হাজী গােলাম মােরশেদের জামাতা চৌধুরী আরশাদ হুসাইনের সাক্ষাৎকার
সাতাশে মার্চ (১৯৭১) সকালে কারফিউ তােলার পর আমি আমার শ্বশুরের খোঁজে ধানমণ্ডির ৩২ নাম্বার রােডের বাসায় যাই। বাসার বাইরে দেখি আমার শ্বশুরের গাড়ি গাড়ির কাচ ভাঙা। বাইরে কেউ নেই। আমি তখন শেখ সাহেবের বাড়ির গেটের ছােট দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে ডাকছিলাম ‘কেউ আছেন- কেউ আছেন ?’ ঠিক তক্ষুনি পাকিস্তান আর্মির একজন মেজর ও পঁচিশ-তিরিশজন সৈন্য আমাকে ঘিরে ধরে। তারা আড়াল থেকে শেখ সাহেবের বাড়ি ওয়াচ করছিল। তারা আমাকে বেঁধে ট্রাকের মধ্যে ফেলে বুট দিয়ে লাথি মারতে থাকে। আমার দাত ভেঙে দেয়। শােল্ডার ডিসলােকেট করে দেয়। সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাকে ট্রাকেই। ফেলে রাখে। একটু পর পর মারধর আর আমার গায়ে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিতে থাকে। সন্ধ্যায় ধানমণ্ডির একটা স্কুলে আমাকে রাখে। সেখানে অনেক বন্দী ছিল। আমাকে সৈন্যরা জিজ্ঞেস করছিল কেন আমি ঐ বাসায় গিয়েছি। আমি বললাম যে ‘লােকজনরা বলছিল যে শেখ সাহেব, আমার শ্বশুর ও সবাইকে মেরে ফেলেছে। তাদের লাশ পড়ে আছে। ডেডবডির তাে জানাজা হওয়া দরকার। সেই জন্যেই আমি গিয়েছিলাম। আমাকে অনেক জেরা করে তারপর যখন শুনল আমার ব্যাকগ্রাউন্ড ইউ.পির, তখন টুয়েন্টি এইটথ মার্চ সকালে আমাকে কাকরাইলের রাস্তায় ছেড়ে দিল।
(টেলিফোন সাক্ষাৎকার। বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২। কোস্তারিকা- বাংলাদেশ।)