You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.14 | মার খেয়ে পাক সৈন্যরা এখন পিছু হটছে | দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা - সংগ্রামের নোটবুক

মার খেয়ে পাক সৈন্যরা এখন পিছু হটছে

(নিজস্ব সংবাদদাতা) 

কৃষ্ণনগর, ১৩ জুলাই-মুক্তিফৌজের দুর্বার আক্রমণে পাকিস্তানী সৈন্যদের এখন পিছু হটতে হচ্ছে। ভারত সীমান্ত থেকে ২৫ কিলােমিটার দূরে বাঙলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার মহকুমা শহর মেহেরপুর থেকে পাক সৈন্যরা পালিয়েছে। পাক সৈন্যরা এখন মেহেরপুর থেকে পাকশিতে চলে গেছে। পাকশি শহর আরও ২০ কিলােমিটার পূর্বদিকে অবস্থিত। বহু পাক সৈন্য হতাহত হয়েছে। তাদের তৈরী বাঙ্কার ও অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মুক্তিফৌজ ভেঙ্গে দিয়েছেন। ছদ্মবেশে কিছু পশ্চিম পাকিস্তানী এখনও মেহেরপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মুক্তিফৌজ ছদ্মবেশী ১৮ জন পশ্চিম পাকিস্তানীকে গ্রেপ্তার করেছেন। 

রাজাকার নিহত 

কৃষ্ণনগর থেকে পি. টি. আইর খবরে প্রকাশ, গত রাত্রে কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর-গয়াবাড়ী এলাকায় মুক্তিফৌজের গুলীবর্ষণের ফলে তিনজন পাকিস্তানী আধা সামরিক লােক (রাজাকার) নিহত হয়েছে। পাক সৈন্যরা মেহেরপুর থেকে সরে চুয়াডাঙ্গা ও বামনদিবাজারে কালিকাকুন্দি এলাকায় চলে গেছে। তবে মেহেরপুর মহকুমায় পাকিস্তানী আধা সামরিক বাহিনী এখনও রয়ে গেছে বলে প্রকাশ।মুক্তিফৌজ গত রাত্রে যশােহর জেলার কোটচাঁদপুর রেল স্টেশন ও পুলিশ ঘাটি আক্রমণ করেন। রেলের স্টেশন মাস্টার নিহত হয়েছে।

পাক সৈন্যের নতুন পালানাে কৌশল

পাক সামরিক কর্তৃপক্ষ সৈন্যদের নির্দেশ দিয়েছেন, ‘পিছু হটা চলবে না। মুক্তিফৌজের আক্রমণের মুখে সৈন্যরা তাদের কমান্ডিং অফিসারকে গুলী করে মেরে ফেলে এবং পরে পিছু হটে যায়।পলাতক সৈন্যরা পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায় যে, মুক্তিফৌজের হাতে তাদের অফিসার নিহত হওয়ায় তাদের নির্দেশ দেবার কেউ ছিল না, সে জন্য তারা পিছু হটেছে। বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল বালুচ ও পাঠান সৈন্যরা পাক সেনা বাহিনী ছেড়ে চলে যাচ্ছে। কুমিল্লা জেলায় সাতজন পাঠান ও বালুচ সৈন্য তাদের ইউনিট ছেড়ে চলে এসেছে। তারা জানিয়েছে যে, পাঞ্জাবী অফিসার ও সৈন্যরা নিরস্ত্র লােককে হত্যা করছে। তারা একাজের সামিল হতে অনিচ্ছুক। তারা মুক্তিফৌজে যােগদানের সিদ্ধান্ত করেছে।

Reference:

১৪ জুলাই ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা