সেই সব সৃষ্টি
সুশীল রায়
রবীন্দ্রনাথ তার জীবনের উদ্যোগ পর্বের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত করেন উত্তরবঙ্গের নদী পরিবেষ্টিত অঞ্চলে। শিলাইদহের কুঠিবাড়িই ছিল তাঁর কর্মকেন্দ্র। জমিদারি পরিদর্শণের জন্যেই তার এখানে অবস্থান, কিন্তু সেই সঙ্গে তিনি অনেক সাহিত্য রচনার কাজও এখানে করেন। সাজাদপুর, পতিসর প্রভৃতি অঞ্চলে পরিভ্রমণ করলেও শিলাইদহের কুঠিই ছিল তার কেন্দ্র।
১৮৩৩ সালে বৃটিশ পার্লামেন্টের নির্দেশ অনুসারে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার বাণিজ্যিক কাজ কারবার বন্ধ করতে বাধ্য হয়। রবীন্দ্র-পিতামহ দ্বারকানাথ তখন কোম্পানির চাকুরি ত্যাগ করে কার-ঠাকুর কোম্পানি নামে এক কুঠি স্থাপন করেন। এই কুঠির কাজের সঙ্গে সঙ্গে তিনি শিলাইদহে ও অন্যান্য স্থানে নীলকুঠি ক্রয় করেন। শিলাইদহের বাড়ি তখন থেকে কুঠিবাড়ি নামে খ্যাত হয়ে ওঠে।
রবীন্দ্রনাথের ‘ছিন্নপত্রে’র চিঠিগুলি এখানে বসেই লেখা। গল্পগুচ্ছ’ গ্রন্থের বহু গল্প রচনা করেন এখানে। গীতাঞ্জলি’র অনেক গান এখানে বাসকালে লেখা, যথা- ‘অন্তর মম বিকশিত কর’। পত্নী মৃণালিনী দেবীকে লিখিত (চিঠিপত্র প্রথম খণ্ডের অন্তর্গত) অনেক চিঠি শিলাইদহ থেকে লেখা।
এ ছাড়া এই কয়টি গ্রন্থ তিনি লেখেন শিলাইদহে, বন্ধনীর মধ্যে প্রথম-প্রকাশ-তারিখ দেওয়া হল।
বিসর্জন (১৮৯০), চিত্রাঙ্গদা (১৮৯৯), খসড়া অনঙ্গ-আশ্রম’, কণিকা (১৮৯৯), কথা (১৯০০), কাহিনী (১৯০০), ক্ষণিকা (১৯০০), গােরা (১৯১০) ইত্যাদি।
আনন্দ বাজার : ১৮.৪.১৯৭১
Reference:
গণমাধ্যমে-বাংলাদেশের-মুক্তিযুদ্ধ – মুনতাসীর মামুন