নান্দিনা আক্রমণ
ভূমিকা
সাইফুল ইসলাম সাজার নেতৃত্বাধীন সাজা কোম্পানির মুক্তিযােদ্ধারা গাইবান্ধা পলাশবাড়ি প্রধান সড়কের উপর অবস্থিত সাকওয়ার ব্রিজ উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে গাইবান্ধা শহর থেকে ১৫ কিলােমিটার দূরে নান্দিনা নামক গ্রামে অবস্থান নিয়েছিলেন। এ অবস্থানে ১৯৭১ সালে ১৭ অক্টোবর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধ হয়। যুদ্ধের সংগঠন ক. পাকিস্তান সেনাবাহিনী: শত্রুর সংখ্যা বা সংগঠন সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় নি। তবে শত্রুপক্ষ ২টি দলে বিভক্ত হয়ে বিপক্ষ বাহিনীর উপর আক্রমণ পরিচালনা করে। বিভিন্ন তথ্য থেকে শত্রুর সংখ্যা ১ কোম্পানি (+) অনুমান করা যেতে পারে। খ, মুক্তিবাহিনী: আনুমানিক ১২০জন; অধিনায়ক: সাইফুল ইসলাম সাজা, উপ-অধিনায়ক: মজিদ, উপদল অধিনায়ক: রফিকুল ইসলাম হিরু, দর্জি মাস্টার, আব্দুল আওয়াল, জিন্নু, গােয়েন্দা অফিসার: ফজলুর রহমান রাজা।
যুদ্ধের স্থান- গাইবান্ধা সদর থেকে ১৫ কিলােমিটার দূরে সাদুল্লাপুর থানার নান্দিনার দৌলতপুর এবং টাবুদুর্গাপুর এলাকা। যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা সাইফুল ইসলাম সাজার নেতৃত্বাধীন সাজা কোম্পানির মুক্তিযােদ্ধারা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় সাদুল্লাপুর থানা আক্রমণ করে সফল হওয়ার পর শক্রর লাইন অব কমিউনিকেশন (LOC) বিচ্ছিন্ন করে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ি প্রধান সড়কের উপর অবস্থিত সাকওয়ার ব্রিজ ধ্বংস করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
এ উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্য সাজা কোম্পানি তাদের ঘাটি মােল্লার চর থেকে রামচন্দ্রপুর হয়ে ১৭ অক্টোবর রাতে নান্দিনা গ্রামে অবস্থান নেয়। নান্দিনা ও পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর গ্রামটি ছিল জামাত অধ্যুষিত এলাকা। ফলে মুক্তিযােদ্ধাদের অবস্থানের খবর দ্রুত পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে পৌছে যায়। এমতাবস্থায় কোম্পানি অধিনায়ক সাইফুল ইসলাম সাজার নির্দেশে কোম্পানিটি ৪ ভাগে বিভক্ত হয়ে যথাক্রমে নান্দিনা, নান্দিনা-দৌলতপুর, দৌলতপুর ও টাবুদুর্গাপুরে অবস্থান গ্রহণ করে। নান্দিনা গ্রামে অবস্থিত প্লাটুনের নেতৃত্বে ছিলেন মুক্তিযােদ্ধা আব্দুল আউয়াল, নান্দিনা-দৌলতপুরের নেতৃত্বে ছিলেন রফিকুল ইসলাম হিরু এবং দৌলতপুর প্লাটুনের নেতৃত্বে ছিলেন জিন্নু। নিজেদের পরিকল্পনার ভুল বুঝতে পেরে অবস্থান পরিবর্তনের পূর্বেই ফজরের আজানের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর ২টি দল তুলসীঘাট-খাের্দকামরপুর রাস্তা ধরে নান্দিনার দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় দর্জি মাস্টার আব্দুল আউয়ালের পাটুনের এলএমজি গর্জে ওঠে এবং পাকিস্তানি বাহিনী রাস্তা ছাড়তে বাধ্য হয়। অতঃপর পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা রাস্তার কভার নিয়ে ধীরে ধীরে নান্দিনার দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মুক্তিবাহিনীর ৩ প্লাটুনের সম্মিলিত ফায়ারের মুখে তারা সরাসরি আক্রমণে যেতে পারেনি। তবে নিজস্ব বেইস ক্যাম্পের দূরত্বের কথা চিন্তা করে মুক্তিযােদ্ধারা আস্তে আস্তে পিছু হটতে থাকেন এবং ৩টি প্লাটুন যথাক্রমে রূপতলা, বল্লমঝাড়ে এবং ইবরাকপুরের দিকে রওনা হয়। ৪ ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধে গুলিবর্ষণ ও পাল্টা গুলি বর্ষণের ফলে কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধা শহিদ হন। হতাহত নান্দিনা আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনীর হতাহতের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে মুক্তিযােদ্ধাদের মধ্যে উমর ফারুক, মােস্তফা, নবীর হােসেন, হামিদুর রহমান, আবেদ আলী, আসাদুজ্জামান প্রমুখ শহিদ হন।
পরাজয়ের কারণ
আশ্রয়স্থল সম্পর্কে ভুল তথ্য সাজা কোম্পানির আইও ফজলুর রহমান রাজা অত্র এলাকাকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন যা তাদের চরম বিপদের মধ্যে ফেলে দেয়। এলাকাটি ছিল মুক্তিযােদ্ধাবিরােধী শক্তি জামায়াতে ইসলামী অধ্যুষিত। ফলে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা দৌলতপুরে এসে পৌছানাের সাথে সাথেই তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে খবর দিয়ে ডেকে আনে এবং মুক্তিবাহিনী অপ্রত্যাশিত হামলার শিকার হন। যােগাযােগ ব্যবস্থার অভাব। মুক্তিবাহিনীর কাছে কোনাে যােগাযােগ ব্যবস্থা না থাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আগমন সংবাদ সব দলের কাছে পৌছানাে সম্ভব হয় নি। ফলে দলের অধিনায়কের প্রত্যাহার আদেশও উপদলগুলাের কাছে পৌছায় নি। উধ্বর্তনের আদেশ উপেক্ষা করা অবস্থা বেগতিক দেখে কোম্পানি অধিনায়ক যখন সবাইকে পিছু হটার জন্য আদেশ দেন, তখন বেশির ভাগ মুক্তিযােদ্ধাই পিছু হটতে অস্বীকৃতি জানান এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। অপরিচিত এলাকা সাজা কোম্পানির বেশির ভাগ সদস্যই ছিলেন দিনাজপুর, বগুড়া এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের। রাতের অন্ধকারে তাঁবা তার এলাকায় পৌছান বিধায় রাস্ত ঘাট ছিল অপবিচিত। ফলে অর্কিতে যখন পাকিস্তানি বাহিনী তাদের উপর আক্রমণ করে, তখন তারা ভুল পথে ছােটাছুটি শুরু করেন এবং হানাদারদের কাছে ধরা পড়ে শহিদ হন । উপসংহার সাদুল্লাপুর থানা আক্রমণে ব্যাপক সফলতার পরই সাকওয়াব ব্রিজ ধ্বংসের পরিকল্পনা নিয়ে সাজা কোম্পানি নান্দিনা আসে।
কিন্তু এলাকাবাসীর বিশ্বাসঘাতকতার কাবণে তারা অপ্রত্যাশিতভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়। এতদসত্ত্বেও যে বীরত্বের সাথে মুক্তিযােদ্ধাবা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যান এবং যুদ্ধ করতে কবতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণগুলাে থেকে নিজেদের মুক্ত করেন তা স্বাধীনতা যুদ্ধের একটি মাইল ফলক হিসেবে গাইবান্ধা জেলা তথা সারা বালাব মানুষের মনে চির জাগরূক হয়ে থাকবে।
বালাসীঘাট অ্যামবুশ
গাইবান্ধা জেলা সদর থেকে প্রায় ৫ মাইল পূর্ব দিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে বালাসীঘাটের অবস্থান। ইতােমধ্যে মাহবুব এলাহী রঞ্জুর কোম্পানি। কালাসােনার চরে প্রতিটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানের বিপরীতে ৫টি ক্যাম্প স্থাপন করে এবং প্রতিনিয়ত আক্রমণ করে শত্রুকে বিপর্যস্ত করে তােলে। বালাসীঘাট ছিল একটি ফেরিঘাট। শত্রু এ ঘাটের পাড়ে একটি প্রতিরক্ষাব্যুহ রচনা করে। প্রতিনিয়ত মুক্তিযােদ্ধারা শত্রুর মুখােমুখি হতেন। নভেম্বর মাসের শুরুতে কোনাে একদিন ভােরে শত্রু অ্যামবুশ করে মুক্তিবাহিনীর অপেক্ষায় থাকে। মুক্তিযােদ্ধারা শত্রুকে আক্রমণ করতে যাওয়ার পথে নিজেরাই আক্রান্ত হন। বালাসীঘাটের কাছে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং মানস নদের মাঝে সমান্তরাল একটি মিনি বাঁধ ছিল। এ বাঁধের পাড়ে শত্রু অবস্থান নেয়। তুলনামূলকভাবে মুক্তিযােদ্ধাদের অবস্থান মােটেই ভালাে ছিল না। কারণ, শত্রুরা অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে অবস্থান নেয়ায় কৌশলগত দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল। পাকিস্তানিরা অতর্কিত আক্রমণ করে। ভাের থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত একনাগাড়ে যুদ্ধ চলে। একপর্যায়ে মুক্তিযােদ্ধা ফজলু তার অবস্থান পরিবর্তন করতে গেলে তিনি গলায় গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে স্থানান্তরকালে পুনরায় গুলিবিদ্ধ হলে তিনি শহিদ হন। কালাসােনার চরে তাকে সমাহিত করা হয়। বর্তমানে কালাসােনার চর স্থানটি শহিদ ফজলুর স্মৃতিস্বরূপ ফজলুপুর ইউনিয়ন নাম ধারণ করে মুক্তিযােদ্ধাদের গৌরব হয়ে আছে।
রতনপুরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ
গাইবান্ধা জেলার সদর থানার পূর্ব দিকে ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের। উপর রতনপুর নামক স্থানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি শক্ত প্রতিরক্ষা ক্যাম্প ছিল। এ স্থানটি গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার কয়েক মাইল উত্তরে অবস্থিত। বাঁধের উপর শত্রুর বেশ কয়েকটি ক্যাম্প থাকায় তাদের পারস্পারিক যােগাযােগ এবং মুক্তিযােদ্ধাদের কর্মকাণ্ড প্রতিরােধ করার জন্য রতনপুর ক্যাম্পটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। নভেম্বর মাসের শেষ দিকের এক বিকালে মুক্তিযােদ্ধারা শক্ত অবস্থানে আক্রমণ করার পরিকল্পনা করেন। মাহবুব এলাহী রঞ্জুর নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধারা কালাসােনার চরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানের বিপরীতে কয়েকটি ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন। এসব ক্যাম্প থেকে শত্রু অবস্থানে প্রতিনিয়ত চোরাগােপ্তা হামলা করা হতাে।
নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে একদিন রতনপুর শত্রু ক্যাম্পে মুক্তিযােদ্ধারা। আক্রমণ করেন। উভয়পক্ষে তুমুল যুদ্ধ হয়। প্রায় কয়েক ঘণ্টা ধরে পরস্পর গুলি বিনিময়ের পর শত্রুদের গুলি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর মুক্তিযােদ্ধারা দ্রুত ক্যাম্পটি চার্জ করে দেখতে পান যে, ১জন শত্রু সৈন্য ছাড়া সবাই স্থান ত্যাগ। করে পলায়ন করেছে। ভয়ে জড়সড় সৈনিকটিকে ধরার পর তার কাছ থেকে জানা যায় যে, তাদের প্রায় ৭-৮জন হতাহত হয়েছে। ধৃত শত্রু সৈন্যকে ১১ নম্বর সেক্টরের মানকারচর সাব-সেক্টরে প্রেরণ করা হলে সেখান থেকে ‘জেড’ ফোর্স সদর দপ্তর। তেলঢালাতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
অন্য কথন
৬ নম্বর সেক্টর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মােহাম্মদ খাদেমুল বাশার পেশায় বিমানবাহিনীর ফাইটার পাইলট হলেও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর অধিনায়ক হিসেবে তিনি চিন্তায়, মননে এবং স্থলযুদ্ধ পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় বহুমাত্রিকতার স্বাক্ষর রাখেন। আগস্টের প্রথম দিকে উইং কমান্ডার বাশার লালমনিরহাট সদরের এক গণযােদ্ধা এবং তার সহযােগী শরীফ উদ্দিনকে (বাচ্চুকে) নির্দেশ দেন, কিছু নারীকে মুক্তিযুদ্ধে আনার জন্য আমাদের রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থায় কিশােরীদের সে সময় এ ভূমিকায় নেয়া ছিল অত্যন্ত কঠিন কাজ। বাচ্চু প্রথমেই তার ছােটো বােন শামিমা আক্তার গিনিকে মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। দশম শ্রেণির ছাত্রী গিনি মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেওয়ার আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন। বাছুর উদ্যোগে এবং গিনির প্রচেষ্টায় বিউটি, পারভীন, পিয়ারী ও আঙ্গুর নামের আরও ৪জন তরুণী স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসেন। এঁদের সবার বয়স ১৪ থেকে ১৮। উইং কমান্ডার বাশার এ কিশােরীদের তাঁর সেক্টর সদর দপ্তর বুড়িমারীতে থাকার ব্যবস্থা করে রাইফেল ও গ্রেনেডের উপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। তারপর তিনি তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও নার্সিংয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার। ব্যবস্থা করেন। প্রশিক্ষণ শেষে উইং কমান্ডার বাশার মেয়েদের বিভিন্ন রণাঙ্গনে প্রেরণ করেন। তারা ছেলেদের সাথে প্রতিরক্ষা অবস্থানে এবং বিভিন্ন ক্যাম্পে ঘুরে। ঘুরে কিছুদিন কাটান। এমনই একসময় সেক্টর অধিনায়ক বিভিন্ন দেশের। টেলিভিশন ও পত্রিকা সাংবাদিককে প্রতিরক্ষা অবস্থানে নিয়ে এসে আমাদের মুক্তাঞ্চল ঘুরে দেখান। আরও দেখান যে, আমাদের মেয়েরাও ছেলেদের সাথে একত্রে যুদ্ধ করছে। বহির্বিশ্বে সশস্ত্র যুদ্ধে আমাদের মেয়েদের অংশগ্রহণ প্রচার করাই ছিল উইং কমান্ডার বাশারের প্রধান উদ্দেশ্য।
মেয়েদের সহযােদ্ধা হিসেবে পেয়ে মুক্তিযােদ্ধাদের মনােবল বহুগুণ বেড়ে যায়। সেক্টর সদর দপ্তর বুড়িমারীতে অবস্থিত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল খােলা হয়। ডা, হুদাসহ কয়েকজন বাংলাদেশি ডাক্তার সেখানে আহত মুক্তিযােদ্ধাদের চিকিৎসা করতেন। গিনি, পিয়ারী, আঙ্গুর, বিউটি ও পারভীন এ ফিল্ড হাসপাতালের সেবিকা হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। পর্যন্ত কাজ করে। ১১-১২ ডিসেম্বর লালমনিরহাট শহর শত্রুমুক্ত হলে হাসপাতালটি লালমনিরহাট রেলওয়ে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যুদ্ধ। শেষে মেয়েরা তাদের পরিবার ও লেখাপড়ায় ফিরে যান।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – পঞ্চম খন্ড