You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.15 | কাশীপুরের যুদ্ধ - সংগ্রামের নোটবুক
কাশীপুরের যুদ্ধ
ভৌগােলিক অবস্থান ও গুরুত্ব কাশীপুর গ্রামটি যশাের শহর হতে আনুমানিক ২৫ কিলােমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। অপর পারেই রয়েছে ভারতের বয়রা এলাকা, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক দিনগুলােয় একটি সাব-সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল। কাশীপুর এলাকা বাংলাদেশের যে-কোনাে এলাকার মতাে মােটামুটি সমতল। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের আনুমানিক ৩ কিলােমিটার সন্নিকটে অবস্থিত এ এলাকার উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে কপােতাক্ষ নদ প্রবাহিত হচ্ছে, যা যে-কোনাে সৈন্যদলকে বড়াে মাপের প্রাকৃতিক বাধার সহায়তা প্রদান করে। এ এলাকার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে খােলা জায়গা রয়েছে, যেখানে আনুমানিক ৫০০ গজ পর্যন্ত যে-কোনাে ধরনের চলাচল পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। তবে পশ্চিম ও উত্তর এলাকায় ঘন গাছ ও জনবসতির জন্য পর্যবেক্ষণের সীমা অত্যন্ত সীমিত। এ এলাকার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু কাঁচা ও পাকা রাস্তা পূর্ব-পশ্চিমে ও উত্তর-দক্ষিণে বিন্যস্ত। রাস্তাগুলাে ১০-১৫ ফুট চওড়া এবং ভূমি থেকে ৫-৬ ফুট উঁচু বিধায় পর্যবেক্ষণ ও ফায়ার থেকে আড় প্রদান করে। ভারতের বয়রা এলাকা থেকে ছুটিপুর-মােহাম্মদপুর অক্ষ দিয়ে যশাের পৌছানাের জন্য কাশীপুর এলাকার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করা প্রয়ােজন বিধায় বর্ণিত অক্ষ বরাবর শত্রুর চলাচলকে প্রতিহত করার জন্য কাশীপুর এলাকায় প্রতিরক্ষা গ্রহণ কৌশলগত দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এলাকার গুরুত্ব কাশীপুর সংলগ্ন সীমান্তবর্তী এলাকা এবং কাশীপুর বিওপি মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকায় পাকিস্তানি বাহিনী কাশীপুর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় গ্রামবাসীর উপর শুরু থেকেই অমানুষিক অত্যাচার চালাতাে। এমতাবস্থায় সীমান্তের ওপারে অবস্থিত মুক্তিবাহিনীর বয়রা সাব-সেক্টরের জন্য কাশীপুরের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারটি কৌশলগত দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তা ছাড়া এ এলাকায় নিজেদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে মুক্তিবাহিনীকে বিন্দু পরিমাণ সুবিধা প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত করা যাবে, এ প্রেক্ষাপট থেকে কাশীপুর এলাকাটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
যুদ্ধের সংগঠন ও অবস্থান
মুক্তিবাহিনী:
যশাের, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও খুলনা জেলার দৌলতপুর সাতক্ষীরা সড়ক পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে ১৯৭১ সালে গঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টর। এ সেক্টরে ছিল নিয়মিত বাহিনীর ৩,৩৩১জন যােদ্ধা এবং গণবাহিনীর ৮ হাজার যােদ্ধা। যুদ্ধের শুরু থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত এ সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী। সেক্টর সদর দপ্তর বেনাপােলে থাকলেও কার্যত সদর। দপ্তরের একটি বিরাট অংশ ভারতের কল্যাণী শহরে অবস্থিত ছিল। ৮ নম্বর সেক্টরের বয়রা সাব-সেক্টরে ক্যাপটেন খন্দকার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে ‘ডি’ কোম্পানিকে মােতায়েন করা হয়। এ কোম্পানির অধীনে ৪০০ মুক্তিযােদ্ধা ছিলেন। কাশীপুর ও তৎসংলগ্ন বিওপি’র। বিস্তৃত এলাকা এ সাব-সেক্টরের আওতাধীন ছিল।
পাকিস্তানি বাহিনী:
পাকিস্তানি বাহিনীর ৫৭ পদাতিক ব্রিগেডের ২৪ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্ট চৌগাছা এলাকার দায়িত্বে নিয়ােজিত ছিল। এদের প্রধান ঘাঁটি ছিল চৌগাছা, মেহেরপুর, ছুটিপুর ও মাসালিয়া। ছুটিপুর বাজার এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনী পশ্চিম দিকে মুখ করে প্রতিরক্ষা অবস্থান নিয়েছিল এবং এর মাধ্যমে তারা বয়রা-ছুটিপুর মােহাম্মদপুর অক্ষের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করেছিল।
যুদ্ধ পরিকল্পনা 
পাকিস্তানি বাহিনী:
পাকিস্তানি বাহিনী প্রাথমিকভাবে মুক্তিবাহিনীর কাছে হেনস্তা হয়, পরে বিষয়টি তারা ভুলতে না পেরে কোনাে বিস্তারিত ও সামগ্রিক পরিকল্পনা ছাড়াই কাশীপুর এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য বিচ্ছিন্নভাবে এবং স্থানীয় পর্যায়ে এ যুদ্ধের সূচনা করে।
মুক্তিবাহিনী:
পাকিস্তান বাহিনীকে হেনস্তা করার পর তাদের কাছ থেকে প্রতিশােধমূলক আক্রমণের ব্যাপারে মােটামুটি নিশ্চিত ছিল মুক্তিবাহিনী। মানসিকভাবেও ছিল প্রস্তুত পরবর্তী সময় পাকিস্তানি বাহিনীর অগ্রাভিযানের সংবাদ পেয়ে তারা অল্প সময়ের ব্যবধানে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এ অগ্রাভিযান বা আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য ত্বরিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেয়। যুদ্ধপূর্ব সংঘর্ষ সংঘর্ষের প্রারম্ভে পাকিস্তানি বাহিনীর দোসররা নিরীহ গ্রামবাসীর উপর অত্যাচার চালাতাে। সমুচিত জবাব দেওয়ার প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করে ১৯৭১ সালের ১৫ মে ক্যাপটেন নাজমুল হুদা কাশীপুর বিওপি এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের টহল দলের উপর আক্রমণ চালিয়ে ৬জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা এবং ১টি জিপ ধ্বংস করে। তা ছাড়া ১টি এলএমজি, ৮টি রাইফেল, ১টি মানচিত্র এবং বেশ কিছু গােলাবারুদ হস্তগত করে। এর কিছুদিন পর প্রতিশােধ নেয়ার লক্ষ্যে পাকিস্তানি বাহিনী ছুটিপুর গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে গ্রামবাসীদের উপর নির্মম অত্যাচার চালাতে থাকে। ক্যাপটেন নাজমুল হুদা এ খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ইপিআর বাহিনীর ২টি প্লাটুন নিয়ে ছুটিপুর গ্রাম ঘিরে ফেলেন এবং তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলেন। কিন্তু পাকিস্তানি সেনারা এ কথা অগ্রাহ্য করে অনবরত গুলি চালাতে থাকে। তখন ক্যাপটেন হুদা পালটা গুলি চালানাের নির্দেশ দেন এবং বেশ কিছুক্ষণ সংঘর্ষের পর পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটে যায়। এ যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর ১১জন নিহত এবং ৪জন মুক্তিবাহিনীর হাতে বন্দি হয়। তা ছাড়া মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি সেনাদের ১টি জিপসহ বেশ কিছু গােলাবারুদও উদ্ধার করে।
যুদ্ধের বিবরণ
ছুটিপুর গ্রামের লজ্জাজনক পরাজয় পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিশােধের নেশায় উন্মাদ করে তােলে। তাই ১৯৭১ সালের ২৭ মে ২৪ ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের ২টি কোম্পানি ছুটিপুর থেকে কাশীপুর আক্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তখন দুপুর প্রায় ১২টা। এ সময় বয়রা ক্যাম্পে অবস্থানকারী ‘ডি’ কোম্পানির মুক্তিযােদ্ধারা দুপুরের খাবার খাচ্ছিল। হঠাৎ করে কাশীপুর গ্রামের মুক্তিযােদ্ধা মােয়াক্কেল মােল্লা দৌড়ে বয়রা ক্যাম্পে জানায় যে, আনুমানিক ২০০জন পাকিস্তানি সেনা কাশীপুর এলাকা আক্রমণের উদ্দেশ্যে ছুটিপুর-বেলতা-কাশীপুর রাস্তা ধরে এগিয়ে আসছে। সংবাদ পেয়েই কোম্পানি অধিনায়ক ক্যাপটেন নাজমুল হুদা সুবেদার মনিরুজ্জামানকে ১ প্লাটুন সৈন্য নিয়ে ত্বরিত পাকিস্তানি বাহিনীর অগ্রযাত্রা বন্ধের নির্দেশ দেন। ইতােমধ্যে পাকিস্তানি বাহিনী কাশীপুর-শার্শা সড়কের কাছাকাছি এগিয়ে আসায় সুবেদার মনিরুজ্জামান তার প্ল্যাটুন নিয়ে কাশীপুরশার্শা সড়ক ধরে Hasty Defence বা ত্বরিত প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণ করেন। পাকিস্তানি বাহিনীর অগ্রযাত্রা বাধার সম্মুখীন হয় এবং উভয় পক্ষে শুরু হয় প্রচণ্ড গােলাগুলি। কোম্পানি অধিনায়ক ক্যাপটেন হুদা যুদ্ধের তীব্রতা আঁচ করতে পেরে শত্রুকে কাশীপুর বিওপি’র পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী তিনি নিজে এবং ক্যাপটেন তৌফিক-ই- এলাহির নেতৃত্বে কিছু সৈন্য নিয়ে কাশীপুর বিওপি’র পশ্চিম দিক দিয়ে আক্রমণের জন্য অগ্রসর হন। ইতােমধ্যে সুবেদার মনিরুজ্জামানের প্লাটুন কাশীপুর প্রাইমারি স্কুলের পাশে সুবিধাজনক অবস্থান থেকে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর গুলি বর্ষণ করতে থাকে। মতিয়ার রহমান, খলিল, মােহাম্মদ আলী এবং আরও কিছু অসীম সাহসী মুক্তিযােদ্ধা পাকিস্তানি সেনাদের ধাওয়া করার জন্য অবস্থান ছেড়ে সামনে এগিয়ে যান। পাকিস্তানি বাহিনী পুনরায় আক্রমণের আশঙ্কা বুঝতে পেরে। পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত নেয়।
বেলা আনুমানিক ২টার দিকে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের প্রাথমিক অবস্থান কাশীপুর-শার্শা সড়কের পূর্ব পাশ ছেড়ে আধা কিলােমিটার দূরে বড়ােপুকুর এলাকায় রাস্তার উভয় পাশে অবস্থান নেয়। সুবেদার মনিরুজ্জামানের নির্ভীক পরিচালনায় মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করলে তারা বিশৃঙ্খলভাবে পশ্চাদপসরণ করতে শুরু করে। বিকাল ৩টার দিকে শত্রু বড়ােপুকুর হতে মাত্র দেড় কিলােমিটার পূর্বে চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় বিশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নেয়। পশ্চাদপসরণের সময় শক্র মুক্তিযােদ্ধাদের নির্ভুল লক্ষ্যভেদের সম্মুখীন হয়ে বিপুল সংখ্যায় হতাহত হয়। এ সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে হাতাহাতি যুদ্ধের সূচনা হয় এবং সুবেদার মনিরুজ্জামান বীরবিক্রমে ঝাপিয়ে পড়েন শত্রুর উপর। হঠাৎ জঙ্গলের ভিতর বটগাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা শত্ৰু মাত্র ৪-৫ গজ দূর থেকে সুবেদার মনিরুজ্জামানকে লক্ষ্য করে গুলি করে। তিনি সাথে সাথে লুটিয়ে পড়েন মাটিতে যুদ্ধের পর কাশীপুরেই সুবেদার মনিরুজ্জামানকে দাফন করা হয়। বর্তমানে ২জন বীর মুক্তিযােদ্ধা বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ নূর মােহাম্মদ শেখ এবং সুবেদার ল্যান্স নায়েক মনিরুজ্জামান পাশাপাশি চিরদ্রিায় শায়িত আছেন কাশীপুর-বয়রা সীমান্তে। 
সুবেদার মনিরুজ্জামানের আকস্মিক মৃত্যু মুক্তিযােদ্ধাদের হতভম্ব করে দিলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা দ্বিগুণ পরাক্রমে ঝাপিয়ে পড়ে শত্রুর উপর। ইতােমধ্যে কোম্পানি অধিনায়ক ক্যাপটেন নাজমুল হুদা পশ্চিম দিক দিয়ে শত্রুর উপর আক্রমণ করলে পাকিস্তানি বাহিনী দিশেহারা হয়ে ছুটিপুর পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ কিলােমিটার পথ ধরে পালাতে থাকে এবং পরবর্তী সময় তারা আর কোনাে প্রতিরােধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয় নি। পালানাের পথে তারা মৃতদেহ, অস্ত্র এবং যানবাহন রাস্তায় বিক্ষিপ্তভাবে ফেলে যায়। পরবর্তী সময় রণাঙ্গন থেকে ৬০জন পাকিস্তানি সেনার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে ৩জন। তা ছাড়া ১টি রকেট লঞ্চারসহ ৩০টি চাইনিজ রাইফেল পাকিস্তানি সেনাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। পাকিস্তানি বাহিনীর ফেলে যাওয়া ৪টি ট্রাক এ দিন মুক্তিবাহিনীর হাতে ধ্বংস হয়। মুক্তিবাহিনীর পক্ষে মাত্র ১জন শহিদ হন।
শিক্ষণীয় বিষয়
পরিকল্পিত যুদ্ধ:
কাশীপুরের যুদ্ধটি ছিল বিচক্ষণতার সাথে সংগঠিত পরিকল্পিত যুদ্ধ। পাকিস্তানি বাহিনী প্রতিশােধের নেশায় উন্মত্ত হয়ে আক্রমণ করলে তা সাহসিকতার সাথে প্রতিহত করতে সমর্থ হয় মুক্তিবাহিনী। তারা পরিকল্পিত ভাবে সফল পালটা আক্রমণ পরিচালনা করে।
 
গােপনীয়তা রক্ষা:
সুবেদার মনির অত্যন্ত সতর্কতার সাথে গােপনীয়তা রক্ষা করে তুরিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিতে সমর্থ হন, যার দ্বারা অতি সহজে পাকিস্তানি অগ্রযাত্রা বাধাপ্রাপ্ত হয়।
জনগণের সহায়তা:
স্থানীয় জনগণের আন্তরিক সহায়তা ছিল মুক্তিবাহিনীর অনেক বড়াে সম্পদ পাকিস্তানি বাহিনীর অমানবিক অত্যাচারের প্রতিবাদেই প্রাথমিকভাবে মুক্তিবাহিনী এ এলাকায় অপারেশন শুরু করে। ফলে জনগণের অভূতপূর্ব সহায়তা পায়। মুক্তিবাহিনী যা পাকিস্তানি বাহিনীর পয়াজয়কে আরও নিশ্চিত করে।
সঠিক কারণ:
নিজের দেশকে দখলদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত রাখা ছিল অত্যন্ত যুক্তিসংগত কারণ, যার ফলে মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের মনােবল সব সময় অতি উচ্চ ছিল। দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিতে তারা কখনােই কুণ্ঠাবােধ করেন নি। দৃঢ়সংকল্প ও উচ্চ মনােবল: মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়ের জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিল। স্থানীয় জনগণ থেকে প্রাপ্ত সর্বাত্মক সহায়তার জন্য মুক্তিযােদ্ধাদের সংকল্প সব সময়ই দৃঢ় থাকত আকস্মিকতা অর্জন; পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অগ্রাভিযানের খবর পেয়ে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ত্বরিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ফলে পাকিস্তানি বাহিনী জয়ের জন্য পর্যাপ্ত মাত্রায় আক্রমণ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয় এবং পিছু হটতে বাধ্য হয়।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – সপ্তম খন্ড