সিরাজগঞ্জ থেকে ৮-১০ কিলােমিটার দক্ষিণে বেলকুচি থানার রাজাপুর ইউনিয়নের ছােটো একটি গ্রাম সমেশপুর। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে সমেশপুরের আশপাশে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে মুক্তিযােদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়।
পটভূমি
পাকিস্তানি বাহিনী মুক্তিযােদ্ধাদের প্রতিরক্ষা অবস্থানের উপর আক্রমণ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। জায়গার বর্ণনা ও ভূমি পরিচিতি ইছামতি নদীর পূর্বে যমুনা নদীর রক্ষাকারী শহর বাঁধের আড়ালে মুক্তিযােদ্ধারা অবস্থান নেন। ইছামতি নদী ও শহর রক্ষাকারী বাঁধ নিজস্ব বাহিনীর প্রতিরক্ষা ভিত্তিকে জোরদার করে তােলে।
যুদ্ধের সংগঠন
যুদ্ধের সংগঠন নিম্নরূপ: ক, পাকিস্তানি বাহিনী: ২ প্লাটুন ( ৬০-৬৫জন), অস্ত্র কতটি ছিল তা জানা। যায়নি। খ, মুক্তিবাহিনী: ১১ কোম্পানি, অস্ত্র (২টি ২ ইঞ্চি মর্টার, ১৮টি এলএমজি, ১৭টি এসএমজি (প্রায়), ২০টি এসএমকে, ১৩৩টি .৩০৩ রাইফেল)। শত্রুপক্ষের অবস্থান শত্রুপক্ষ পশ্চিম দিকের প্রায় ৪০০-৫০০ গজ দূরত্বে অবস্থান নিয়ে মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। যুদ্ধের বর্ণনা টি এম শামিম পান্নার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর এ গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে মুক্তিযােদ্ধাদের মুখােমুখি যুদ্ধ হয়। পাকিস্তানি সৈন্যদের যাত্রার সম্ভাবনা দেখে মুক্তিযােদ্ধারা ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর সমেশপুরে সকাল ৯টার। দিকে অবস্থান নিয়ে আত্মগােপন করে থাকেন। আর ঐ দিন সিরাজগঞ্জ সদর এবং কামারখন্দ থেকে প্রায় ২ প্লাটুন জনবল অর্থাৎ ৬০-৬৫জন করে ২টি সেনা। দল সমেশপুরের উদ্দেশ্যে অ্যাডভান্স করে। বেলা ১১টা-সাড়ে ১১টার মধ্যে শক্রর সাথে মুক্তিযােদ্ধাদের মুখােমুখি সংঘর্ষ হয় এবং প্রায় ৩ ঘণ্টা যাবৎ এ যুদ্ধ চলে।
যুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযােদ্ধা হাবিবুর রহমান (কাদের সিদ্দিকী কর্তৃক পাঠানাে ১৫০জন সৈন্যের ১টি টিমের অধিনায়ক) মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন। তখন সময় দুপুর ২টা। তিনি ১টি প্লাটুন অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর মুক্তিবাহিনী খবর পায় যে, শাহজাদপুর থেকে পাকিস্তানি সেনাদের সাহায্য করার জন্য সৈন্য আসছে। তখন মুক্তিযােদ্ধারা ধীরে ধীরে পিছু হটতে শুরু করেন। অধিনায়ক টি এম শামিম পান্না বীরত্বের সাথে যুদ্ধ পরিচালনা করেন এবং জীবিত অবস্থায় ফিরে আসেন। তার সাথে ছিলেন আলী ইমাম তৌহিদ, সৈনিক আমজাদ, মাে. শামসুল আলমসহ আরও নাম নাজানা অনেকেই। শত্রু হতাহতের পরিমাণ জানা যায় নি। সমেশপুরের যমুনার বাঁধে এর পরও শক্ররা ট্রাক-লরিতে এসে অভিযান চালিয়েছে এবং মুক্তিযােদ্ধাদের সাথে ছােটোখাটো সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এতে মুক্তিযােদ্ধারা আহত হয়েছেন। কিন্তু কেউ শহিদ হন নি। বিশ্লেষণ/বিজয়ের কারণ ও পর্যালােচনা ক, এ যুদ্ধে যদিও জয়-পরাজয় নিশ্চিত হয় নি, তবে মুক্তিযােদ্ধারা বীরদর্পে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে লড়াই করেছেন, যা পরবর্তী সময়। অন্যান্য যুদ্ধক্ষেত্রে মুক্তিযােদ্ধাদের সাহস জুগিয়েছে। শত্রুর পরাজয় ও অবস্থান পুরােপুরি নিশ্চিত না হয়ে শত্রুর গতিবিধি।
পরীক্ষা করতে দাড়িয়ে যান হাবিবুর রহমান, যা মােটেই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় নয়। শিক্ষণীয় বিষয় ক. পরিস্থিতি যাই হােক না কেন, যতক্ষণ সামর্থ্য আছে, ততক্ষণ শত্রুর মােকাবিলা করা উচিত। খ, শক্রর গতিবিধি সম্পর্কে সর্বত্র সজাগ থাকা উচিত। উপসংহার মাথা ঠান্ডা রেখে বীরদর্পে যে-কোনাে পরিস্থিতির মােকাবিলা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এ যুদ্ধে এর যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। এ যুদ্ধে রণকৌশল এবং পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছুটা ঘাটতি পরিলক্ষিত হওয়ার কারণে যুদ্ধের জয়-পরাজয় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবু এ ধরনের যুদ্ধে মুক্তিযােদ্ধারা সাহসিকতার সাথে লড়াই করেছেন এবং পরবর্তী সময় অন্যান্য যুদ্ধে তাদের যথেষ্ট প্রেরণা জুগিয়েছে।
শৈলাবাড়ির যুদ্ধ
ভূমিকা
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছােনগাছা ইউনিয়নের একটি গ্রাম শৈলাবাড়ি। এটি সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকা থেকে মাত্র ৪-৫ কিলােমিটার দূরে। শৈলাবাড়ি হাই স্কুলসংলগ্ন ও সারদা বাঁধের ধারে একটি বিরাট শিমুল গাছের নিচেই পাকিস্তানি বাহিনীর মজবুত ক্যাম্প ছিল । ঐ ক্যাম্পের উত্তরে ছিল বয়রা স্টিমার ঘাট। সেখানেও একটা ছােটো ক্যাম্প ছিল। সে সময় রেলপথই ছিল ঢাকার সাথে সিরাজগঞ্জের যােগাযােগের প্রধান ব্যবস্থা। রেলওয়ে ফেরি এ স্টিমার ঘাটের মাধ্যমে বাহাদুরাবাদের সাথে যােগাযােগ রক্ষা করতাে। এ কারণে শৈলাবাড়ি এলাকায় স্টিমার ঘাটটি রক্ষা করার জন্য পাকিস্তানি সেনারা স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। পটভূমি ১৯৭১ সালে ৬ ডিসেম্বর ১ মিত্রবাহিনীর বােমাবর্ষণের পর পাকিস্তানি বাহিনী প্রায় ১৫০জনের ১টি দল শৈলাবাড়ি হাই স্কুলে অবস্থান গ্রহণ করে। শত্রুবাহিনীকে শহরের অদূরে বিচ্ছিন্ন অবস্থানে পেয়ে মুক্তিবাহিনী তাদের ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পনা নেয়। জায়গার বর্ণনা ও ভূমির রূপ সিরাজগঞ্জ শহর থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ৬ কিলােমিটার দূরে শৈলাবাড়ি গ্রামটি অবস্থিত। যমুনা নদীর তীরে বেড়ি বাঁধ ঘেঁষে গ্রামটির অবস্থান। বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার মতােই এ গ্রামটি তিন দিক জুড়ে ধানক্ষেত। শুধুমাত্র পূর্ব দিকে যমুনা নদী। গ্রামটি ধানক্ষেত থেকে ৪-৫ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। ধানক্ষেত থাকার কারণে সহজে আড়াল নিয়ে গ্রামের বাড়ির কাছাকাছি যাওয়া সহজ। গ্রামের পায়ে চলা পথগুলাে পাশের গ্রামের সাথে যােগাযােগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। বেড়ি বাঁধের মাধ্যমে শহরের সাথে আছে সহজ যােগাযােগ। বর্তমানে জায়গাটি যমুনা নদীগর্ভে বিলীন।
যুদ্ধের সংগঠন
যুদ্ধের সংগঠন নিম্নরূপ: ক. পাকিস্তানি বাহিনী: কোম্পানি (১৫০জন, ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট), অস্ত্র (২টি ২ ইঞ্চি মর্টার, ২০টি জিএফ রাইফেল, ৩০টি এলএমজি, ২০টি এসএমজি, ৯৮টি চাইনিজ রাইফেল)। মুক্তিবাহিনী: ৫০০জন, অস্ত্র (১টি আরএল, ১২টি এসএমসি, ৭টি। এলএমজি, ৩০০টি .৩০৩ রাইফেল)। শত্রুপক্ষের অবস্থান। শৈলাবাড়ি হাই স্কুলে চতুর্মুখী প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণ করে। স্কুলের ছাদের উপর এলএমজি ও জিএফ রাইফেল স্থাপন করে। শত্রুর বিস্তারিত অবস্থান নকশায় দেখানাে হয়েছে। যুদ্ধের বর্ণনা ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর রৌমারী ক্যাম্পে মুক্তিবাহিনী তাদের নিজ মহকুমা পাকিস্তানি বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত করার জন্য এক কঠিন শপথ নিয়ে নদীপথে সিরাজগঞ্জ যাত্রা করে। ৮ ডিসেম্বর কাজীপুর থানায় তারাকান্দি নদীর ঘাটে পৌছে বাংলাবাজারে মুক্তিযােদ্ধা নম্বর ০৩১২০১০০২৮ আমির হােসেন ভুলুর (সিরাজগঞ্জ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি) দেশের বাড়িতে রাত যাপন করেন, সঙ্গে ছিল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৫০জনের বাহিনী। সংবাদ এলাে, ২-১ দিনের মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনী সিরাজগঞ্জ কওমি জুট মিল, সিরাজগঞ্জ ওয়্যারলেস টাওয়ার। ও ট্রেজারি ব্যাংক ধ্বংস করবে। মুক্তিবাহিনী পরদিন অর্থাৎ ৯ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের শৈলাবাড়ির অদূরে ছােনগাছা মাদ্রাসায় অবস্থান নেয়। স্থানীয় মুক্তিবাহিনীর ইউনিট, মুজিব বাহিনী ও রহমতগঞ্জের স্থানীয় মুক্তিযােদ্ধা দল, যার অধিনায়ক ছিলেন ইসমাইল হােসেন, রৌমারী থেকে আসা অন্য মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে একত্র হয়ে আমির হােসেন ভুলুর নেতৃত্বে যৌথ অভিযান। পরিচালনা করার লক্ষ্য স্থির হয়।
৯ ডিসেম্বর মুক্তিযােদ্ধা ৩জন সিরাজগঞ্জ শহরের পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থান রেকি করে আসে। তার আলােকে ছােনগাছা মাদ্রাসায় সব মুক্তিবাহিনীর গ্রুপ লিডারদের নিয়ে এক পরিকল্পনা সভা হয়। সভায় সিরাজগঞ্জ মুক্ত করার জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর উপর আঘাত হানার পরিকল্পনা করা হয়। এরপর ১১ ডিসেম্বর সকালের নাস্তা শেষ করে ছােনগাছা মাদ্রাসার পূর্ব-দক্ষিণ দিকে শৈলাবাড়ি পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পের অদূরে ছােটো খালের কাছে মুক্তিবাহিনী প্রাথমিক অবস্থান গ্রহণ করে। এর পর তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে যান, মাে. ইসমাইল হােসেনের। নেতৃত্বে ১টি গ্রুপ খােকশাবাড়ি হাসপাতালে অবস্থান নেন। পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পের উত্তরে বয়রা হাটখােলা এলাকায় মাে, ইসহাকের নেতৃত্বে আরেকটি গ্রুপ অবস্থান নেয়। এরপর অধিনায়ক আমির হােসেন ভুলুর নেতৃত্বে দুপুর ২টার সময় প্রথম গ্রেনেড নিক্ষেপের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু হয়। মুক্তিবাহিনীর হাতে ছিল ৩০৩ রাইফেল, গ্রেনেড ও এসএলআর পক্ষান্তরে পাকিস্তানি বাহিনী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ছিল। শৈলাবাড়ির যুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁরা হলেন: ১. মাে. জুরান শেখ (এলএমজি ম্যান) ২. শেখ আলাউদ্দিন (আরএল ম্যান) ৩. ওসমান শেখ, ওসমান আলী
এ দিন শেষ রাতের দিকে গােলাবারুদ শেষ হতে থাকলে যুদ্ধের অধিনায়ক আমির হােসেন ভুলু, বুল হােসেন চাকলাদার নামে এক মুক্তিযােদ্ধাকে তেকানির চর থেকে গােলাবারুদ সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দেন। ১২ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় গােলাবারুদ সংগ্রহের পর আবার তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। শত্রুপক্ষের একটি বাংকার মুক্তিবাহিনী দখল করে নেয় এবং ১২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে পাকিস্তানি বাহিনীর সৈন্যরা মুক্তিযােদ্ধাদের সাথে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় এবং রানী গ্রামের কোবদাস পাড়ায় তাদের স্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিলে মুক্তিবাহিনী শৈলাবাড়ি স্কুল দখল করে নেয়। এখানে উল্লেখ্য, ১১ ডিসেম্বর রাতের এ যুদ্ধে সােহরাব হােসেনসহ ২জন। মুক্তিযােদ্ধা শহিদ হন এবং ১৩ ডিসেম্বর বিকালবেলার যুদ্ধে শহিদ হন তারা। হলেন:
১. আহসান (মেছড়া ইউনিয়নের খাড়য়া গ্রাম)
২. আহসান হাবিব
৩. তােজামেল
৪. মকবুল হােসেন কালু (গ্রাম: কুড়ালিয়া)
৫. আ. সামাদ (গ্রাম: রঘুর গাতি)।
৬. সুজাবত
৭. সফর
৮. রাজ্জাক।
১৩ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর পিছু নিয়ে কোবদাস পাড়ায় অগ্রসর হয় এবং সেখানে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর উপর আঘাত হানে। মুক্তিবাহিনীর প্রবল চাপের মুখে টিকতে না পেরে পাকিস্তানি বাহিনী সিরাজগঞ্জ ত্যাগ করার চেষ্টা করে এবং ১৪ তারিখ সকালে তারা ট্রেনযােগে সিরাজগঞ্জ থেকে পালিয়ে যায়। যাওয়ার পূর্বে তারা শহরের মুজিব সড়কে ট্রেজারি ব্যাংকের কাছে অবস্থিত ওয়্যারলেস টাওয়ার ও কওমি জুটমিলের কিছু অংশ ধ্বংস করে দিয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, পাকিস্তানি বাহিনী রেলপথে যাওয়ার পথে মুক্তিবাহিনীর এক অধিনায়ক আলাউদ্দীনের গ্রুপ দ্বারা আবার আক্রান্ত হয় কালিয়া হরিপুরে। সেখানে মুক্তিবাহিনীর টি এম শামিম পান্নার নেতৃত্বে একটি রেলসেতু ধ্বংস করা হয়। এর পর উপায়ান্তর না পেয়ে পাকিস্তানি বাহিনী। ট্রাকযােগে সিরাজগঞ্জ ত্যাগ করে।
এ সময় মাে. ইসহাক আলীর নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনী আবার আক্রান্ত হয় এবং ৪-৫জন পাকিস্তানি সৈন্য মারা যায়। মুক্তিবাহিনীর আজমল নামের এক যােদ্ধা আহত হন। এরপর মুক্তিবাহিনী বিজয় ধ্বনি করে এবং সিরাজগঞ্জ কলেজের শহিদ মিনারে সব মুক্তিযােদ্ধা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলনের সময় সাধারণ মানুষের সাথে যারা ছিলেন তাঁরা হলেন:
১. আমির হােসেন ভুলু ২. ইসমাইল হােসেন ৩. জহুরুল ইসলাম। ৪. মাে. ইসহাক আলী ৫. শেখ আলাউদ্দীন ৬, মাে. আমিনুল ইসলাম ৭. ইসমাইল হােসেন। ৮, সৈনিক আ, আজিজ। ৯, মাে. গোলাম হায়দার ১০. স ম আক্তার হােসেন ১১. মাে. ফজলুল মতিন মুক্তা ১২. টি এম শামিম পান্না ১৩. শাহজাহান আলী (তারা)।
সশস্ত্র বাহিনীর অবদান সৈনিক মাে. আব্দুল আজিজ, সৈনিক মাে. আলী (বকুল) ও মাে. শহিদুল আলম (খােকন) এ যুদ্ধে বিভিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করেন। সৈনিক পদবির যােদ্ধা। হলেও তারা এ যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন এবং শত্রুপক্ষের যথেষ্ট ক্ষতি করেন। বিশ্লেষণ এ যুদ্ধে যদিও মুক্তিযােদ্ধারা শত্রুপক্ষকে সম্মুখযুদ্ধে পরাস্ত করতে সক্ষম হন নি, কিন্তু তারা পাকিস্তানি বাহিনীর যথেষ্ট ক্ষতি করেন। যার ফলে ১২ তারিখ সকালে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের অবস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এর মূল কারণ ছিল মুক্তিযােদ্ধাদের বিরামহীন আক্রমণ ও অসীম সাহসিকতা যার সাহায্যে নামমাত্র সামান্য কিছু ক্ষুদ্রাস্ত্র এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি পৃথিবী বিখ্যাত প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী মােকাবিলা করার মানসিকতা গড়ে তুলেন।
সবার সর্বাত্মক সহযােগিতা এ বিজয়কে সহজ থেকে সহজতর করেছিল। বাঙালি জাতির সহজ প্রবৃত্তি যে-কোনাে ডাকে এগিয়ে আসা আবারও প্রমাণ করে দেশের স্বার্থে সবাই যে-কোনাে স্বার্থ ত্যাগ করতে পারে।
শিক্ষণীয় বিষয়
ক, শত্রু যতই শক্তিশালী হােক না কেন, তাকে পরাস্ত করতে চাই কঠিন। মনােবল, সীমাহীন ধৈর্য এবং অসীম সাহসিকতা।
খ, জনগণের সহযােগিতা ছাড়া কোনাে যুদ্ধেই বিজয় অর্জন সম্ভব নয়। উপসংহার এ যুদ্ধে মুক্তিযােদ্ধারা সৈনিক পদবির হলেও তারা অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। মুক্তিযােদ্ধাদের বিরামহীন আক্রমণ এবং অসীম সাহসিকতা এ যুদ্ধে বিজয়ের অন্যতম কারণ প্রাণের বাংলার সম্মান অক্ষুন্ন রাখার লক্ষ্যে বাঙালি। জাতির সর্বাত্মক সহযােগিতা এ যুদ্ধে বিজয়কে সহজতর করেছে কঠিন মনােবল, সীমাহীন ধৈর্য এবং অসীম সাহসিকতা পারে যেকোন কঠিন যুদ্ধকে সহজ থেকে সহজতর করতে।
কুইজের নিয়মঃ আপনার উত্তর, নাম আর যে মোবাইল নাম্বারে রিচার্জ পাঠানো হবে সেই নাম্বারটি এই পোস্টের কমেন্টে দেবেন। প্রিপেইড বা পোস্ট পেইড হলেও উল্লেখ করবেন। প্রথম ১০ জনকে মোবাইলে ২০ টাকা রিচার্জ পাঠানো হবে। আমাদের আর্থিক সঞ্চয় কম থাকায় এবং ছাত্ররা যাতে বেশী মাত্রায় কুইজের দিকে ঝুঁকে না যায় সেকারণে টাকার পরিমাণ কম রাখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ার প্রতি আগ্রহী করার উদ্যেশ্যে পোস্টের সাথে কুইজ রাখা হয়েছে। প্রথমে সকল কমেন্ট গোপন রাখা হবে যাতে একজনেরটা দেখে আরেকজন কমেন্ট না করে। কুইজের শেষে কমেন্ট উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। )