শরনার্থী শিবিরের ছাউনিগুলো মূলত তিন ভাগে বিভক্ত ছিল। ছোট কুটিরের ছাউনি- যেগুলো তৈরী করা হত স্থানীয় কাঁচামাল দিয়ে। আকারে ছোট তাবুগুলো নির্মান করা হত কাঠের কাঠামো আর শরনার্থী শিবিরের দেয়া ত্রিপল দিয়ে। আর কিছু ছিল সিমেন্ট শিট আর ড্রেইনের পানির পাইপ দিয়ে তৈরী। বর্তমানে সমগ্র ভারত জুড়েই ত্রিপল তৈরীর সামগ্রিতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করা হয়। শিবিরে একটি কিংবা দুইটি পাম্পের মাধ্যমে পানির যোগান দেয়া হত। তাছাড়া কিছু এক পাম্পওয়ালা লিভারযুক্ত টিউবওয়েলও ছিল। কিন্ত পয়:নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা ছিলো না বললেই চলে। শরনার্থী গ্রামগুলোর পাশেই গর্ত খুঁড়ে কিছু খোলা পায়খানার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্ত তা ছিল নিতান্তই অপ্রতুল। তাই কর্তৃপক্ষ আরো বড় করে করার সিদ্ধান্ত নেয়। অগভীর কূপ,অপরিচ্ছন্ন পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাও শিবিরের খুব নিকটবর্তী হওয়ায় রোগ সংক্রমণ ঘটা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাই প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনিটারি ব্যবস্থা ও গভীর নলকূপ স্থাপন করা অতীব জরুরী হয়ে পড়েছিলো শরনার্থী শিবিরের নূন্যতম স্বাস্থমান বজায় রাখার জন্য।
খাদ্যের জন্য শরনার্থীরা ক্যাম্পের অথরিটি ও স্থানীয় খুচরা বাজারের উপর নির্ভরশীল ছিল। মাটির পাত্রে সিদ্ধ ভাতই ছিল মূল খাদ্য। অল্প গুড়ো দুধও মিলত কালেভদ্রে। আর ছিল ডাল,যা ছিল মুসর জাতীয় দানা দিয়ে তৈরী এক প্রকার স্যুপ বিশেষ। কিছু বিশেষ জায়গায় সবজির ব্যবস্থাও করা হত। তবে এটা ছিল শিবিরের রেগুলার নিয়মের বাইরে। মোদ্দাকথা হল, যে পরিমান খাদ্যের যোগান দেয়া হত,তা ছিল চাহিদার তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল।
[শরণার্থীদের উপর আই,আর,সি-র একটি রিপোর্ট]
বাংলাদেশ রেসকিউ কমিটির ইমার্জেন্সি মিশন টু ইন্ডিয়া ফর পাকিস্তানি রেফিউজিস
সূত্রঃ বাংলাদেশ ডকুমেন্টস, ২৮ জুলাই, ১৯৭১।
রিপোর্টদাতাঃ মিস্টার এঞ্জিয়ার বিডল ডিউক (চেয়ারম্যান, আইসিআর)
রিপোর্ট গ্রহীতাঃ এফ, আই কেলোং (ইউএসএ সরকারের শরণার্থী বিষয়ক সেক্রেটারির অব স্টেটের স্পেশাল এসিস্ট্যান্ট)
রিপোর্ট প্রদানের তারিখঃ ২৮ জুলাই, ১৯৭১