অক্টোবর ২৩, ১৯৭০ শুক্রবার ও দৈনিক ইত্তেফাক
ডাকযােগে ভােট দানের আবেদন পেশের মেয়াদ বৃদ্ধির আহ্বান ঃ পূর্ব-পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব তাজউদ্দিন আহমদ গতকাল এক বিবৃতিতে পােস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভােট দানের আবেদন পত্র প্রেরণের তারিখ ২৫ অক্টোবরের স্থলে আরও এক মাস বৃদ্ধি করিয়া ২৫ নভেম্বর ধার্য করার জন্য নির্বাচনী কমিশনের নিকট আবেদন জানাইয়াছেন। বিবৃতিতে জনাব তাজউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচনী কমিশন সরকারী কার্যে নিয়ােজিত কর্মচারি, সামরিক বিভাগে কর্মরত জোয়ান ও অফিসার এবং প্রাথমিক, মাধ্যমিক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক যাহারা নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রিজাইডিং ও পােলিং অফিসার হিসাবে নিজ নির্বাচনী এলাকার বাহিরে সরকারী কার্যে নিযুক্ত থাকিবেন, তাহাদিগকে পােস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভােট দানের সুযােগ দিয়াছেন। কিন্তু এই পােস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভােটদানের আবেদন প্রেরণের শেষ তারিখ আগামী ২৫ অক্টোবর ধার্য করার ফলে নির্বাচনের দিন যাহারা নিজ নির্বাচনী এলাকার বাহিরে থাকিবেন তাহাদের অনেকেই ঐ সুযােগ গ্রহণ করিতে পারিবেন বলিয়া আমার গভীর আশংকা হইতেছে। কারণ অধ্যাপক, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষক—যাহারা প্রিজাইডিং ও পােলিং অফিসাররূপে সবেমাত্র নিযুক্ত হইয়াছেন বা হইতে যাইতেছেন তাহারা পােস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভােট দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জ্ঞাত নন।
ইহাছাড়া ২৫ অক্টোবর অতি সন্নিকটে। এই অল্প সময়ের মধ্যে তাহাদের বিপুলসংখ্যকের পক্ষে দরখাস্ত করিয়া পােস্টাল ব্যালট সংগ্রহ সম্ভব হইবে। তাই আমি নির্বাচনী কমিশনের নিকট আবেদন করিতেছি যে, সরকারী কার্যরত ভােটারদের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া এবং যাহাতে তাহারা ভােটাধিকারের সুযােগটির সদ্ব্যবহার করিতে পারেন তাহার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য পােস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভােটদানের আবেদনপত্র প্রেরণের তারিখ ২৫ অক্টোবরের স্থলে আরও একমাত্র বৃদ্ধি করিয়া ২৫ নভেম্বর ধার্য করা হােক। বিবৃতিতে জনাব তাজউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, এই প্রসঙ্গে আমি জেল কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতেছি, যে সমস্ত কয়েদী ও বিচারাধীন আসামী। ভােটদানের অধিকারের পাইয়াছেন তাহারা যেন যথাসময়ে আবেদনপত্র পেশের মাধ্যমে পােস্টাল ব্যালট সংগ্রহ করিয়া ভােট দিতে পারেন, এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ যেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। নতুবা আইন অনুযায়ী কয়েদীরা নিজ প্রচেষ্টায় কোন অবস্থাতেই পােস্টাল ব্যালট সংগ্রহ করিয়া ভােটদান করিতে পারিবেন না ।
সূত্র : তাজউদ্দীন আহমদ-ইতিহাসের পাতা থেকে – সিমিন হোসেন রিমি