শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
সীমান্তে হামলার ব্যাপারে পাকিস্তানের প্রতি ভারতের হুশিয়ারি | দৈনিক আনন্দবাজার | ১৬ এপ্রিল ১৯৭১ |
আর যেন গোলাগুলি না পড়েঃ পিণ্ডিকে দিল্লীর হুশিয়ারি
সীমান্তে হামলাবাজি বন্ধ কর। আর যেন গোলাগুলি না পড়ে। দিল্লী পিণ্ডিকে কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে।
সীমান্তের ওপারে যখন কামানের নলে আগুন, এপারেও তখন কথার আগুন ছুটছে। ভারতের সাফ সাফ বয়ান একটা কূটনৈতিক লড়াইয়ের সূচনা বলা যেতে পারে। আমাদের গ্রামের ওপর পাক বাহিনী গোলা নিক্ষেপ করেছিল, তারই বিরুদ্ধে এই নোট, তীব্র প্রতিবাদ। অদিকে পিণ্ডি ভারতীয় এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া তিনজন সিপাহিকে ফেরত দেবার দাবী সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে।
নয়াদিল্লী থেকে আমাদের বিশেষ সংবাদদাতা জানাচ্ছেন ত্রিপুরা পূর্ববঙ্গ সীমান্তে ভারতীয় এলাকার মধ্যে পাক সশস্ত্র বাহিনী বিনা প্ররোচনায় গুলি বর্ষনের বিরুদ্ধে ভারত অদ্য (বৃহস্পতিবার) পাক হাই কমিশনের কাছে কড়া প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছে।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ত্রিপুরা সীমান্তের কাছে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সমাবেশ ঘটেছে এবং বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি করেছে।
বহির্বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ঐ লিপিটি পাঠানো হয়েছে। লিপিতে বলা হয়েছে এই ধরণের আক্রমণাত্মক কাজকর্ম বন্ধের জন্য অবিলম্বে পাক সশস্ত্র বাহিনীকে যথোপযুক্ত নির্দেশ দেওয়া উচিৎ। পাক বাহিনী এ রকম করে গেলে যে কোন রকম পরিণাম বা পরিণতির জন্য পাক সরকারকে দায়ী কড়া হবে।
আগে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে যে, দিনাজপুর অঞ্চলে মোতায়েন পাকবাহিনী ভারতীয় এলাকায় বিশেষ করে সামজিয়া গ্রামে হাল্কা মেশিন গান ও মাঝারি মেশিন গান থেকে গোলা বর্ষন করেছে। তাছাড়া, ৭ এপ্রিল থেকে ত্রিপুরার বিপরীত দিকে বিবিবাজারে (কুমিল্লায়) পাকসেনাদের সমাবেশ হচ্ছে এবং বিনা প্ররোচনায় পাক বাহিনীর গোলাবর্ষনে ভারতীয় নাগরিকরা আহত হয়েছেন।
পি টি আই জানাচ্ছেনঃ পাকিস্তান বেতারে বলা হয়েছে যে, কদিন আগে অপহৃত ভারতীয় সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর তিনজন সিপাহিকে ফেরত দেবার জন্য ভারতের দাবীটি পাকিস্তান অগ্রাহ্য করেছে।
১১ এপ্রিলে ভারতের নোটে বলা হয়েছে, গত ৯ এপ্রিল ওইসব সিপাই ২৪ পরগনা-যশোহর সীমান্তে কর্তব্যরত ছিলেন, ভারতীয় এলাকার মধ্য থেকে তাদের অপহরণ কড়া হয়। পাক বেতারে বলা হয়েছে, ভারতের দাবী ভিত্তিহীন। সিপাইদের পুর্ববঙ্গের এলাকায় আটক কড়া হয়।
পূর্ব পাকিস্তান নয়
(বিশেষ সংবাদদাতা)
নয়াদিল্লী, ১৫ এপ্রিল – ভারত সরকারের কাছে পূর্ব পাকিস্তান বলে আর কোন কথা নেই। এর স্থান নিয়েছে ‘পূর্ববঙ্গ’।
আজ এই প্রথম বহির্বিষয়ক মন্ত্রক পাকিস্তানী হাইকমিশনকে দেওয়া তাদের সরকারী নোটে সর্বত্র ‘পূর্ববঙ্গ’ কথাটি ব্যাবহার করেন। ভারতীয় এলাকার মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর গুলিবর্ষনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ঐ নোট দেওয়া হয়েছে।