You dont have javascript enabled! Please enable it! 1975.08.15 | বঙ্গবন্ধুর বাড়ি তল্লাস করে ৩০ হাজার টাকার অচল নােট পাওয়া যায়। - সংগ্রামের নোটবুক

মুজিব-হত্যার পর ধর্মের-কল বাতাসে নড়তে শুরু করেছে। তার বাড়ি তল্লাস করে ৩০ হাজার টাকার অচল ঘােষিত নােট পাওয়া গেছে। প্রমাণ হল যে, একশাে টাকার নােট অচল ঘােষণা করার সময় তিনি তার স্ত্রী-পুত্রকেও ব্যাপারটা জানতে দেননি। আর তার পরিবারের ২২ জনের একাউন্টে পাওয়া গেছে মাত্র ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মােশতাক সরকার প্রথমে তার বাড়িতে সাত লাখ টাকার হীরা জহরত পাওয়া গেছে বলে রটিয়েছিলেন। দেখা গেল, তা লাখ তিনেক টাকার অলংকার। দুই ছেলের বিয়েতে অন্য রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর যে উপহার পাঠিয়েছিলেন – এসব হচ্ছে তা। বাংলাদেশ মুক্ত হওয়ার পর সন্ত্রাসবাদী দলগুলাের বহু যুবক গুপ্তহত্যা বা থানা লুট করতে গিয়ে রক্ষীবাহিনীর হাতে মারা গেছে একথা সত্য। কিন্তু বিরােধী দলের কোন নেতা বা কর্মীকে মুজিবের আদেশে হত্যা করা হয়েছে এই অভিযােগ আজ পর্যন্ত প্রমাণ করা যায়নি। আজ পর্যন্ত বিরােধী দলীয় নেতা বা কর্মী যাদের হত্যা করা হয়েছে বলা হয়, তাদের নামের তালিকা কেউ প্রকাশ করতে পারেননি। মুজিব শাসনামলে একমাত্র সন্ত্রাসবাদী নেতা সিরাজ শিকদার পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর মারা যান। ভারতের সন্ত্রাসী নেতা চারু মজুমদারও পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর মারা যান। তজ্জন্য কেউ ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যাকারী বলে হাস্যকর অভিযােগ তােলেননি। তেমনি মুজিবও সিরাজ শিকদারকে হত্যার আদেশ দেননি। ওটা ছিল অতি উৎসাহী পুলিশ অফিসারদের বাড়াবাড়ি। মুজিব তার সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে কোন ভুলভ্রান্তি করেননি এমন  কথা বলি না। তার জীবিতাবস্থায় এই ধরনের ভুল-ভ্রান্তির সমালােচনা আমিও করেছি। কিন্তু তার অর্থ কি এই যে, তার ২৫ বছরের সশ্রামী ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করতে হবে? তাকে হত্যা করে তার মৃতদেহ দেড়দিন পর্যন্ত ফেলে রাখতে হবে তারই বাসভবনের সিঁড়িতে?

 

Reference:

আব্দুল গাফফার চৌধুরী

ইতিহাসের রক্তপলাশঃ পনেরই আগস্ট পঁচাত্তর (১ম পর্ব)