You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.08.07 | The wars you don't hear about | The Economist | 7th August 1971 (with Bengali Translation) - সংগ্রামের নোটবুক

The wars you don’t hear about | The Economist | 7th August 1971 (with Bengali Translation)

Translated by : Ashik Uz Zaman

যে যুদ্ধের কথা তোমরা শুনতে পাও না

এই গ্রীষ্মে এমন অনেক জায়গাতেই রক্তপাত হচ্ছে যেগুলো অনেক সময় শিরোনামে আসে না

আগস্ট মাসে সারা পৃথিবী জুড়ে অনেক গোলাগুলি চলেছে, এবং এতে করে অনেক মানুষ নিহত হয়েছে, সমুদ্রতটে রোদে শুয়ে তাদের কথা জানতে পারার সম্ভাবনা যতটুকু, তারচেয়েও অনেক বেশী। সাংবাদিক এবং টেলিভিশনের লোকেরা যুদ্ধের ভালো খবরের সন্ধান পেলে মৌমাছির মতোই ছেকে ধরে; কিন্তু, মৌমাছির মতই, তারা সেখানেই যায় যেখানে সবচেয়ে সহজে সবচেয়ে ভালো খবর জোগাড় করা যাবে, এবং তাদের বেশিরভাগই সেখানে বেশিক্ষণ থাকে না। চীন-ভারত যুদ্ধের খবর এখনও পর্যন্ত যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হচ্ছে, যদিও এটি খুবই বিস্ময়কর ব্যাপার যে দক্ষিণ ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর প্রতি প্রস্থানরত মার্কিন সেনাদের চেয়ে কম মনোযোগ দেয়া হচ্ছে। ঠিক তাই ঘটছে পূর্ব পাকিস্তান এবং উলস্টার-এর যুদ্ধের ক্ষেত্রেও, কিন্তু এরকম আরো অনেক জায়গাতে যুদ্ধ চলছে এবং সেখানেও অন্তত একই রকম প্রাণহানি ঘটছে বাংলা বা উলস্টার-এর মত, যাদের নিয়ে পত্রিকাতে মাঝেমধ্যে এক বা দুই প্যারাগ্রাফের বেশি লেখা হচ্ছে না।

এই মানচিত্রটিতে প্রায়-ভুলে যাওয়া যুদ্ধগুলোর মধ্য থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের অবস্থান দেখানো হচ্ছে। এগুলোর মধ্যেই কিছু যুদ্ধের খবর পত্রিকায় আসে না কেননা এগুলো ঘটছে অসুবিধাজনক এবং অপ্রীতিকর জায়গায়, এবং যারা যুদ্ধ করছে তারা ভুল ভাষায় কথা বলে, এবং একজন রিপোর্টারের জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত এবং কদর্য হয়ে যাবে যদি না সে একজন সরকারি পথপ্রদর্শকের দেখানো পথে না চলে। অন্য জায়গাতে, যেমন বার্মায়, একজন সাংবাদিকের পক্ষে ওই দেশের ভিসা পাওয়াই দুষ্কর, যুদ্ধক্ষেত্র দেখতে যাওয়ার কথাতো বাদই। এবং এর মধ্যে কিছু যুদ্ধ এত দীর্ঘদিন ধরে চলছে যে, এবং এতটাই অন্তহীন বলে মনে হচ্ছে যে, সম্পাদকেরা এই যুদ্ধগুলোর ব্যাপারে একঘেয়েমিতে ভুগছেন। অন্য আরও অনেক কিছুর মতই; যুদ্ধেরও বিশেষ কিছু ধরন রয়েছে, এবং সম্ভবত সে কারণেই পর্তুগিজ আফ্রিকাতে যে যুদ্ধ চলছে সে ব্যাপারে খুব কমই লেখা হয় পত্রিকায়। হামেশাই কোনো এক বুদ্ধিমান যুবক এরকম কোনো এক জায়গায় গিয়ে উপস্থিত হয় এবং সংবাদ নিয়ে ফিরে আসে। কিন্তু এভাবে কোন যুদ্ধকে দেখার মানে হচ্ছে স্থিরচিত্র দেখে দেখে চলচ্চিত্রটি বোঝার চেষ্টা করা।

এই মানচিত্রের যুদ্ধের তালিকার মধ্যে সেইসব দেশকে রাখা হয়নি যেখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য সংঘাত চলছে; তাহলে বিশ্বের অর্ধেক দেশের নামই এখানে দিতে হবে। বিশেষ করে, এই তালিকায় লাতিন আমেরিকার, অস্তায়মান গেরিলা যুদ্ধ, আধা-সামরিক যুদ্ধ এবং আধা-রাজনৈতিক গুন্ডামিগুলোকে রাখা হয়নি। গুয়াতেমালা, ব্রাজিল, উরুগুয়ে এবং আর্জেন্টিনাতে সংঘাতের মাত্রা খুবই উঁচুতে রয়েছে, যদিও অন্যান্য জায়গায় এই মাত্রা কমে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, এবং প্রথমে উল্লেখিত দুটি দেশে প্রাণহানির মাত্রা সম্ভবত মানচিত্রে দেখানো ছোট আকারের যুদ্ধগুলোর সমান। মুশকিল হচ্ছে, সম্ভবত শুধুমাত্র উরুগুয়ে ছাড়া, বিপ্লবীদের ছোট ছোট উপদলের দ্বারা সংঘটিত অপহরণ এবং বিচ্ছিন্ন রাহাজানির, এবং এথেকে উদ্ভূত সন্ত্রাসবাদি আচরণের মধ্য থেকে, সুশৃংখল যুদ্ধের ধরণ ধরতে পারা। এই মানচিত্রে, সেই যুদ্ধগুলোকেই দেখানো হয়েছে যারা একটি সুনির্দিষ্ট এবং শনাক্তযোগ্য লক্ষ্যের জন্য সেখানে সামরিক পদক্ষেপ চলমান রেখেছে। এবং এই গ্রীষ্মে এরকম অনেক যুদ্ধই চলছে।

পশ্চিমবঙ্গঃ

নকশালপন্থী (১৯৬৭ সালে সংঘটিত চরম মাও-পন্থী আন্দোলন), মার্কসবাদী (বামপন্থী কমিউনিস্ট) এবং মস্কো-পন্থী কমিউনিস্টরা নিজেদের মধ্যে এবং সরকারের সাথে যুদ্ধ করছে

শুরুঃ ১৯৬৭

প্রাণহানিঃ এই বছর প্রতিদিন গড়ে ৬-১০ টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে

ফিলিপাইনঃ

হাক্সদের, যেটি কিনা ফিলিপাইনের নিষিদ্ধঘোষিত কমিউনিস্ট পার্টির সামরিক শাখা, অস্তায়মান বিদ্রোহ। এখন তাদের সংখ্যা কমে ২০০-৩০০ জন গেরিলায় দাঁড়িয়েছে, এবং পিকিং-পন্থী নিউ পিপলস আর্মি

শুরুঃ হাক্স ১৯৪৬, এনপিএ ১৯৬৯

বার্মাঃ

পিকিং-পন্থী (সাদা পতাকা) কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে সরকার এবং কাচিন গোত্রের লোকেরা উত্তর-পূর্বে, কারেন এবং মন গোত্রের লোকেরা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউ নু – এর নেতৃত্বে দক্ষিণ-পূর্বে

শুরুঃ সাদা পতাকা ১৯৪৮, ইউ নু ১৯৭০

সৈন্যসংখ্যাঃ সাদা পতাকা ৩,০০০, ইউ নু ১,৫০০-৫,০০০

প্রাণহানিঃ সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি কিন্তু যথেষ্ট বিবেচনাযোগ্য

থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়াঃ

সরকারের বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডে ৫,০০০ কমিউনিস্টের বিদ্রোহ, মূলত উত্তর-পূর্বে এবং উত্তরে (যেখানে কমিউনিস্টরা মিও গোত্রের লোকদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়), এবং থাই সীমান্ত থেকে ১,২০০ কমিউনিস্ট পশ্চিম মালয়েশিয়াতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে

শুরুঃ মালয়েশিয়াতে ১৯৪৮, উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে ১৯৬৫, উত্তর থাইল্যান্ডে ১৯৬৭

প্রাণহানিঃ থাইল্যান্ডে প্রচুর পরিমাণে (১৯৭০ সালে দুই হাজারের বেশি), মালয়েশিয়াতে এই বছরে ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছে

বোর্নিওঃ

মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া উভয় সরকারের বিরুদ্ধে কমিউনিস্টরা

শুরুঃ ১৯৬৩

প্রাণহানিঃ গতবছরে ২৭ জন ইন্দোনেশীয় সৈন্য প্রাণ হারিয়েছে, ১৯৭১ সালের প্রথম ৫ মাসে ৮০ জন বিদ্রোহী

দক্ষিণ সুদানঃ

দক্ষিণের মূলত নিগ্রো এবং খ্রিষ্টান উদ্বাস্তুরা উত্তরের আরব মুসলিম অধ্যুষিত সরকারকে মেনে নেওয়ার দাবিতে

শুরুঃ ১৯৬৩

সৈন্যসংখ্যাঃ অ্যানিয়া-নিয়া (বিদ্রোহী) ৫,০০০-৬,০০০, সুদানের সেনাবাহিনীর ১৪,০০০ নিয়োজিত

প্রাণহানিঃ সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি কিন্তু অনেক বেশি হওয়ার কথা অবশ্যই, পাশ্ববর্তী দেশগুলোতে ২৫০,০০০ উদ্বাস্তু

ধোফারঃ

ওমানের সুলতানের বিরুদ্ধে গোত্রগুলোর বিদ্রোহ, যাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে ইয়েমেনের মার্কসবাদীরা

শুরুঃ ১৯৬৫

সৈন্যসংখ্যাঃ বিদ্রোহীদের (অধিকৃত উপসাগরের মুক্তির জন্য জনপ্রিয়) ৭০০-১,০০০, সুলতানের ১,৫০০

প্রাণহানিঃ ১৯৭০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ওমানি সেনাবাহিনীর ১২ জন নিহত, যার মধ্যে দুইজন ব্রিটিশ অফিসার রয়েছে

চাদঃ

মূলত দক্ষিণের খৃস্টান নিগ্রোদের বিরুদ্ধে উত্তরের আরবদের বিদ্রোহ

শুরুঃ ১৯৬৫ সালে

সৈন্যসংখ্যাঃ চাদের সেনাবাহিনীর ৭,০০০ এবং ১,৫০০-২,০০০ ফরাসি সৈন্যর বিরুদ্ধে ১,২০০ বিদ্রোহী

এখন পর্যন্ত প্রাণহানিঃ সেনাবাহিনীর ২৫০ জন (৩০ জন ফরাসিসহ) নিহত, বিদ্রোহীদের ৩,০০০

ইরিত্রিয়াঃ

ইথিওপিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী ইরিত্রিয়ার স্বাধীনতাকামী দল

শুরুঃ ১৯৬৫

সৈন্যসংখ্যাঃ ইথিওপীয় বাহিনী ২০,০০০ এবং ইএলএফ ১,৫০০-২,০০০

প্রাণহানিঃ ইএলএফ দাবি করছে এই যুদ্ধে ১৭,০০০ জন নিহত হয়েছে যার মধ্যে ২,০০০ জন তাদের নিজস্ব, ইথিওপীয় সরকারের কাছ থেকে হতাহতের কোন সংখ্যা জানা যায়নি

পর্তুগিজদের যুদ্ধগুলোঃ

পর্তুগিজ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী বিদ্রোহীরা

পর্তুগিজ গিনিঃ যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৬১ সালে

সৈন্যসংখ্যাঃ পর্তুগিজ বাহিনী ২৭,০০০-৩০,০০০, বিদ্রোহী ৫,০০০-৬,০০০

১৯৭০ সালে প্রাণহানিঃ পর্তুগিজদের দাবি তাদের ১০০ সৈন্য এবং ৮৯৫ বিদ্রোহী নিহত

অ্যাঙ্গোলাঃ যুদ্ধ শুরু ১৯৬১ সালে

সৈন্যসংখ্যাঃ পর্তুগিজ বাহিনী ৫৭,০০০-৬০,০০০, বিদ্রোহীদের ১৪,০০০

মোজাম্বিকঃ যুদ্ধ শুরু ১৯৬৪ সালে

সৈন্যসংখ্যাঃ পর্তুগিজ বাহিনী ৪৩,০০০, বিদ্রোহী ৫,০০০

জুলাই-ডিসেম্বর ১৯৭০ পর্যন্ত প্রাণহানিঃ পর্তুগিজদের দাবি ১৩২ জন সৈন্য এবং ৬৫১ জন বিদ্রোহী নিহত

এই তিন এলাকার যুদ্ধের সর্বমোট প্রাণহানিঃ পর্তুগিজদের দাবি এক বছরে ৫০০-রও কম সৈন্য নিহত হয়েছে, বিদ্রোহীদের কয়েক হাজার