You dont have javascript enabled! Please enable it! হাঁড়িভাসা আক্রমণ - ডাঙ্গীর অ্যামবুশ - থুকরিপাড়ার আক্রমণ - সংগ্রামের নোটবুক
হাঁড়িভাসা আক্রমণ
বর্তমান পঞ্চগড় জেলা সদর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে একটি সড়ক ঘাঘরা পর্যন্ত। বিস্তৃত। এ সড়কের পাশেই হাঁড়িভাসার অবস্থান। পানিমাছ পাকিস্তানি ঘাটি। থেকে পাকিস্তানি সৈন্যরা এ সড়ক ধরেই সর্বদা টহল দিয়ে থাকে। এ সড়কেই তালমা ব্রিজ অবস্থিত। তালমা ব্রিজের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই শক্ররা ঐ ব্রিজে সর্বদা পাহারার ব্যবস্থা করেছে।  পানিমাছ ঘাঁটি থেকে পাকিস্তানি সেনারা প্রতিনিয়ত আসে পাশের গ্রামে। সাধারণ জনগণের উপর অত্যাচারের মাত্রাও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের সাথে। স্থানীয় রাজাকার দালাল চক্রও সাধারণ মানুষজনের উপর নিয়মিত অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে লুটতরাজে সর্বদা গ্রামবাসীদের নিগ্রহ করে চলেছে। প্রতিদিন। দলে দলে মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তারা সীমান্ত পেরিয়ে বেরুবাড়ি অথবা সাকাতি শরণার্থীশিবিরে গিয়ে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য। হচ্ছে । ১৫ আগস্ট নালাগঞ্জে অবস্থিত মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে খবর আসে, শক্ররা। ঘাঁটি স্থাপন করতে হাঁড়িভাসায় আসার জন্য তাদের শক্ত ঘাটি পানিমাছ থেকে রওনা হয়েছে। এ খবরের পরিপ্রেক্ষিতে শত্রুর অগ্রযাত্রা রােধকল্পে মুক্তিযােদ্ধারা হাঁড়িভাসায় একটি দল পাঠাতে সিদ্ধান্ত নেন। ২০জনের শক্তিশালী একটা দল। তৈরি করেন মুসা। রাত ১০টায় হাইড আউট ত্যাগ করে প্রায় ১২টার দিকে। হাঁড়িভাসার উপকণ্ঠে পৌঁছে যান মুক্তিযােদ্ধারা। গাইড মােস্তফা আর দুলু। দুজনের হাতেই রাইফেল দেওয়া হয়েছে। হাঁড়িভাসা বাজারের পাশের ছােটো লােহার ব্রিজটা পার হয়ে ঘন অন্ধকারে অল রাউন্ড পজিশনে মুক্তিযােদ্ধারা। একরামুল ২জনকে নিয়ে রেকি করতে এগিয়ে গেছেন। মােস্তফা অধিনায়ক মাহাবুবের পাশে শােয়া। উত্তেজনা আর ভয়ে থরথরিয়ে রীতিমতাে কাঁপছেন। দুলু ততটা নার্ভাস হন নি। দারুণ অস্থিরতায় ভুগছেন তিনিও।
মিনিট খানেকের ভিতরেই ফিরে আসে রেকি পার্টি। হাঁড়িভাসা বাজার এলাকায় ঢুকতে পারে নি ওঁরা। পাকিস্তানি সৈন্যদল অবস্থানে আছে কি না, বােঝা যাচ্ছে না। তবে কিছু মানুষের আলাপচারিতা তারা শুনেছেন। তাহলে কি পাকিস্তানি দল আছে? ওরা থাকলে রীতিমতাে যুদ্ধ করতে হবে হাঁড়িভাসা দখল নিতে। তা ছাড়া আর কিছুই করার নেই এখন। এতদূর অর্থাৎ হাঁড়িভাসা পর্যন্ত এসে ফিরে যাওয়ার কোনাে প্রশ্নই ওঠে না। সবাই চলে আসে টার্গেটের নিকটবর্তী নির্ধারিত স্থানে। হাতে ধরা স্টেনগান থেকে অধিনায়ক প্রথমে ২টি ফায়ার করেন। এটাই সিগন্যাল হিসেবে কাজ করে। সাথে সাথে সব আগ্নেয়াস্ত্র থেকে একযােগে শুরু হয়ে যায় গুলি বর্ষণ। মুহূর্তের ভিতরে জায়গাটা মুক্তিযােদ্ধাদের হাতিয়ারের সম্মিলিত গুলি বর্ষণের আওয়াজে মুখরিত হয়ে ওঠে। রাতের শান্তি আর স্তব্ধতা ভেঙে খানখান হয়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে গুলি চললেও ওধার থেকে কোনােরকম উত্তর নেই। কেবল কিছু মানুষের চিকার করে ছােটাছুটি করে পালানাের শব্দ পাওয়া যায়। তারপর আর শব্দ নেই। আরও মিনিট পাঁচেক গুলি চালিয়ে সবাইকে থামার নির্দেশ দেওয়া হয়। একসাথে সব হাতিয়ারের শব্দ থেমে যায়। সামনে এক সারি দোকান ও তার পিছনে রাস্তা। রাস্তার উপর বাের্ড অফিস। একটা দোকানের আড়াল নিয়ে পকেট থেকে গ্রেনেড বের করেন। অধিনায়ক। একরামুল আর মুসাকেও গ্রেনেডের পিন খুলতে বলা হয়। তারপর দাঁত কামড়ে গ্রেনেডের পিন খুলে ছুড়ে দেন বাের্ড অফিসের দিকে। মুসা এবং একরামুলও তাই করেন।
উড়ে যায় ৩টি ডিম্বাকৃতি থারটি সিক্স হ্যান্ড গ্রেনেড। মাত্র ১৫-২০ সেকেন্ড সময়। লাল-সবুজ আলাের তীব্র ঝলকানি তুলে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় গ্রেনেডগুলাে। সাথে সাথে চিল্কার করে ওঠেন, ‘চার্জ। পিছন থেকে মুক্তিযােদ্ধারা দ্রুত এগিয়ে যান সামনে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই। বাের্ড অফিসটা তাদের দখলে এসে যায়। জগদলহাট আক্রমণ পঞ্চগড় জেলার সদর থানায় জগদলহাট অবস্থিত। পঞ্চগড়-তেতুলিয়া সড়কের পূর্ব পার্শ্বে অমরখানা ও জগদলহাট এলাকা দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে চুই নদী প্রবহমান। নদীর পশ্চিম পার্শ্বে ছিল মুক্তিযােদ্ধাদের অবস্থান এবং পূর্ব পার্শ্বে অমরখানা ও জগদলহাটে ছিল পাকিস্তানি সৈন্যদের ২টি ক্যাম্প। ক্যাপটেন সুলতান শাহরিয়ার রশিদের নেতৃত্বে মুক্তিযােদ্ধাদের ১টি কোম্পানি নিয়ে অমরখানা আক্রমণ করার পরিকল্পনা করা হয়। ১৯৭১ সালের সেপটেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে মুক্তিযােদ্ধারা অমরখানায় পাকিস্তানি ক্যাম্প আক্রমণ করলে শুরু হয় প্রচণ্ড যুদ্ধ। শক্রর তীব্র আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে মুক্তিযােদ্ধারা পুনরায় চুই নদীর পশ্চিম পাড়ে নিজ ডিফেন্সে চলে আসেন। সেপটেম্বর মাসের শেষের দিকে জগদলহাটে পাকিস্তানি ঘাঁটির উপর পুনরায় আক্রমণ চালানাে হয়। জগদলহাটেও শক্রর সঙ্গে ভীষণ যুদ্ধ হয় কিন্তু তাদের তীব্র আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে মুক্তিযােদ্ধারা চুই নদীর পশ্চিম পাড়ে চলে আসেন। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে অমরখানা ও জগদলহাটে পুনরায় আক্রমণ করা হয়। কিন্তু শত্রুকে প্রতিহত করা যায় নি। অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশের প্রথম কমিশনপ্রাপ্ত সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এ মতিন চৌধুরী ও সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট মাসুদুর রহমান ক্যাপটেন শাহরিয়ারের সাব-সেক্টরে যােগদান করেন। ইতােমধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পঁচাগড়, পুটিমারী, বােদা, ঠাকুরগাঁও, বীরগঞ্জ ও দিনাজপুরে মুক্তিবাহিনীকে হালকা অস্ত্র ও গ্রেনেড দিয়ে পাঠানাে হয়। সে সময় মুক্তিযােদ্ধারা সেকশন ভিত্তিতে ভাগ হয়ে শত্রুর গতিপথে রেইড ও অ্যামবুশ করেন। অ্যামবুশে বহু শত্রু হতাহত হয়। এভাবে নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শত্রুর উপর রেইড ও অ্যামবুশ চলতে থাকে।
২২ নভেম্বর রাতে ৩ কোম্পানি মুক্তিযােদ্ধা নিয়ে পুনরায় অমরখানা আক্রমণ করা হয়। এ যুদ্ধে ভারতীয় আর্টিলারি শত্রুর ঘাঁটির উপর শেলিং করে। তীব্র আক্রমণের মুখে তারা হটে যায়। মুক্তিযোেদ্ধারা অমরখানা দখল করেন। এ যুদ্ধে বিএসএফ বাহিনী কভারিং ফায়ার দিয়ে যথেষ্ট সাহায্য করে। সেদিনই ভারতীয় ১২ রাজপুতানা রাইফেলস রেজিমেন্ট অমরখানার সম্মুখে অবস্থান নেয়। ২৩ নভেম্বর চুই নদীর পশ্চিম পাড়ে মুক্তিযােদ্ধাদের ডিফেন্সের পিছনে ভারতীয় ৭ নম্বর মারাঠা রেজিমেন্ট অবস্থান নেয়। মুক্তিযুদ্ধের মােড় পরিবর্তন হয়ে যায়।  ২৩ নভেম্বর রাতে ভারতীয় বাহিনীর সহযােগিতায় জগদলহাট আক্রমণ করা হয়। উভয়পক্ষে ভীষণ গুলি বিনিময় ও আর্টিলারি শেলিং হয়। কিন্তু সেদিন জগদলহাটে সাফল্য লাভ হলাে না। ২৪ নভেম্বর পুনরায় জগদলহাট আক্রমণ করা হয়। আক্রমণে শত্রু জগদলহাট ডিফেন্স ছেড়ে দিয়ে পঞ্চগড় অভিমুখে পশ্চাদপসরণ করে। জগদলহাট আক্রমণে ভারতীয় ১২ রাজপুতানা রাইফেলস রেজিমেন্টের ‘এ’ কোম্পানি মুক্তিযােদ্ধাদের সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে যুদ্ধ করে। এ সময় চুই নদীর পশ্চিম পাড়ে অমরখানা ও জগদলহাট বরাবর ভারতীয় সেনাবাহিনীর সৈন্যরা পজিশন নেন। ২৪ নভেম্বর সম্মিলিত বাহিনী জগদলহাট থেকে পঞ্চগড় অভিমুখে রওনা হয়। পথে পঞ্চগড় থেকে ১ মাইল দূরে থাকতে শত্রুরা মুক্তিযােদ্ধাদের উপর বিক্ষিপ্তভাবে শেলিং ও গুলি করতে থাকে, ফলে সেখানে ডিফেন্স নিতে হয়। তিন দিনের যুদ্ধে শত্রুর ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এ অগ্রাভিযানে ২জন মুক্তিযােদ্ধা শহিদ হন এবং ৩৭জন মুক্তিযােদ্ধা আহত হন।
ডাঙ্গীর অ্যামবুশ
পঞ্চগড় জেলার অন্তর্গত আটোয়ারী থানার সীমান্তবর্তী এলাকায় সােনাপাতিলা। অবস্থিত। ভারতীয় ভূখণ্ডে বাংলাদেশের সােনাপাতিলার কাছাকাছি স্থানে মুক্তিযােদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। সেখান থেকেই মুক্তিযােদ্ধারা শত্রুর উপর। চোরাগােপ্তা হামলা করতেন। একই থানার ডাঙ্গীতে ছিল পাকিস্তানি সৈন্যদের ক্যাম্প। ঐ ক্যাম্প থেকে তারা আশপাশের সীমান্তবর্তী এলাকার উপর কড়া নজর রাখত। পাকিস্তানি সৈন্যরা সােনাপাতিলা এলাকায় মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণের পরিকল্পনা করে ডাঙ্গী-সােনাপাতিলা রাস্তা দিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল। সুবেদার দীন মােহাম্মদের নেতৃত্বে ইপিআর ও মুক্তিযােদ্ধা সমন্বয়ে ২৫২৬জনের ১টি দল গঠন করা হয়। মুক্তিযােদ্ধারা পাকিস্তানি সৈন্যদের ডাঙ্গী থেকে সােনাপাতিলা যাওয়ার পথে অ্যামবুশ (ফাদ) করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। | ১৯৭১ সালের সেপটেম্বর মাসে মুক্তিযােদ্ধারা ভারত থেকে সােনাপাতিলার। পার্শ্ব দিয়ে বাংলাদেশের ভিতরে প্রবেশ করেন। আনুমানিক বিকাল ৫টায় ডাঙ্গীসােনাপাতিলা রাস্তার পশ্চিম পাশে মুক্তিবাহিনী অ্যামবুশ করে শক্রর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পক্ষান্তরে, পাকিস্তানি সৈন্যদের উদ্দেশ্য ছিল ডাঙ্গী থেকে অগ্রসর হয়ে সােনাপাতিলায় পৌছে মুক্তিবাহিনীর ঘাটি আক্রমণ করে তাদের সমূলে ধ্বংস করা, কিন্তু তা আর সম্ভব হয় নি। ভাের ৫টায় পাকিস্তানি সৈন্যরা অ্যামবুশের আওতার মধ্যে আসা মাত্র মুক্তিযােদ্ধারা ফায়ার আরম্ভ করেন। অতর্কিত হামলা হওয়ায় তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যরাও পালটা ফায়ার করে। উভয় পক্ষে তুমুল গুলি বিনিময় হয়। এ অ্যামবুশে মুক্তিযােদ্ধারা আংশিক সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হন। ৪-৫জন শত্রু সৈন্য নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়। বাকি সৈন্যরা। পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। মুক্তিযােদ্ধাদেরও কয়েকজন সামান্য আহত হন।
থুকরিপাড়ার আক্রমণ
পঞ্চগড় জেলার সদর থানাস্থ তালমা নদীর পূর্ব প্রান্তে থুকরিপাড়ার অবস্থান। সােনারবান গ্রাম থেকে জগদল পর্যন্ত পাকা সড়কে পাকিস্তানি সৈন্যরা টহল দিত। টহলরত শক্রর উপর আক্রমণের উদ্দেশ্যে মুক্তিযােদ্ধারা থুকরিপাড়ার কাছে অবস্থান নেন। ১৭ সেপটেম্বর সকাল ৯টা। সকালের নাস্তা সেরে সেন্ট্রিরা তাদের পােস্টে চলে গেছেন। ঠিক এ রকম পরিস্থিতিতে তালমা পাড়ের বাঁ দিকের সেন্ট্রি মঞ্জু হাপাতে হাঁপাতে ছুটে এসে খবর দেন যে, পাকিস্তানি সৈন্যরা এদিকে আসছে। পাকিস্তানি সৈন্যদের গতিপথে আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয়। প্রতিটি দলে রয়েছে ১৫-২০জন সদস্য এবং অস্ত্র বলতে ১টি ২ ইঞ্চি মর্টার, ১টি এলএমজি, ২টি অটোম্যাটিক রাইফেল, বাকি সব এসএলআর ও ৩০৩ রাইফেল। এ অস্ত্রবল নিয়েই মুক্তিযােদ্ধারা মােকাবিলা করতে চলেছেন আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি সৈন্যদের সাথে। সেন্ট্রি পােস্টে পৌছতেই মঞ্জু লক্ষ্য করেন যে, শত শত মানুষ ছুটে আসছে। নদীতে বুকসমান পানি, পানি ভেঙে কোলের শিশু ও নানা বয়সী শত শত গ্রামবাসী পাগলের মতাে নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছে। প্রায় অধিকাংশেরই মাথায় পােটলা-পুটলি, সাথে গরু-ছাগল। তাই নিয়ে তারা। প্রাণপণে নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছে সবারই উদ্ভ্রান্ত, ভীত সন্ত্রস্ত। 
মুক্তিযােদ্ধারা দ্রুত নদী পার হয়ে ওপারে পৌছে দেখতে পান যে, ১০১২জন শক্র পাকা রাস্তা ধরে জগদল থেকে সােনারবানের দিকে আসছে। তিন। দিক থেকে শত্রুর উপর গুলি বর্ষণ করা হয়। পাকিস্তানি সৈন্যরা পজিশন নিয়ে পালটা গুলি ছুড়তে থাকে। তবে ওদের গুলি বর্ষণের ধারা এলােমেলাে। আত্মরক্ষার জন্য শত্রু এলােপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে চলেছে। হঠাৎ করে শত্রু গুলি বর্ষণ থামিয়ে দেয়। মাথা উঁচু করে অধিনায়ক মাহাবুব দেখতে পান যে, তারা পিছনের খােলা মাঠ দিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে। মুক্তিযােদ্ধারা ওদের পিছু ধাওয়া করে মধুপাড়া জগদলহাট রাস্তা পর্যন্ত নিয়ে যান। এ অপারেশনে ৪জন শত্রু সৈন্য নিহত হয়। উদ্ধার হয় ৪টি চাইনিজ। রাইফেল ও কিছু গুলি। মুক্তিযােদ্ধাদের কোনােপ্রকার ক্ষয়ক্ষতি হয় নি।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – পঞ্চম খন্ড