ভারত সরকারের অনুরােধে বাঙলাদেশের শরণার্থীদের জন্য সােভিয়েত বিমানের আগমন
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা, ১৪ জুন সােভিয়েত সরকার বাঙলাদেশের শরণার্থীদের স্থানান্তর করার কাজে সাহায্যের জন্য ভারত সরকারের অনুরােধে আজ দু’টি বৃহদাকার এ-এন-১২ পরিবহন বিমান পাঠিয়ে দিয়েছেন।
বিমান দুটি আজ বিকেলে মস্কো থেকে দিল্লী হয়ে দমদম বিমান বন্দরে পৌঁছায়। মঙ্গলবার সকালে ঐ বিমান শরণার্থীদের নিয়ে মানা শিবিরে রওনা হবে।
স্মরণযােগ্য যে, পাকজঙ্গীচক্রের বর্বরতম ফৌজী আক্রমণের ফলে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী বাঙলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে নিরাপত্তা ও আশ্রয়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন ভারতের রাজ্যসমূহ চলে আসেন। সীমান্ত রাজ্যগুলি থেকে অত্যাধিক শরণার্থী চাপ সরাতে ও তাদের অধিকতর সুষ্ঠু আশ্রয় ব্যবস্থার জন্য ভারতের অন্যত্র উদ্বাস্তু শিবিরে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা নিয়ে ভারত সরকার এই কাজে সাহায্যে জন্য সােভিয়েত সরকারকে অনুরােধ জানান। সেই অনুরােধে সাড়া দিয়ে সােভিয়েত সরকার প্রথম দফায় এই ২টি বৃহৎ পরিবহন বিমান পাঠালেন।
এই সােভিয়েত এ-এন-১২ পরিবহন বিমানের প্রতিটিতে একবারে ১২০ জন যাত্রী ও মাথাপিছু ২০ কিলােগ্রাম ওজনের তাদের জিনিসপত্র বহন করা যায়। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় দমদম বিমানবন্দর থেকে এই বিমান দুটি মধ্য প্রদেশের মাত্র উদ্বাস্তু শিবিরে শরণার্থীদের নিয়ে যাওয়া শুরু করবে। সােভিয়েত বিমান দুটি দিনে দুবার করে শরণার্থীদের নিয়ে যাবে।
এ এন ১২ প্রথম বিমানটি বৈমানিক দলের অধিনায়ক হলেন ক্যাপ্টেন সি এফ খহমেল। বিমানবন্দরের এদের অভ্যর্থনা করেন সােভিয়েত দূতস্থানের কূটনীতিবিদ এবং পশ্চিমবঙ্গ ও ভারত সরকাররে উদ্বাস্তু-ত্রাণ বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা। দিল্লী থেকে বিমানে তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রাণ বিভাগের অফিসার শ্রীভাগরও সােভিয়েত দূতস্থানের উপদেষ্টা শ্ৰী ভি, পি, বাইদাকোভ কলকাতায় আসেন।
বিমানবন্দরে স্বাগত জ্ঞাপনকারীদের মধ্যে ছিলেন কলকাতাস্থ সােভিয়েত কাল শ্রীভি দিউলিন, সহ কাল শ্রীভি, গুর্গেনভ, সােভিয়েত এয়ারােবাতেস্ক ক্যাপ্টেন সেজকুলােভ এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ত্রাণ ও পূনর্বাসন দপ্তরের জয়েন্ট সেক্রেটারী শ্রী এ কে দত্ত চৌধুরী ভারত সরকারের ত্রাণ ও পূর্নবাসন দপ্তরের জয়েন্ট সেক্রেটারী শ্ৰী, এস, সি, রায় ও অন্যান্য কর্মকর্তারা।
সােভিয়েত ঔষধ ও অন্যান্য সাহায্য নিয়ে আরও বিমান দু’একদিনের মধ্যে এসে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: কালান্তর, ১৫.৬.১৯৭১