You dont have javascript enabled! Please enable it! লালমাইয়ের জেনোসাইড - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযুদ্ধের সময় কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত বিজয়পুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ফজলুল হক। বাসা বাঞ্ছারামপুর। তিনি একাত্তরের ১১ই জুন হিউম্যান রাইটস কমিশন, সুইজারল্যান্ডে একটা চিঠি পাঠান। এখানে তিনি উল্লেখ করেন যে,

১৯৭১ সালের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে পাক সেনারা বিজয়পুরে অবস্থিত বাগমারা হাই স্কুল ও কায়েদে আজম হাই স্কুলে আক্রমণ করে।

তারা স্কুলের সব দরজা- জানালা, ল্যাবের সব যন্ত্রপাতি, আসবাব পত্র, অফিস সংক্রান্ত কাগজপত্র সবকিছু ধ্বংস করে। পরবর্তীতে তারা মীরাবাজার উচ্চ বিদ্যালয়েও একই ভাবে হামলা করে এবং পুরো স্কুলঘর জ্বালিয়ে দেয়। পাক সেনারা আলেকদিয়া গ্রাম থেকে দুইজন ছাত্রকে ধরে নিয়ে যায়। যারা আর কখনো ফিরে আসে নি।

মে মাসের শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানি সৈন্যরা বরুরা নামক গ্রাম থেকে দুইজন কমবয়সী মেয়েকে জিপে তুলে নিয়ে লালমাই হয়ে কুমিল্লার পথে যাত্রা করে এবং ধর্মপুর নামক গ্রামের পাশে তাদের একজনকে তারা খোলা রাস্তায় ধর্ষন করে।

লালমাইয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটি ছিল। সেখানে তারা ইচ্ছামত লোক ধরে আনত এবং খেয়ালখুশিমত তাদের হত্যা করত। সেখান থেকে ভাগ্যগুনে বেচে ফিরে আসা কয়েকজন তাকে এই তথ্যগুলো জানায়।

যাদেরকে হত্যা করা হত, তাদের লাশ লালমাই পাহাড়ের ভিতর অবস্থিত সি এন্ড বি ডাকবাংলোর পাশের একটি গর্তে ফেলা হত। অপহরণকৃত মহিলা ও মেয়েদের জন্য তাদের আলাদা আলাদা তাবু ছিল, যেখানে পাকিস্তানিরা তাদের যৌনলালসার নিবৃত্তি করত। সেখান থেকে একজন লোক পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। যাকে বলা হয়েছিল একটি মেয়ের লাশ ফেলে দিয়ে আসার জন্য। মেয়েটিকে পর্যায়ক্রমে অসংখ্যবার ধর্ষন ও অত্যাচার করে হত্যা করা হয়েছিল।

চিঠি লেখাকালে লেখক পালিয়ে আগরতলা গিয়ে তদকালীন এম্পি প্রফেসর খুরশিদ আলমের সাথে আগরতলায় অবস্থান করছিলেন।