নাগরিকদের দেখার জন্য বাংলাদেশের | প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে তিন শতাধিক আহত ব্যক্তির সাথে দেখা করে তাদের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি তাদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারের পূর্ণ সহযােগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি