নিউইয়র্ক টাইমস, ১৫ এপ্রিল ১৯৭১
গুলি না রুটি
ওয়াশিংটন সর্বদা প্রকাশ করে যে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে তারা যুক্ত নয় – কিন্তু সেটি এই সপ্তাহে প্রকাশ পেয়ে গেছে যখন স্টেট ডিপার্টমেন্ট স্বীকার করেছে যে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্র দমনমূলকনীতিতে বিশ্বাসী পাকিস্তানি সরকারকে গোলাবারুদ এবং অন্যান্য “নন-লেথাল” সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করছে। যতদিন এই বিক্রয় চলবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসলামাবাদের সামরিক শাসনের পাশে ও চীনের পাশে অবস্থান করবে এবং কার্যত তা পাকিস্তানের দ্বারা বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠের ক্রমবর্ধমান বঞ্চনার জন্য এবং সম্প্রতি ন্যাশনাল এসেম্বলির জন্য নির্বাচিত পার্টির দমনের কাজকে প্ররোচনা দেবে।
তিন সপ্তাহ ধরে যখন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর তার সেনাবাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছেন তখন স্টেট ডিপার্ট্মেন্ট বলেছে যে তারা জানেননা যে কখন পাকিস্তানে সর্বশেষ অস্ত্র চালান গিয়েছে – অথবা কোন চালান পথে আছে বা পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এমনকি যদি এই আমলাতান্ত্রিক কথা অবিশ্বাস্যভাবে সত্য হয়, তবে প্রশাসন পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার কারণে সেই ব্যর্থতার দায় এরাতে পারেনা।
বাঙালিদের উপর সর্বাত্মক নিপীড়নে ওয়াশিংটন পাকিস্তানকে গম দেয়া নিষিদ্ধ করেছে। তারা বলেছে যে, পূর্ব পাকিস্তানের বন্দরে ইতোমধ্যে যে চালান গিয়েছে সেগুলো নামানোর যায়গা না থাকায় নতুন করে পাঠানো বন্ধ করা হল। এটা সাময়িকভাবে সত্য হতে পারে, তবে একথা নিশ্চিত যে পূর্ব পাকিস্তানে খাদ্য ত্রাণের প্রয়োজনীয়তা আগামী মাসগুলিতে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। পশ্চিমা শাসিত অযোগ্য ও উদাসীন পাকিস্তানী সরকারের সামরিক কর্মযজ্ঞ বন্ধ করার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। কি ধরনের নিরেপেক্ষ রাজনৈতিক পরিস্থিতির অধীনে মানবিক ত্রাণ বন্ধ করাকে ন্যায্য দাবি করা যেতে পারে?