বিশ্বব্যাপী বাঙলাদেশ দিবস পালনের ডাক- শান্তি সংসদই দিয়েছিল সােভিয়েত-বিরােধী কুৎসার জবাবে উভয় বাঙলার শান্তি আন্দোলনের নেতৃবন্দ
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা, ৩ জুলাই— “বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে বাঙলাদেশের সমর্থনে যে প্রস্তাব গৃহীত হয় তা-ও সােভিয়েত ইউনিয়নসহ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সমস্ত দেশের অকুণ্ঠ সমর্থন লাভ করে।” শান্তি সংসদের পশ্চিমবঙ্গের যে সদস্যরা বুদাপেষ্টে অনুষ্ঠিত বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে যােগদান করেছিলেন আজ এখানে এক বিবৃতিতে তারা একথা বলেন।
সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বনামে এবং আরও কিছু ব্যক্তি ব-কলমে সােভিয়েত ইউনিয়ন সমেত বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের সদস্য দেশগুলির বিরুদ্ধে বাঙলাদেশ প্রসঙ্গে যে … মিথ্যা ও কুৎসা প্রচার করছেন তারই জবাবে বিবেকানন্দ মুখােপাধ্যায়, অমিয় মুখখাপাধ্যায়, শান্তি সিংহরায় এবং ডাঃ অসিত ঘােষ ঐ বিবৃতি দিয়েছেন। তারা বলেছেন, সৌম্যেন বাবুকে যে কুৎসাপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ অসত্য এবং উদ্দেশ্য প্রণােদিত।
আর এক বিবৃতিতে বাঙলাদেশের প্রতিনিধি ডাঃ সরােয়ার সােভিয়েত প্রতিনিধিদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, “আমাদের এই মরণপণ সংগ্রামে আমাদের বন্ধুদের শত্রু হিসাবে দেখানাে আমাদের পক্ষে বড়ই ক্ষতিকর তাই প্রতিবাদ করতে বাধ্য হলাম।”
পশ্চিমবাঙলার উল্লেখিত সদস্যরা তাদের বিবৃতিতে বলেছেন, “বাঙলাদেশ সম্পর্কে বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের ভূমিকা এবং এই সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে সােভিয়েত প্রতিনিধিদলের মনােভাব সম্পর্কে শ্রীসৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক বিবৃতি আমাদের নজরে এসেছে। বুদাপেস্ত সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধি হিসেবে আমরা বলতে চাই, শ্রীসৌম্যেন্দ্র নাথ ঠাকুর যে কুৎসাপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ অসত্য এবং উদ্দেশ্য প্রণােদিত। সৌম্যেন্দ্র বাবু ঐ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না, আমরা ছিলাম এবং বাঙলাদেশের … সম্মেলনে বিশেষভাবে অংশগ্রহণ করেছি।
মেনন বাঙলাদেশ সম্বন্ধে কিছু বলতে শুরু করলে তাকে থামিয়ে দেওয়া হয় এবং তিনি ক্ষুদ্ধ হয়ে সম্মেলন ত্যাগ করেন।
কৃষ্ণ মেনন বৃক্ততা করেছেন
প্রকৃত ঘটনা সম্পূর্ণ বিপরীত। বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের তিনটি কমিশনের এবং প্লেনারী অধিবেশনে শ্রীকৃষ্ণ মেনন বক্তৃতা করেন এবং প্রতিবারেই তিনি প্রতিটি বক্তৃতায় বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ঘটনা বিস্তারিতভাবে উপস্থিত করেন। এছাড়া প্রতিটি কমিশনেই কমপক্ষে চারজন ভারতীয় প্রতিনিধি ছিলেন। … নিজ কমিশনে বাঙলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা যথাযযাগ্য প্রতিনিধিরা যখন বাঙলাদেশ সম্বন্ধে কিছু বলতে যান, তখন সােভিয়েত প্রতিনিধিরা তাদেরও বাধা দিয়ে কিছুই বলতে দেন না। এই ঘটনাও যে সম্পূর্ণ অসত্য তাই নয়, প্রকৃত ঘটনার সম্পূর্ণ বিপরীত ভাষ্য।
সূত্র: কালান্তর, ৪.৭.১৯৭১