১২ জুলাই ১৯৭১ঃ বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।
সেকটরস কম্যান্ডার সম্মেলনের ২য় দিন কলকাতা ৮ নম্বর থিয়েটার রোডের অস্থায়ী সরকারের সচিবালয়ে শুরু হয়।
১২ই জুলাই দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে ছিলেনঃ
১। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ
২। কর্নেল(অব) এম, এ, জি ওসমানী
৩। লেঃ কঃ এম, এ, রব
৪। গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ,কে খন্দকার
৫। মেজর(অব) নুরুজ্জামান
৬। মেজর সি আর দত্ত
৭। মেজর জিয়াউর রহমান
৮। মেজর কে, এম শফিউল্লাহ
৯। মেজর খালেদ মোশাররফ
১০। মেজর মীর শওকত আলী
১১। উইং কমান্ডার এম, কে বাশার
১২। মেজর ওসমান চৌধুরি
১৩। মেজর রফিক- উল- ইসলাম
১৪। মেজর নাজমুল হক
১৫। মেজর এম, এ,জলিল
১৬। মেজর এ, আর চৌধুরি
এই সম্মেলনে বাংলাদেশকে১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।
১ নম্বর সেক্টরঃ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালীর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে(মুহুরি নদীর পূর্ব এলাকা) এই সেক্টর গঠিত হয় । সমস্ত সেক্টরটি আবার পাঁচটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।আমি এই সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত হই।এই সেক্টরের মোট সৈন্য সংখ্যা ছিল ২১শ’। এর মধ্যে ১৫শ’ ইপিআর, ২শ’ পুলিশ ৩শ’ সামরিক বাহিনী এবং নৌও বিমানবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় একশ। এখানে গেরিলাদের সংখ্যা ছিল প্রায়২০হাজার। যার মধ্যে৮ হাজারকে একশন গ্রুপ হিসেবে গড়ে তোলা হয়। এদের মধ্যে শতকরা৩৫ ভাগকে অস্ত্রও গোলাগুলি দেওয়া হয়েছিল।
২ নম্বর সেক্টরঃ কুমিল্লাও ফরিদপুর জেলা এবং নোয়াখালীও ঢাকার অংশবিশেষ নিয়ে এই সেক্টর গঠিত হয়। সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন খালেদ মোশাররফ। সেক্টরটি ৬ টি সাব সেক্টরে বিভক্ত ছিল।সেক্টরটি৬টি সাব-সেক্টরে বিভক্ত ছিল। সমগ্র সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীর সদস্য ছিল প্রায় ৪ হাজারএবং গেরিলা ছিল প্রায়৩০ হাজার।
৩ নম্বর সেক্টরঃ মেজর কে এম শফিউল্লাহর মৌলভীবাজার মহকুমা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া মহকুমা, নারায়ণগঞ্জ মহকুমা এবং কেরানীগঞ্জের অংশবিশেষ নিয়ে এই সেক্টর গঠিত হয়। ১০ টি সাব-সেক্টরে বিভক্ত এই সেক্টরে গেরিলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায়১০হাজার। এস-ফোর্স গঠনের পর মেজর শফিউল্লাহকে তার কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়। মেজর নুরুজ্জামানকে৩ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
৪ নম্বর সেক্টরঃ উত্তরে সিলেট সদর এবং দক্ষিণে হবিগঞ্জ থানার মধ্যবর্তী সমস্ত অঞ্চল নিয়ে গঠিত এই সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত হন মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত। সেক্টরটি ৬ টি সাব-সেক্টরে বিভক্ত ছিল। সেক্টরের সৈন্য সংখ্যা ছিল প্রায় ২ হাজার এবং গেরিলা ছিল প্রায়৮ হাজার। সেক্টর হেডকোয়াটার ছিল করিমগঞ্জে। পরে তা নাসিমপুরে স্থানান্তর করা হয়।
৫ নম্বর সেক্টরঃ সিলেট জেলার উত্তরাঞ্চল নিয়ে গঠিত এই সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত হন মেজর মীর শওকত আলী। সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীর সংখ্যা প্রায় ৮০০ এবং গেরিলা প্রায় ৭ হাজার। সেক্টরটি ৬ টি সাব-সেক্টরে বিভক্ত ছিল।
৬ নম্বর সেক্টরঃ এই সেক্টর রংপুরও দিনাজপুর জেলা নিয়ে গঠিত। উইং কমান্ডার এম, কে বাশার ছিলেন সেক্টর কমান্ডার। সাব-সেক্টর সংখ্যা ছিল ৫টি। সৈন্য সংখ্যা ছিল প্রায় ১২শ এবং গেরিলা ছিল ৬ হাজার। সেক্টর হেডকোয়াটার ছিল রংপুর জেলার পাট গ্রামের নিকট বুড়িমারীতে।
৭ নম্বর সেক্টরঃ রাজশাহী,পাবনা,বগুড়া এবং দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন মেজর নাজমুল হক। যুদ্ধকালে এক মটর দুর্ঘটনায় তিনি মারা গেলে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে মেজর কিউ এন জামান দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সাব-সেক্টরের সংখ্যা ছিল৮ টি।সৈন্য সংখ্যা ছিল প্রায়২ হাজার এবং গেরিলার সংখ্যা ছিল প্রায়২ হাজার।