You dont have javascript enabled! Please enable it! নরসিংদী জেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস - সংগ্রামের নোটবুক
নরসিংদী জেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
আয়তন: ১১৪০.৭৬ বর্গকিলােমিটার। উত্তরে কিশােরগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কিশােরগঞ্জ জেলা, • পশ্চিমে গাজীপুর জেলা।  প্রধান নদী: মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, হাড়িধােয়া, পাহাড়িয়া ও কলাগাছিয়া। এ জেলার উত্তরাংশে লালমাটির উঁচু পাহাড় রয়েছে। জেলা শহর ৯টি ওয়ার্ড ও ৩৩টি মহল্লা নিয়ে গঠিত। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলােমিটার ২,৮৪৭ জন। শিক্ষার হার ৫১.৬%। ডাকবাংলাে ১টি। প্রশাসন: নরসিংদীকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা ৩টি, উপজেলা ৬টি তথা: নরসিংদী সদর, পলাশ, মনােহরদী, বেলাবাে, রায়পুরা ও শিবপুর, ইউনিয়ন ৬৯টি, মৌজা ৬৫২টি, গ্রাম ১,০৬০টি, ওয়ার্ড ২৭টি, মহল্লা ৫৫টি।  প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নতাত্তিক সম্পদ: উয়ারী বটেশ্বর গ্রামে প্রাপ্ত রৌপ্যমুদ্রা (আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী), উয়ারী গ্রামে প্রাপ্ত অনুকৃত স্বর্ণমুদ্রা (আনুমানিক ৮ম শতাব্দী), নরসিংদী শহরে প্রাপ্ত সেন আমলের প্রস্তরমূর্তি, আলগী গ্রামে প্রাপ্ত গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রৌপ্যমুদ্রা, পাচদোনায় প্রাপ্ত সুলতানি আমলের রৌপ্যমুদ্রা, কুমরাদী গ্রামের সুলতানি মসজিদ ও শাহ মনসুরের মাজার (আনুমানিক পঞ্চদশ শতাব্দী), বিবি জয়নবের মসজিদ (১৭১৯), আশরাফপুর গ্রামে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ (১৫২৪), পারুলিয়া মসজিদ (১৭১৬), রঘুনাথ মন্দির (আনুমানিক সপ্তদশ শতাব্দী)। ঐতিহাসিক ঘটনাবলি: ১৯৬৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর হাতিরদিয়া বাজারে (মনােহরদী) পিকেটিং ও মিছিলে পুলিশের এলােপাতাড়ি গুলিতে তিনজন লােক শহিদ হন এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন: স্মৃতিস্তম্ভ ১টি, গণকবর ৪টি এবং বধ্যভূমি ১টি। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব: ভাই গিরিশচন্দ্র সেন (পবিত্র কোরান শরিফের বাংলা অনুবাদক), শহিদ আসাদ (ছাত্রনেতা), বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান (মুক্তিযােদ্ধা), কে জি গুপ্ত (শিক্ষাবিদ)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মসজিদ ১,৬৭১টি, মাজার ১০টি, মন্দির ও মঠ ৫৯টি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ১টি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ১টি, প্রাথমিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ১টি, সরকারি কলেজ ৪টি, বেসরকারি কলেজ ১৮টি, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮টি, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫৬টি, নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০টি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৫৫টি, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৩টি, যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ১টি, কারিগরি কলেজ ২টি, মাদ্রাসা ১২২৯টি। সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান: ক্লাব ৫১টি, পাবলিক লাইব্রেরি ১৬টি, জাদুঘর ১টি, সিনেমা হল ১৬টি, দর্শনীয় স্থান ৩টি, কমিউনিটি সেন্টার ৫৪টি, সমবায় সমিতি ১৫০টি, বার কাউন্সিল ১টি, শিল্পকলা একাডেমী ১টি, সার্কিট হাউজ ১টি।  প্রধান ফলমূল: আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, আনারস, পেয়ারা, জলপাই ও লিচু। মৎস্য, গবাদি পশু, হাঁস-মুরগির খামার: গবাদি পশু ৮০টি, পশু সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র ৩টি, কৃত্রিম প্রজনন উপকেন্দ্র ৬টি, হাঁস-মুরগির খামার ১২৭টি এবং হ্যাচারি ১২৯টি। | যােগাযােগঃ বিশেষায়িত পাকা রাস্তা ৯৬৭ কিলােমিটার, আধা পাকা রাস্তা ৩৭২ কিলােমিটার, রেলপথ ৫২ কিলােমিটার, নদীপথ ১০৮ নটিক্যাল মাইল, নদীবন্দর ১টি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্ত প্রায় সনাতন বাহনঃ পাক্ষি, গরু ও ঘােড়ার গাড়ি। শিল্প ও কলকারখানা: টেক্সটাইল মিল ২টি, পাটকল ১০টি, সার কারখানা ২টি, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ১টি, সাইজিং মিল ৬০টি, কাপড় ক্যালেন্ডারিং মিল ৫টি, কাপড় প্রিন্টিং মিল ১২০টি, কাপড় প্রসেসিং মিল ১২০টি।। প্রধান রপ্তানি দ্রব্য: পাট, ধান, বাঁশ, কাঠাল, পেয়ারা, শাকসবজি, লুঙ্গি, শাড়ি, সার। স্বাস্থ্যকেন্দ্র: জেলা সদর হাসপাতাল ১টি, ডায়াবেটিক হাসপাতাল ১টি, থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৬টি, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র ১৭টি, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫৪টি, চক্ষু হাসপাতাল ১টি এবং নার্সিং হােম/ক্লিনিক ৭টি।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – তৃতীয় খন্ড