সংক্ষিপ্ত ঘটনাপঞ্জি ২৫ মার্চ ১৯৭১ থেকে ডিসেম্বর ১৯৭৫ ৬৬৭
১৯৭১
২৫ মার্চ : ঢাকায় গভীর রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযান শুরু। শেখ
মুজিবুর রহমানকে নিজ বাসভবন থেকে আটক। বহু হতাহত।
২৬ মার্চ : পাকিস্তানের পূর্বাংশের স্বাধীনতা ঘােষণা; বাংলাদেশ’-এর স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা কমান্ডার মােয়াজ্জেম হােসেন নিহত।
১০ এপ্রিল : ভারতীয় বেতার আকাশবাণী’র শিলিগুড়ি কেন্দ্র থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠনের ঘােষণা।
১৭ এপ্রিল : প্রবাসে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন। প্রবাসী সরকারের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ)-এর মুখ্য নেতৃবৃন্দ কর্তৃক বয়কট।
২৫ এপ্রিল : ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’-এর কার্যক্রম শুরু।
০৩ জুন : পিরােজপুরের স্বরূপকাঠির পেয়ারা বাগানে পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টি গঠিত।
২৭ জুলাই : মেজর আবু তাহের ও মেজর মঞ্জুরের পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যােগদান।
০৯ আগস্ট : ভারত ও সােভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে শান্তি, মৈত্রী ও সহযােগিতা চুক্তি’ স্বাক্ষর।
১১ সেপ্টেম্বর : জাতীয় পরিষদ সদস্য এনায়েত হােসেন খানের সভাপতিত্বে খন্দকার মােশতাক আহমদ, শেখ মণি, আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, শেখ আব্দুল আজিজ প্রমুখের সমর্থকদের এক সভায় তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান।
২২ সেপ্টেম্বর : ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সােভিয়েত ইউনিয়নের।ব্রেজনেভ, পদগনি ও কোসিগিনের আলাপ। বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতীয় অবস্থানকে সােভিয়েত ইউনিয়নের তরফ থেকে সহায়তার আশ্বাস।
…………………………………………………………….
৬৬৭).বর্তমান ঘটনাপঞ্জীটির পরিধি বিশেষ বিবেচনায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত রাখা হয়েছে। যদিও এই গ্রন্থের মূল আলােচ্য বিষয় তথা মুজিব বাহিনীর উদ্ভব ও তার বিকাশধারাকে কোনােভাবেই উপরােক্ত সময়ের পরিধিতে সীমিত করা যায় না। বর্তমান ঘটনাপঞ্জীতে কেবল সীমিত আকারে মুজিব বাহিনী, শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামল, জাসদের উত্থান ও গণবাহিনী গঠনের সূচনাকালকে ধারণ করার চেষ্টা হয়েছে। এটা এই ঘটনাপঞ্জীর বিশেষ সীমাবদ্ধতা। এই পঞ্জিকা প্রস্তুতিতে এ এস এম সামছুল আরেফিন প্রণীত বাংলাদেশের নির্বাচন : ১৯৭০-২০০১ [বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন্স, ২০০৩] শীর্ষক গ্রন্থ থেকে বিশেষ সহায়তা নেয়া হয়েছে।
Page 420
০৬ ডিসেম্বর : স্বাধীন দেশ হিসেবে ভারত কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি।
০৭ ডিসেম্বর : ভুটান কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি।
১৪ ডিসেম্বর : ঢাকায় ভারতীয় বাহিনীর ব্যাপক বােমাবর্ষণ।
১৬ ডিসেম্বর : ঢাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ।
১৮ ডিসেম্বর : ঢাকার রায়েরবাজার এলাকায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের মৃতদেহ উদ্ধার ।
: কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চার বেসামরিক বন্দি ব্যক্তিকে ঢাকায় প্রকাশ্যে বেয়নট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা।
: ডি পি ধরের সঙ্গে কলকাতায় প্রবাসী সরকারের বৈঠক শুরু। এই বৈঠক চলে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১৯ ডিসেম্বর : বেতার বক্তৃতায় তাজউদ্দীন আহমদের ঘােষণা : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য পেতে আগ্রহী নয়।
২১ ডিসেম্বর : মাহবুব আলম চাষীকে পররাষ্ট্রসচিবের পদ থেকে অপসারণ।
: পাকিস্তান বাহিনীকে সহায়তার অভিযােগে মৌলভী ফরিদ আহমেদকে পিটিয়ে হত্যা।
২২ ডিসেম্বর : পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের ছয় দিন পর কলকাতা থেকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমানে চড়ে ঢাকা এলেন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
২৩ ডিসেম্বর : ঢাকায় মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক। জাতীয় মিলিশিয়া বাের্ড গঠন।
২৪ ডিসেম্বর : পাকিস্তানে শেখ মুজিবুর রহমান ও জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাক্ষাৎ।
২৬ ডিসেম্বর : ঢাকায় জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের ঘােষণা।
: মিলিশিয়া বাহিনীতে বিএলএফ বা ‘মুজিব বাহিনী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি নির্বিঘ্ন করতে জেনারেল ওবানের ঢাকা আগমন।
: ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স কর্তৃক ঢাকা-কলকাতা বাণিজ্যিক ফ্লাইটের ঘােষণা।
২৭ ডিসেম্বর : আওয়ামী লীগের মধ্যে উপদলীয় কোন্দল নিরসনের লক্ষ্যে ৫ জন নেতাকে নতুন করে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তি।
২৯ ডিসেম্বর : পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আবদুস সামাদ আজাদের দায়িত্ব প্রাপ্তি।
৩০ ডিসেম্বর : মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ জলিলকে আটক।
৩১ ডিসেম্বর : সদ্যস্বাধীন দেশে পাকিস্তানি (উর্দুভাষী) মালিকাধীন কলকারখানা ও।ব্যবসায়িক সংগঠনকে সরকারি মালিকানায় আনার রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত।
: তাজউদ্দীন আহমদসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিতিতে ঢাকায় সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্বোধন।
১৯৭২
০২ জানুয়ারি : স্বাধীন দেশে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কমান্ডারদের প্রথম ফরমেশন বৈঠক শুরু।
Page 421
: জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ বাের্ড গঠন; বাের্ডের ১১ সদস্যের মধ্যে ‘মুজিব বাহিনীর দু’জন প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত।
০৩ জানুয়ারি : শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের বন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত।
০৫ জানুয়ারি : ‘পরিত্যক্ত’ শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণের জন্য অধ্যাদেশ (এপিও-১) জারি।।
০৭ জানুয়ারি : ব্যাংক ও ইন্সিওরেন্স কোম্পানি রাষ্ট্রীয়করণ।
১০ জানুয়ারি : পাকিস্তান থেকে লন্ডন হয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকায় আগমন। পথে দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক।
: সাপ্তাহিক আকারে মুজিব বাহিনীর একাংশ কর্তৃক ‘গণকণ্ঠ’-এর প্রকাশনা শুরু। চার সপ্তাহ পর সাপ্তাহিকটির দৈনিক রূপে প্রকাশ শুরু হয়।
১২ জানুয়ারি : প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের দায়িত্ব গ্রহণ।
: তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে অর্থমন্ত্রী হলেন।
১৭ জানুয়ারি ; যুদ্ধবন্দি হিসেবে আটক পাকিস্তানের সৈনিকদের ভারতে স্থানান্তর।
২৪ জানুয়ারি : জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের প্রেসবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
: টাঙ্গাইলের কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্রসমর্পণ ।
০১ ফেব্রুয়ারি: জাতীয় রক্ষীবাহিনী আদেশ কার্যকর।
০২ ফেব্রুয়ারি: পাকিস্তান সরকারের খেতাবপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় অফিসারদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত।
০৬ ফেব্রুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের পশ্চিমবঙ্গ সফর। এটাই ছিল।ক্ষমতাসীন হয়ে তাঁর প্রথম বিদেশ যাত্রা।
১৫ ফেব্রুয়ারি : জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্য বাছাইয়ের জন্য পিলখানায় স্ক্রিনিং।কমিটি গঠন।
১৬ ফেব্রুয়ারি : ঢাকার পিলখানায় জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্যদের মাঝে গুলি বিনিময়। বাহিনী প্রধান মেজর নূরুজ্জামান আহত। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত।
২১ ফেব্রুয়ারি : শহীদ মিনারে তরুণদের উচ্ছঙ্খলতায় দেশবাসী স্তম্ভিত।
: শেখ ফজলুল হক মণি’র সম্পাদনায় দৈনিক বাংলার বাণীর প্রকাশনা
০১ মার্চ : প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় সফর; মস্কো গমন। পরদিন মুজিব-ব্রেজনেভ বৈঠক।
০৩ মার্চ : বাংলাদেশ রাইফেলস্ গঠনের লক্ষ্যে অধ্যাদেশ জারি। কর্নেল সি আর দত্তকে বাহিনীর মহাপরিচালক হিসেবে নিয়ােগ।
১০ মার্চ : দেশের বিভিন্ন স্থানে উর্দুভাষীদের ক্যাম্পগুলাের পাহারা থেকে ভারতীয়। বাহিনী প্রত্যাহার । ঐদিনই বিভিন্ন শহরে এরূপ ক্যাম্পে হামলা এবং বহু উর্দুভাষীকে হত্যার অভিযােগ।
১৪ মার্চ : সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর মহড়া।
Page 422
১৫ মার্চ : জাতীয় সরকার গঠনের পক্ষে সম্পাদকীয় লেখার কারণে বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক আবদুস সালামকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ।
১৬ মার্চ : ডাকসুর তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানকে আজীবন সদস্যপদ প্রদান।
১৭ মার্চ : ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বাংলাদেশ সফর।
১৯ মার্চ : বাংলাদেশ-ভারত ২৫ বছর মেয়াদি মৈত্রী ও সহযােগিতা চুক্তি স্বাক্ষর।
২২ মার্চ : পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিরক্ষায় ভারতীয় সেনাবাহিনী তলব।
২৮ মার্চ : বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর।
০৪ এপ্রিল : বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি।
০৬ এপ্রিল : দুর্নীতির অভিযােগে আওয়ামী লীগের ১৬ এমপিকে বহিষ্কার। ৯ এপ্রিল এবং ২২ সেপ্টেম্বর এভাবে আরও ২৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়।
০৯ এপ্রিল : প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ছাত্র ইউনিয়নের ত্রয়ােদশ জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধন। সম্বেলনে সংগঠনের সভাপতি নূরুল ইসলামের ঘােষণা, সরকারের সঙ্গে ঐক্যের স্বার্থে সংগঠনের বিলুপ্তিতেও সম্মত রয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।
১১ এপ্রিল : সংবিধান প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন।
২৩ এপ্রিল : ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই)-এর একটি প্রতিনিধি দলের ঢাকা আগমন। ২৮ এপ্রিল সিপিআই-সিপিবি’র যুক্ত ঘােষণায় বাংলাদেশ-ভারত-সােভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান মৈত্রী’তে সন্তোষ প্রকাশ।
০৩ মে : ঢাকায় দুঃসাহসিক ব্যাংক ডাকাতি।
২৩ মে : সাতক্ষীরায় রিলিফ চুরির ঘটনায় প্রতিবেদন লেখায় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাংবাদিক এস এম হাসানকে গ্রেফতার।
২৫ মে : মুজিব বাহিনীর তিন গুরুত্বপূর্ণ নেতা আ স ম আব্দুর রব, শাজাহান সিরাজ ও শরীফ নুরুল আম্বিয়া এক বিবৃতিতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি, গণপরিষদ ও মন্ত্রিসভা বাতিল এবং জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানান। মুজিব বাহিনীর ওই তিন নেতা সিরাজুল আলম খানের অনুসারী হিসেবে স্বীকৃত হওয়ায় উপরােক্ত বিবৃতিকে সিরাজুল আলম খানের রাজনৈতিক চিন্তা হিসেবে গণ্য করা হয়। উল্লিখিত দাবি শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রত্যাখ্যান।
২৯ মে : সিপিবি (মনি সিংহ, আবদুস সালাম) ও ন্যাপ (মােজাফফর আহমেদ ও পঙ্কজ ভট্টাচার্য)-এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান-এর বৈঠক।
: ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার দায়ে হককথা ও হলিডেসহ কয়েকটি পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মুজিব বাহিনীর অন্যতম নেতা আবদুর রাজ্জাকের বিবৃতি ।
০৪ জুন : কমিউনিস্ট নেতা আবদুল মতিনকে আহত অবস্থায় আটক।
১৪ জুন : সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্ক্রীনিং বাের্ড গঠন।
Page 423
২০ জুন : পত্রিকায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে সমালােচনামূলক লেখনির জন্য সাপ্তাহিক হককথার সম্পাদক ইরফানুল বারীকে আটক।
২১ জুন : জাতীয় রক্ষীবাহিনীর প্রথম ব্যাচের শিক্ষাসমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধানমন্ত্রীর সালাম গ্রহণ।
২৫ জুন : ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে সান্ধ্য আইন জারি করে রক্ষীবাহিনীর তল্লাশি অভিযান।
২৭ জুন : নারায়ণগঞ্জের আদমজিতে শ্রমিক ধর্মঘট মােকাবেলায় রক্ষীবাহিনী মােতায়েন।
০১ জুলাই ; আদমজিতে শ্রমিক সংঘর্ষ; চারজন নিহত। মিল বন্ধ ঘােষণা।
০২ জুলাই : পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ঐতিহাসিক সিমলাচুক্তি স্বাক্ষর।
০৪ জুলাই : বন্দি অবস্থা থেকে সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলের মুক্তিলাভ।
১৯ জুলাই : ছাত্রলীগে সিরাজুল আলম খান ও ফজলুল হক মণি’র অনুসারীদের মাঝে আনুষ্ঠানিক বিভক্তি । ঢাকায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের আলাদা সম্মেলন অনুষ্ঠানের ঘােষণা এবং ২১-২৩ জুলাই ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সােহরাওয়ার্দী উদ্যান ও পল্টন ময়দানে।
০২ আগস্ট : আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সভায় ‘মুজিববাদ’ প্রতিষ্ঠার শপথ ।
২৫ আগস্ট : আদমজীতে আবার শ্রমিদের সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৫০। রক্ষীবাহিনী তলব। সান্ধ্য আইন জারি। মিল বন্ধ ঘােষণা।
: ভারত থেকে প্রশিক্ষণ শেষে রক্ষীবাহিনীর ‘লিডার’দের প্রথম দলের ঢাকায় প্রত্যাবর্তন।
০৩ সেপ্টেম্বর : মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ভুখা মিছিল।
০৫ সেপ্টেম্বর : সাপ্তাহিক মুখপত্র ও স্পােকসম্যান-এর সম্পাদক ফয়জুর রহমানকে জননিরাপত্তা আইনে আটক।
২২ সেপ্টেম্বর : লে. কর্নেল আবু তাহের সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করেন।
: সরকার কর্তৃক সাপ্তাহিক ‘হককথা’, ‘মুখপত্র’ এবং ‘স্পােকসম্যান’ পত্রিকার লাইসেন্স বাতিল।
২৭ সেপ্টেম্বর : সাপ্তাহিক হককথা, মুখপত্র, স্পােকসম্যান-এর প্রকাশনা নিষিদ্ধ ঘােষণা।
৩১ অক্টোবর : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল।(জাসদ)-এর আত্মপ্রকাশ।
০৪ নভেম্বর : গণপরিষদে দেশের সংবিধান গৃহীত।
০৬ ডিসেম্বর : রক্ষীবাহিনীর দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত।
২৩ ডিসেম্বর : জাসদের প্রথম কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত। এটি অনুষ্ঠিত হয় তিন দিনব্যাপী। সম্মেলন শেষে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক কমিটির সদস্যদের নাম ঘােষণা।
৩১ ডিসেম্বর : সরকারি চাপে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদকের পদ ছাড়তে হয় ফয়েজ আহমদকে।
Page 424
১৯৭৩
০১ জানুয়ারি : ঢাকায় ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরােধী মিছিলে গুলি। দুজন নিহত। ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন দেশে হরতাল পালন।
: ছাত্র মিছিলে গুলির ঘটনায় বিশেষ সংস্করণ প্রকাশ করায় দৈনিক বাংলার সম্পাদনা পরিষদের সভাপতি কবি হাসান হাফিজুর রহমান এবং পত্রিকাটির সম্পাদক তােয়াব খানকে সরকার কর্তৃক অপসারণ করে ‘ওএসডি করা হয়। এ ঘটনাকে স্বাগত জানিয়ে জনসভায় ছাত্রলীগ সভাপতি শেখ শহিদুল ইসলামের মন্তব্য : পাকিস্তান সরকারের দু’ জন সহযােগী দৈনিক বাংলা থেকে অপসারিত।
১৪ জানুয়ারি : জাসদের ঘােষণাপত্র প্রকাশ।
০৪ ফেব্রুয়ারি: ভােলা লঞ্চঘাটে জাসদ সভাপতি মেজর জলিলের ওপর অতর্কিতে গুলিবর্ষণ । অল্পের জন্য মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান তিনি।
২৮ ফেব্রুয়ারি: দ্য বাংলাদেশ ন্যাশনাল লিবারেশন স্ট্রাগল (ইনডেমনিটি) অর্ডার, ১৯৭৩ জারি। এটা ‘প্রেসিডেন্ট আদেশ ১৬’ নামেও পরিচিতি পায়। এই আইনে ১ মার্চ ১৯৭১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় যা কিছু করা হয়েছে তাকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। এই আইন উর্দুভাষীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে আদালতে বিচার প্রার্থনার পথ বন্ধ করে।
০৭ মার্চ : নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার পর দেশে প্রথম পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠান।
০১ মে : ভারতে ছাপা ১০ ও ৫ টাকার বাংলাদেশি নােট প্রত্যাহার।
১২ মে : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রথম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত। এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় তিন দিনব্যাপী।
১৩ মে : ‘স্বদেশ’ পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ।
১৫ মে : তিনদফা দাবিতে মাওলানা ভাসানীর অনশন।
২৭ মে। : আওয়ামী লীগের শাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী জাসদ কর্তৃক গণবিক্ষোভের ডাক। নরসিংদীতে তাদের মিছিলে গুলি। ঘটনাস্থলে নিহত নয়জন।
০৬ জুন : কর্নেল শফিউল্লাহ এবং জিয়াউর রহমানের ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি।
২৮ জুন : চরফ্যাশন থানা লুট ও রামগড়ের জালিয়া ফাড়িতে হামলা।
০২ জুলাই : লালমােহন থানা লুট।
০৩ জুলাই : মােড়েলগঞ্জের তেলিগাতি ফাঁড়িতে হামলা।
০৮ জুলাই : পাথরঘাটার চরকুয়ানি ও বাউফলের বগা ফাঁড়িতে হামলা।
০৯ জুলাই : বৈদ্যেরবাজারের আলিপুর ফাঁড়িতে ও গােপালগঞ্জের পাটগাতিয়া ফাঁড়িতে হামলা।
২০ জুলাই : দেশব্যাপী তল্লাশি অভিযানে সেনাবাহিনী তলব।
২৩ জুলাই ঢাকায় সান্ধ্যআইন জারি করে তল্লাশি।
২৭ জুলাই : রাজশাহী জেলে কয়েদিদের বিদ্রোহ।
Page 425
০৩ আগস্ট : চট্টগ্রামে সান্ধ্যআইন জারি করে তল্লাশি অভিযান।
১০ আগস্ট : ঈশ্বরগঞ্জ ও সাতকানিয়া থানায় দুটি ফাঁড়িতে হামলা। এটা ছিল এ মাসে এরূপ ছয়টি হামলার দুটি।
১১ আগস্ট : চট্টগ্রামের ‘দেশবাংলা’ অফিসে সরকার কর্তৃক তালা এবং ১০ জনকে গ্রেফতার।
২৮ আগস্ট : বাংলাদেশের সম্মতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর যার আওতায় যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আটকেপড়া মানুষদের প্রত্যাবাসনের পথ সুগম হয়।
২৯ আগস্ট : তিনদফা দাবিতে মাওলানা ভাসানীর হরতাল আহ্বান।
০৩ সেপ্টেম্বর : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জাসদ সমর্থক ছাত্র সংগঠনের বিজয় ঠেকাতে সরকার সমর্থক ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক ব্যালট বক্স ছিনতাই, ফলাফল বানচাল ।
০৬ সেপ্টেম্বর : চার ব্যক্তিকে বাইরে থেকে ধরে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা।
১৯ সেপ্টম্বর : জেনেভাভিত্তিক রেডক্রস সােসাইটির তত্ত্বাবধানে পাকিস্তানে আটক বাংলাদেশিদের ঢাকায় প্রত্যাবর্তন শুরু। একইভাবে ঢাকা থেকে উর্দুভাষীদের পাকিস্তানে প্রত্যাবাসন শুরু।
: সংবাদমাধ্যমের ডিক্লারেশন ও রেজিস্ট্রেশন নিয়ন্ত্রণমূলক প্রিন্টিং প্রেস এন্ড পাবলিকেশনস অর্ডিনেন্স’ নামে নতুন আইন তৈরি।
২০ সেপ্টেম্বর : রাষ্ট্রপতিকে দেশে জরুরি অবস্থা ঘােষণার ক্ষমতা দিয়ে বিল পাস।
২৪ সেপ্টেম্বর : দেশের ১৫০টি থানায় জাতীয় রক্ষীবাহিনী মােতায়েন।
০৩ অক্টোবর : পাবনার শাহজাদপুরে রক্ষীবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ; ৮ জন নিহত।
১০ অক্টোবর : ঢাকায় একদিনে ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যা।
১২ অক্টোবর : চুয়াডাঙ্গা কারাগার ভেঙে ১৪ জনের পলায়ন।
১৪ অক্টোবর : আওয়ামী লীগ, সিপিবি ও ন্যাপের উদ্যোগে ত্রিদলীয় ঐক্যজোট গঠনের ঘােষণা।
১১ নভেম্বর : শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন।
২০ নভেম্বর : ঢাকার নাখালপাড়ায় মেজর এম এ জলিল কর্তৃক এক বৈঠকের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীতে জাসদের সংগঠন গড়ে তােলার কার্যক্রম শুরু।
২৯ নভেম্বর : কুমিল্লা জেলার মতলব থানা লুট।
০৪ ডিসেম্বর : প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক সিপিবি’র স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম রাজনৈতিক কংগ্রেসের উদ্বোধন। ৫ দিনের এই কংগ্রেস শেষে মনি সিংহকে সভাপতি এবং মােহাম্মদ ফরহাদকে সম্পাদক করে দলের ২৬ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন।
১৫ ডিসেম্বর : দেশের তিনটি থানায় সশস্ত্র হামলা। এটা ছিল এ মাসে অনুরূপ আরাে দুটি হামলার অতিরিক্ত।
Page 426
২৪ ডিসেম্বর : রাষ্ট্রপতি পদ থেকে আবু সাঈদ চৌধুরীর ইস্তফা। স্পিকার মুহম্মদ উল্ল্যাহ’র নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ।
১৯৭৪
০৮ জানুয়ারি : তিন দিনের সফরে ভারতের বৈদেশিক সচিব কেওয়াল সিংয়ের ঢাকা আগমন।
১০ জানুয়ারি : ভােলা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মােতাহারউদ্দীন আহমেদ গুলিতে নিহত।
১৩ জানুয়ারি : ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে জনসভা অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা।
০৩ ফেব্রুয়ারি: জাসদের সহ-সভাপতি এডভােকেট মােশারফ হােসেন অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত।
০৯ ফেব্রুয়ারি: সংসদে অনুমােদিত বিশেষ ক্ষমতা আইন গেজেট আকারে প্রকাশ।
২২ ফেব্রুয়ারি : পাকিস্তান, ইরান ও তুরস্ক কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান।
২৩ ফেব্রুয়ারি: ইসলামি সম্মেলনে যােগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের লাহাের যাত্রা এবং সেখানে উঞ্চ সংবর্ধনা।
১৭ মার্চ : ঢাকায় মিন্টো রােডে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে জাসদের মিছিলে গুলি; বহু হতাহত। জাসদের মুখপত্র দৈনিক গণকণ্ঠ কার্যালয়ে আগুন। পরদিন সম্পাদক আল-মাহমুদকে গ্রেফতার। দেশব্যাপী হরতাল আহ্বানতবে তা খুব বেশি কার্যকর হয়নি। এই ঘটনায় ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত গণকণ্ঠের প্রকাশনা বন্ধ থাকে।
১৯ মার্চ : প্রধানমন্ত্রীর মস্কো যাত্রা। প্রায় ২০ দিনের সফর শেষে দিল্লিতে আগমন এবং সেখানে ৯ এপ্রিল ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক।
৩১ মার্চ : সরকারি দমনপীড়নের বিরুদ্ধে করণীয় ঠিক করতে ড. আহমদ শরীফের নেতৃত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবে শিক্ষক, লেখক, শিল্পী, সাংবাদিকদের বৈঠক। কবি সিকান্দার আবু জাফরকে সভাপতি করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট নাগরিক স্বাধীনতা ও আইন সহায়তা কমিটি’ গঠন।
০৯ এপ্রিল : শেখ মুজিবুর রহমানের ভারত গমন। ২৮ মাসের মধ্যে এটা ভারতে তাঁর তৃতীয় সফর।
: দিল্লিতে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি; পাকিস্তানের সৈনিকদের যুদ্ধাপরাধের বিচার না করার ঘােষণা।
১৬ এপ্রিল : ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সােভিয়েত অর্থনীতিবিদদের একটি দলের ঢাকা আগমন।
০৭ মে : শেখ ফজলুল হক মণি’র সম্পাদনায় দ্বিতীয় দৈনিক বাংলাদেশ টাইমস্ এর আত্মপ্রকাশ।
১১ মে : জাতীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার।
১৬ মে : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর। বাংলাদেশ কর্তৃক ভারতকে বেরুবাড়ি এলাকা প্রদান।
Page 427
২১ মে : বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সাহায্যচুক্তি স্বাক্ষর।
২৭ জুন : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর ঢাকা সফর, তিন দিন অবস্থান।
২৭ অক্টোবর : অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের পদত্যাগ । এসময় দেশজুড়ে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ চলছিল।
২৮ অক্টোবর : বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংকের ২৭৫ মিলিয়ন ডলার সাহায্য দানের ঘােষণা।
২৯ অক্টোবর : ১৯ ঘণ্টার এক সফরে হেনরি কিসিঞ্জারের ঢাকা আগমন। বাংলাদেশ কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফোর্ডকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ।
০১ নভেম্বর : রক্ষীবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ; ৯ জনকে গুলি করে হত্যা। সন্ত্রাস ও দমনপীড়নের প্রতিবাদে ঢাকার বায়তুল মােকাররমে স্বাধীনতা ও আইন সহায়তা কমিটির উদ্যোগে শিক্ষক, লেখক, শিল্পী, সাংবাদিকদের সমাবেশ।
১৭ নভেম্বর : ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরী ও কাজী জাফর আহমদের নেতৃত্বে ‘ইউনাইটেড পিপলস্ পার্টি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘােষণা।
২৮ ডিসেম্বর : দেশে জরুরি অবস্থা জারি। মৌলিক অধিকার স্থগিত। ধর্মঘট, লকআউট নিষিদ্ধ ঘােষণা।
১৯৭৫
০২ জানুয়ারি : পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির প্রধান সিরাজ সিকদার আটকাবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত।
২১ জানুয়ারি : আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনাে পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান।
২৫ জানুয়ারি : দেশে একটিমাত্র রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংসদে সংবিধানের চতুর্থ সংশােধনী গৃহীত।
: শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হলেন।
২৭ জানুয়ারি : পুলিশ কর্তৃক দৈনিক গণকণ্ঠ’ কার্যালয় দখল।
১১ ফেব্রুয়ারি : জেনারেল ওসমানী ও মঈনুল হােসেনের সংসদ সদস্যপদ ত্যাগ।
২৪ ফেব্রুয়ারি: রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বাকশাল নামে নতুন জাতীয় দল’-এর ঘােষণা। দেশের অন্যসব রাজনৈতিক দল ও গণসংগঠন নিষিদ্ধ ঘােষণা। শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই ‘জাতীয় দল বাকশালের প্রধান হন।
০৮ মার্চ : টাঙ্গাইলে এক জনসভায় রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান ও মাওলানা ভাসানীর ভাষণ দান।
০৯ মার্চ : গণকণ্ঠ সম্পাদক কবি আল মাহমুদের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ।
২৮ এপ্রিল : সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ সরকার এবং মইনুদ্দিন আহমেদ মানিক বাকশালে যােগদান না করায় সংসদে তাদের আসন শূন্য ঘােষণা।
২৩ মে : একক জাতীয় দল বাকশালে যােগদানের জন্য ২২৪ জন সাংবাদিকের প্রথম ব্যাচের আবেদন। ৪ জুন ৩০২ জনের আরেকটি ব্যাচ একইভাবে বাকশালে যােগদানের সুযােগ চেয়ে আবেদন জানায়।
Page 428
০৬ জুন : বাকশালের অঙ্গসংগঠন ও নেতৃবৃন্দের নাম ঘােষণা। মুজিব বাহিনীর দুই নেতা আবদুর রাজ্জাক ও শেখ ফজলুল হক মণি এই দলের সম্পাদক নির্বাচিত।
০৯ জুন : দেশের দৈনিকগুলাের নয়জন সম্পাদকের বাকশালে যােগদানের আবেদন।
: সংবাদপত্র অর্ডিন্যান্স ১৯৭৫ ঘােষিত । কেবল চারটি দৈনিক পত্রিকা ছাড়া অন্যসব সংবাদপত্রের প্রকাশনা বন্ধ ঘােষণা। এই ঘােষণায় তাৎক্ষণিকভাবে ২৯টি দৈনিক ও ১৩৮টি সাপ্তাহিকের প্রকাশনা বন্ধ।
২৭ জুলাই : দেশের এক লাখ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর বাকশালের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন।
০৮ আগস্ট ; প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বাকশাল শাসনে মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত ।
১১ আগস্ট : বাকশাল ব্যবস্থার মুখ্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে বঙ্গভবনে জেলা গভর্নরদের প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন।
১২ আগস্ট ; রক্ষীবাহিনীর পরিচালক এ এন এম নূরুজ্জামানের যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ।
১৪ আগস্ট : রাষ্ট্রপতিকে সংবর্ধনা দেওয়ার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি।
১৫ আগস্ট : সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হামলায় রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান স্বীয় বাসগৃহে পরিবারের ২১ জন সদস্যসহ নিহত। বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মােশতাক আহমদের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বগ্রহণ। দেশে সামরিক আইন জারি। পূর্ববর্তী মন্ত্রিপরিষদের ১৬ মন্ত্রী বহাল।
২৪ আগস্ট : জেনারেল ওসমানী রাষ্ট্রপতির প্রতিরক্ষা বিষয়ক পরামর্শদাতা নিযুক্ত ।
: মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনীর নতুন প্রধান হিসেবে নিয়ােগ।
৩১ আগস্ট : বাংলাদেশকে চীনের স্বীকৃতি দান।
০১ সেপ্টেম্বর : প্রেসিডেন্টের আদেশ বলে বাকশাল ব্যবস্থা রহিত।
০৩ অক্টোবর : রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর থেকে সকল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘােষণা।
০৪ অক্টোবর : রক্ষীবাহিনী বিলুপ্তি করে এর সদস্যদের সামরিক বাহিনীতে আত্তিকরণের ঘােষণা।
০৩ নভেম্বর : সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে বন্দি করে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফ কর্তৃক সামরিক অভ্যুত্থান। তাজউদ্দীন আহমদ ও অপর তিন জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকাবস্থায় নিহত। সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থানকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ-সিপিবি-ন্যাপ এর কর্মী-সমর্থকদের মিছিল।
০৪ নভেম্বর : অভ্যুত্থানকারীদের চাপে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি প্রদান ও সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়ােগ।
Page 429
: কর্নেল আবু তাহেরের নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার কর্মীদের দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে লিফলেট বিতরণ । লিফলেটে সৈনিকদের বিদ্রোহ করা এবং ভারতের দালাল ও বিশ্বাসঘাতক খালেদ চক্রকে উৎখাত করার আহ্বান।
৫ নভেম্বর : বিচারপতি আবু সাদাত মােহাম্মদ সায়েমের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ।
৬ নভেম্বর : জাতীয় সংসদ বাতিল ঘােষণা।
: জিয়াউর রহমানের তরফ থেকে আবু তাহেরের নিকট সহায়তার আবেদন।
: ঢাকায় প্রকৌশলী আনােয়ার সিদ্দিকীর বাসভবনে জাসদ ও বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার নেতৃবৃন্দের বৈঠক। আখলাকুর রহমানসহ অনেকের আপত্তি সত্ত্বেও দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
৭ নভেম্বর : সেনানিবাসগুলােতে কর্নেল আবু তাহেরের নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার সৈনিকদের অভ্যুত্থান; বন্দি জিয়াউর রহমানকে উদ্ধার ।
: কারাগার থেকে বিপ্লবী সৈনিকরা জাসদ নেতা এম এ আউয়াল, মােহাম্মদ শাজাহান ও মির্জা সুলতান রাজাকে মুক্ত করে নিয়ে আসে।
: ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফ ও তার দুই সামরিক সহযােগী অজ্ঞাতনামা বিদ্রোহী সৈনিকদের গুলিতে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে নিহত।
: রাষ্ট্রপতি সায়েম কর্তৃক সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ। তিন বাহিনীর প্রধানদের উপ-সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত।
: রক্ষী বাহিনীর প্রধান ব্রিগেডিয়ার নূরুজ্জামানের ভারত পলায়ন।
৮ নভেম্বর : শহীদ মিনারে জাসদের সমাবেশ সৈনিকদের আক্রমণে ছত্রভঙ্গ। আ ফ ম মাহবুবুল হক আহত।
: মুজিব শাসনামলে কারাগারে আটক আ স ম আব্দুর রব ও মেজর এম এ জলিলসহ জাসদ নেতৃবৃন্দের মুক্তি।
১৫ নভেম্বর : জিয়াউর রহমানের সঙ্গে জাসদ নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিক দূরত্ব তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটে জাসদ ক নানিবাসে আবারও প্রচারপত্র বিলি । সেনাবাহিনীর জওয়ান, কৃষক, শ্রমিক সবাইকে নিয়ে দেশে বিপ্লবী কাউন্সিল গঠনের দাবি।
: জিয়াউর রহমান কর্তৃক সেনাবাহিনীর কিছু ইউনিটকে ঢাকা থেকে দেশের অন্যত্র স্থানান্তর।
২০ নভেম্বর : মেজর জেনারেল হুসেইন মােহাম্মদ এরশাদকে সামরিক বাহিনীর উপ-প্রধান হিসেবে নিয়ােগ।
২৩-২৪ নভে.: রাষ্ট্র বিরােধী কার্যকলাপের অভিযােগে মেজর এম এ জলিল, আ স ম আবদুর রব, কর্নেল আবু তাহেরসহ জাসদের বহু নেতা-কর্মী আটক।
২৬ নভেম্বর : জাসদের ঢাকা মহানগর গণবাহিনীর ছয়জন সদস্য কর্তৃক ধানমন্ডিতে ভারতীয় দূতাবাস থেকে হাইকমিশনার সমর সেনকে অপহরণের ব্যর্থ চেষ্টা। অপারেশনে চার গণবাহিনী সদস্য নিহত।
Source: মুজিব বাহিনী থেকে গন বাহিনী ইতিহাসের পুনর্পাঠ – আলতাফ পারভেজ