ফরিদপুর জেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ভৌগােলিক অবয়বের দিক থেকে বাংলাদেশের সাবেক ১৯টি জেলার মধ্যে ফরিদপুর জেলা নবম স্থানের অধিকারী এবং বাংলাদেশের মধ্যবর্তী স্থানের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ২,৬৯৪ বর্গমাইল জুড়ে অবস্থিত। যুগে যুগে প্রশাসনিক পরিবর্তনের সাথে সাথে এ জেলার ভৌগােলিক অবস্থানও পরিবর্তিত হয়েছে। বর্তমানে (২০০৮ সাল পর্যন্ত) এ পূর্ণাঙ্গ জেলাটি ৫টি জেলা ও ২৭টি থানায় রূপান্তর হয়েছে। ফরিদপুর জেলায় ৩০৮টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ২৪৭টি গ্রাম আছে। ১৯৮১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ফরিদপুরের জনসংখ্যা পুরুষ ২৪,১৪,০৭৯জন ও মহিলা ২৩,৪৯,৬৫৮জন, মােট ৪৭,৬৩,৭৩৭জন। তার মধ্যে ৩৮,৫১,৯৯৫জন (৮১%) মুসলমান এবং বাকি ৯,১১,৭৪২জন (১৯%) অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার পশ্চিমে কুষ্টিয়া জেলা এবং সাবেক যশাের জেলার ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল ও সাবেক খুলনা জেলার বাগেরহাট। পূর্বে সাবেক কুমিল্লা জেলার চাঁদপুর, উত্তরে সাবেক ঢাকা জেলার মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ এবং পাবনা জেলা। ফতেহাবাদ পরগনার নাম কখন কীভাবে ফরিদপুর হলাে তা নিয়ে বিতর্ক আছে ফরিদপুর নামের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৬৬৪ সালের ১৬ অক্টোবর নবাব শায়েস্তা খাঁর রাজমহল থেকে ঢাকা আগমনের বর্ণনায় কিন্তু গােলাম সাকলায়েন বলেন, ১৮৫০ সালে যশাের জেলার কিয়দংশ এবং ঢাকা জেলার কিয়দংশ নিয়ে এ নতুন জেলার নামকরণ করা হয় ফরিদপুর। ফরিদপুর জেলার নামকরণ করা হয় বিশিষ্ট সুফি সাধক শাহ ফরিদের নামানুসারে তবে একই নামে ২জন কামেল পিরের সাক্ষাৎ পাওয়া যায় প্রায় একই সময়ে। মূল নামে তারা একজন হলেন হজরত মওলানা শেখ ফরিদউদ্দীন আক্তার এবং অন্যজন হলেন হজরত মওলানা শেখ ফরিদউদ্দীন মাসুদ গঞ্জেশকর। শেখ ফরিদউদ্দীন মাসুদ নিজেও বলেছেন, তিনি। খেলাফত লাভের পূর্বে ৫৯৪-৬১২ হিজরি পর্যন্ত ১৯ বছর এবং খেলাফত লাভের পরে ৬১২-৩২ হিজরি পর্যন্ত ২১ বছর দেশ ভ্রমণ ও ইসলাম প্রচার করেছেন।
তিনি ভ্রমণের ১০ বছর দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায় ছিলেন। এ সময় ইসলাম প্রচারের কাজে ভ্রমণ করে বাংলাদেশে এসেছিলেন বলে মনে করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি ইসলাম প্রচার করেছেন। ফরিদপুর ছাড়া চট্টগ্রামের চমশা নামক স্থানেও তিনি কিছুদিন ছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। তা ছাড়া পাবনা জেলার একটি থানার নামও এ পিরের নামে ফরিদপুর রাখা হয়েছে এবং চাঁদপুর জেলার একটি থানার নাম ফরিদগঞ্জ। ফরিদপুর অঞ্চলের পূর্বের নাম ছিল ফতেহাবাদ।
ফতেহাবাদ ছিল একটি পরগনার নাম। এ পরগনার অন্তর্ভুক্ত ছিল ঢাকাজালালপুর নামের আরেকটি পরগনা। ফতেহাবাদ ছিল হুসাইন শাহের প্রধান শহরের নাম, যা লক্ষণাবতীর শাসক জালালউদ্দিন ফতেহ শাহের (১৪৮১-৮৭) নামানুসারে ফতেহাবাদ নামকরণ করা হয়েছে। রাজা সূর্য কুমারের নামানুসারে একদা বিনােদপুর বাজারের নামকরণ করা হয় রাজবাড়ি। পরবর্তী সময় রেল স্টেশন ও থানার নামকরণ করা হয় রাজবাড়ি। গােয়ালন্দ নামে থানায় উন্নীত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত রাজবাড়ি জেলা অঞ্চলের নাম গােয়ালন্দ মহকুমা হিসেবেই পরিচিত ছিল। মাদারীপুর মহকুমা (বর্তমানে জেলা) অনেক পুরােনাে। নবী বংশীয় একজন কামেল আউলিয়া হজরত বদীউদ্দীন শাহ মাদারের নামানুসারে এ মহকুমার নামকরণ করা হয়েছিল। গােপালগঞ্জ অঞ্চলের নাম পূর্বে ছিল রাজগঞ্জ বাজার। রানি রাশমণি রাজগঞ্জের নাম তার নাতির নামের শেষের শব্দ গােপাল এবং রাজগঞ্জের শেষের শব্দ সমন্বয়ে গোপালগঞ্জ নামকরণ করেন।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের ভৌগােলিক উত্থান-পতনের সাথে ফরিদপুর জেলার নাড়ির যােগ রয়েছে। এর ভূমি গঠনের যে প্রক্রিয়া প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে শুরু হয়েছে। তা এখনাে চলছে। সমতট বঙ্গের নিম্নভাগ দিয়ে পূর্বে সাগর স্রোত প্রবাহিত হতাে। ক্রমে চরা পড়ে তা বহুদূর পর্যন্ত ভূভাগরূপে পরিণত হয়েছে। কিন্তু সঠিকভাবে এর পানি নিঃসরণ না হওয়ায় কোথাও কোথাও বৃহদাকারে হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে। এসব হ্রদ সাধারণত লেক নামে অভিহিত। এরূপ বহু বিলের সমষ্টিতে ফতেহাবাদের সৃষ্টি হয়। মূলত আদিকাল থেকে এ দ্বীপটি ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা এবং অন্যান্য নদীর পলিমাটি দ্বারা জাগতে শুরু করে। কোটালীপাড়ার অন্তর্গত পিঞ্জরী এবং ইদিলপুরের অন্তর্গত সামন্তসার গ্রামের পরিচয় সেনরাজগণের সময় থেকে পাওয়া যায়। এতে মনে হয় যে, ফতেহাবাদ বিভাগ ও তার নিকটস্থ কিছু স্থান অন্তত সহস্র বছর পূর্বে স্থলভাগে পরিণত হয়। ফরিদপুর জেলার সবচেয়ে বড়াে পরিবর্তন হয়েছে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহের একত্রিত ধারার শক্তির ফলে। ভূমি জেগে ওঠার সাথে সাথে। নানাপ্রকার গাছ, ঝােপঝাড়, বাঁশ, বেত ইত্যাদিতে আচ্ছাদিত হয়ে যায়। গােপালগঞ্জ ও মাদারীপুর এলাকায় প্রাচীন লােকবসতি থাকলেও নতুন জেগে ওঠা চরে বসতি স্থাপন করতে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে অবিরাম সংগ্রাম করতে হয়েছে। ঘন জঙ্গলের পাশে সমগ্র ফরিদপুরে বিভিন্ন এলাকায় প্রশস্ত বিলের অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল। ১৫৮৬ সালে ইংরেজ বণিক Ralph Fitch ফরিদপুর অঞ্চল ভ্রমণ করে লিখেছেন যে, অনেক নদী ও জলাভূমি বিচ্ছিন্নভাবে আছে যা তার ঘােড়া চালক অতিক্রম করতে পারে নি।
ফরিদপুরের লােকবসতি কোনাে একক এলাকা বা কোনাে বিশেষ গােষ্ঠী। থেকে সমগ্র এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার নিদর্শন পাওয়া যায় না। তবে এ কথা ঠিক যে, নতুন চর জেগে ওঠার সাথে সাথে নিকটবর্তী বিভিন্ন জেলার লােকজন এসে এখানে বসতি স্থাপন করেছে। ১৯২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ৯০ হাজার লােকের ৮৫ হাজারই নিকটবর্তী ঢাকা, পাবনা, নদীয়া, যশাের, বরিশাল, কুমিল্লা, নােয়াখালী ও খুলনা জেলা থেকে আগমন করে। সমগ্র ফরিদপুরে একক আঞ্চলিক ভাষা বলে কিছু নেই, যা বাংলাদেশের অন্য কোনাে জেলাতে লক্ষ্য করা যায় না। তবে দীর্ঘদিন যাবৎ একত্র চলাফেরার ফলে বিভিন্ন। আঞ্চলিক ভাষার মিশ্রণে একটি স্বতন্ত্র ফরিদপুরী ভাষার উন্মেষ ঘটতে শুরু করেছে। ফরিদপুর জেলার ভূমি গঠন, জনবসতি, নদীর ভাঙাগড়া প্রভৃতি কারণে এর ভৌগােলিক সীমারেখা ও প্রশাসনিক কাঠামাে বার বার পরিবর্তিত হয়েছে। এক দিন যেখানে ছিল সভ্য জনপদ, প্রাকৃতিক কারণে তা হয়ে উঠেছে জনশূন্য। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৭ অব্দে গ্রিক বিবরণে দেখা যায় যে, গঙ্গার মােহনায় গঙ্গারিডি রাষ্ট্র। অনেকে মনে করেন গঙ্গা নদীর মােহনায় কুমার তালুক বা কোটালীপাড়ায় গঙ্গারিডি রাষ্ট্রের রাজধানী ছিল। মি, ওয়াটসন ও ড, ওয়াইজ ঐ মত সমর্থন করেন। ১৫০ খ্রিষ্টাব্দে মি. টলেমি ও প্লিনির বিবরণে চন্দ্রদ্বীপের অবস্থান পাওয়া যায়। তাদের ধারণায় চিহ্নিত গঙ্গা বন্দরকেই কোটালীপাড়া বলে মনে করা হয়। ৩১৫ খ্রিষ্টাব্দে বাকুড়ার পুষকরণের রাজা সিংহ বর্মার পুত্র চন্দ্রবর্মণ কোটালীপাড়া জয় করেন। তাঁর রাজ্য বাকুড়া থেকে চন্দ্রদ্বীপ কোটালীপাড়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ফরিদপুর জেলার প্রাচীন ইতিহাস বলতে কোটালীপাড়াকেই বােঝায়। কারণ, বর্তমান ফরিদপুরের উত্তরাঞ্চল তখন পর্যন্ত জেগে ওঠে নি। আর ভূমি গঠনের দিক থেকে কোটালীপাড়া ছিল প্রাচীন ও উন্নত সভ্যতার জনপদ। এটি ছিল একটি প্রসিদ্ধ সমুদ্র বন্দর।
পঞ্চম ও ষষ্ঠ শতকের তাম্র শাসনের প্রমাণ রয়েছে। ১০৯৭১১৬৯ সালের মধ্যে সেনদের তৃতীয় শাসক বিজয় সেনের আমল থেকেই ফরিদপুর সেন রাজত্বের আওতায় ছিল। সেন রাজ্য পাচটি প্রদেশে বিভক্ত ছিল। প্রদেশগুলাে হলাে রাঢ়, গৌড়, বঙ্গ, বাগড়ী ও নাব্য। সেনদের শিলালিপিতে বঙ্গ বিক্রমপুর ও নাব্য অঞ্চলের উল্লেখ আছে। রাঢ় এবং গৌড় মুসলমানদের অধিকারে চলে যাওয়ার পর পূর্ববঙ্গ সেনদের অধীনে ছিল। পূর্ববঙ্গ বিক্রমপুর ও নাব্য অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল। বিক্রমপুর, কোটালীপাড়া ও ইদিলপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আর নাব্য অঞ্চল কোটালীপাড়া থেকে সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সুলতান মুগীসউদ্দীন তুগরীল ফরিদপুর অঞ্চলের কিছু অংশে কর্তৃত্ব স্থাপন করলেও সুলতান রুকনউদ্দীন বরবক শাহ (১৪৫৯-৬৫) সর্বপ্রথম কোটালীপাড়াসহ চন্দ্রদ্বীপ দখল করেন। সুলতান আলাউদ্দীন হুসেন শাহের (১৪৯৩-১৫১৯) সময় ফরিদপুর অঞ্চল বা ফতেহাবাদের অন্তর্ভুক্ত ছিল ঢাকা ও বাকেরগঞ্জের অংশ, যা দক্ষিণে সাহেব বাজার ও সন্দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
সম্রাট আকবরের জায়গিরদার মুরাদ খানের সময় ফতেহাবাদ এবং সরকার। বাকলা বা বাকেরগঞ্জকে আকবরের রাজ্যভুক্ত করেন। ফতেহাবাদের জমিদার মজলিশে কুতুব এবং ভূষণার রাজা সীতারামের পর এ ২টি অধিরাজের গুরুত্ব কমে যেতে থাকে। ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার দেওয়ানি লাভের চুক্তি অনুযায়ী ফরিদপুরের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল রাজশাহী জমিদারের আওতাভুক্ত ও ঢাকা নায়েবাতের অন্তর্ভুক্ত ছিল। অর্থাৎ এটা ছিল নায়েবের অধীন সুবেদার বা নায়েবে নাজিম, যার প্রধান অফিস ছিল ঢাকা। ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় গােয়ালন্দ মহকুমা ও গােপালগঞ্জের অংশ যশােরের আওতাধীনে চলে যায় এবং ফরিদপুরের বাকি অংশ ঢাকা জালালপুরের অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা থেকে ঢাকা জালালপুর ও বাকেরগঞ্জ জেলার সৃষ্টি হয়। ১৮০৭ সালে ঢাকা জালালপুর থেকে জেলার সদর দপ্তর বর্তমান ফরিদপুরে স্থানান্তর হয়। ১৮১৫ সালে একজন সহকারী কালেক্টরের অধীনে এ জেলাকে পৃথক জেলার মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৮৫৯ সালে একজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কালেক্টরের অধীন ফরিদপুর জেলাকে পূর্ণাঙ্গ জেলার মর্যাদায় উন্নীত করা হয়। ১৮৫৩ সালে মানিকগঞ্জ মহকুমাকে ফরিদপুর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ঢাকার সাথে যুক্ত করা হয়। ১৮৭৫ সালে ফরিদপুর জেলার পাংশা ও বালিয়াকান্দি থানা এবং পাবনা। (তদানীন্তন) জেলার খােকসা ও কুমারখালী নিয়ে কুমারখালী মহকুমা প্রতিষ্ঠা করে পাবনা জেলাভুক্ত করা হয়। পুনরায় ১৮৭১ সালে কুমারখালী মহকুমার কুমারখালী ও খােকসা থানা কুষ্টিয়া মহকুমাভুক্ত করে নদীয়া জেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। আর পাংশা ও বালিয়াকান্দি থানা ১৮৭১ সালে ফরিদপুর জেলার।
গােয়ালন্দ মহকুমার সাথে যুক্ত করা হয়। মাদারীপুর মহকুমা গঠিত হয় ১৮৫৭ সালে এবং ফরিদপুর জেলার সাথে যুক্ত হয় ১৮৭৩ সালে। ১৯০৯ সালে ফরিদপুর সদর মহকুমার মকসুদপুর থানা এবং মাদারীপুর মহকুমার গােপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া থানা নিয়ে গঠিত হয় গােপালগঞ্জ মহকুমা। ফরিদপুর জেলার উত্তর এবং পূর্ব দিকে গঙ্গা নদীর প্রধান শাখা পদ্মা নদী প্রবাহিত, যা ফরিদপুরকে পাবনা ও ঢাকা থেকে পৃথক করেছে। ফরিদপুরের পূর্বাংশ থেকে। দক্ষিণ দিকে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র প্রবাহিত, যা কুমিল্লা জেলা থেকে ফরিদপুরকে। পৃথক করেছে। দক্ষিণে গঙ্গা নদীর শাখা নয়াভাঙা, আড়িয়াল খাঁর প্রবাহ ও তা। থেকে আরও কিছু শাখাপ্রশাখা বরিশালকে ফরিদপুর থেকে পৃথক করেছে। পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে গড়াই ও তার অগ্রবর্তী নাম চন্দনা, মধুমতি ও বারানশিয়া প্রভৃতি নদী কুষ্টিয়া, যশাের ও খুলনাকে ফরিদপুর থেকে পৃথক করেছে।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – সপ্তম খন্ড