৭ শ্রাবণ, ১৩৭৮ শনিবার, ২৪ জুলাই ১৯৭১
-ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেন, আগামীকাল (২৫ জুলাই) বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দিন আহমদ, আবদুল মান্নান ও দি পিপল সম্পাদক আবিদুর রহমানের সম্পত্তি প্রকাশ্য নীলামে বিক্রি করা হবে।
-ঢাকার অদূরে যাত্রাবাড়ীতে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকসেনার প্রচন্ড লড়াই চলে। বোমারু বিমান গ্রামে বোমা ফেলে। কারফিউ চলছিল ঢাকায়। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় গেরিলা হামলাও বোমা বর্ষণ চলে। মুক্তিবাহিনী এদিন এক লিফলেটে বিপ্লবী বাংলাদেশ সরকারের নির্দ্দেশ নামা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দিয়েছে। পাকসেনারা ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ পথে সেন্টি বসিয়েছে। এতসব প্রতিবন্ধক উপেক্ষা করে অকুতোভয় তরুন মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তাঁদের ওপর অর্পিত অপারেশনের দায়িত্ব পালন করছে। মুক্তির নেশা তাদেরকে জীবনের মায়া তুচ্ছ করেছে।
-দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় এদিন ‘মুজিবের নয়, ইয়াহিয়ার বিচার চাই’ শিরোনামের সম্পাদকীয়তে মন্তব্য করা হয় নয়াদিল্লী পরিস্কার জানিয়ে দিক যে শেখ মুজিবুর রহমানকের হত্যা করার জন্য বিচারের মিথ্যা ভাঁওতা দেওয়া হলে ভারত বুঝে নেবে, পাকিস্তান বাংলাদেশে সমস্যার কোন সমাধানই চায় না এবং তখন আশ্রয় পার্থীদের ফিরে যাওয়ার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি উদ্দেশ্যে ভারত যে কোন ব্যবস্থা অবলম্বন করবে। (১৪ খঃ পৃঃ ৮৬৭)
-মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন আরউইন ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থী প্রসঙ্গে সিনেটের বিচার বিভাগীয় সাব কমিটিতে বলেন, শরণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কাজ ত্বরানিত করার জন্য পূর্ব পাকিস্তান- ভারত সীমান্তে জাতিসংঘে পর্যবেক্ষক দল মোতায়েনের প্রস্তাবকে পাকিস্তান স্বাগত জানিয়েছে কিন্তু ভারত তা গ্রহণ করেনি।
-ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী এদিন দিল্লির বুদ্ধিজীবী সম্মেলনে বলেন, অতীতে ভারত অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটিয়েছে। বাংলাদেশ বিষয়ও তেমনি সাহস সাথে মোকাবেলা করা হবে এবং সম্মানজনক সমাপ্তি ঘটবে । উল্লেখ্য, এই সম্মেলনে বুদ্ধিজীবীগণ বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের জোর দাবি জানিয়েছিলেন। এদের মধ্যে ভারতের প্রাক্তন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস সি চাগলা ছিলেন। তিনি তাঁর গ্রন্থ “Roses in December’ গ্রন্থে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বক্তব্য রেখেছেন।
Reference:
একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী