গভর্নর মােনম খানকে হত্যা
আইয়ুব আমলের কুখ্যাত গভর্নর মােনেম খানকে হত্যা করা হয় ১৩ অক্টোবর। তার বনানীস্থ বাসভবনে। মােনেম খান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী আমজাদ হােসেন, এমপি শামসুল আল আমিন, মােনেম খানের জামাতা জাহাঙ্গীর মাে, আদেল ড্রয়িংরুমে বসে মােনেম খানের সাথে আলাপ করছিলেন। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র। হাতে মােজাম্মেল হক নামের ১জন গেরিলা সেখানে উপস্থিত হন এবং মােনেম খানকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। গুলিবিদ্ধ হয়ে মােনেম খান পরদিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
স্টেট ব্যাংকে অতর্কিত আক্রমণ
আগস্ট মাসের প্রথম দিকে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের নব নিযুক্ত গভর্নর এম ইউ দুররানী ব্যাংক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলাের প্রধান কার্যনির্বাহীদের ৪ দিনব্যাপী এক সম্মেলন উদ্ববাধন করতে ঢাকা এসেছিলেন। এ সময় স্টেট ব্যাংকে এক প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। এ অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন সিরাজ, মুজিব, আজাহার, হাবীব ও খালেদ। স্টেট ব্যাংকের ১জন পিয়নের সাহায্যে সমস্ত এলাকাটা জরিপ করা হয় । সমগ্র স্টেট ব্যাংক এলাকায় পুলিশের কড়া পাহারা ছিল। ব্যাংকের উত্তর গেটে পুলিশের বাংকারের পাশে সিরাজ ও আজাহার প্লেটার চার্জ বসান। পুলিশ সন্দেহবশত এগিয়ে আসলে। সিরাজ ও আজাহার পিছনে এসে বসে পড়েন। মুজিব দ্রুতবেগে ভিতরে গিয়ে চার্জটিতে ১টি জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে পালিয়ে যান। পুলিশ ভয় পেয়ে ব্যাংকারের ভিতরে আশ্রয় নেয়, একটু পরই প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। ২০ অক্টোবর দ্বিতীয় বার বিস্ফোরণ ঘটে। সাদেক, জসীম ও নজমুল এ অপারেশনে অংশ নেন। ব্যাংকের ৬ তলায় পাকিস্তানি বাহিনীর ১টি কমান্ডাে গ্রুপ অবস্থান করছিল। ১টি ব্রিফকেসে পিইকে বিস্ফোরক, সেফটি ফিউজ ও ১টি গ্রেনেড নিয়ে সাদেক ও জসীম স্টেট ব্যাংকের সামনে ১জন কর্মচারীকে হস্তান্তর করেন। ব্যাংক কর্মচারী ব্রিফকেসটি ভিতরে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে ঠিক করে সেফটি ফিউজে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বেরিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পরই প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এবং কয়েকজন কমান্ডাে গুরুতর আহত হয়।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – তৃতীয় খন্ড