শরণার্থীদের ত্রাণকাজে দুর্নীতির অভিযােগ
কমলপুরের মহকুমা শাসকের অপসারণ দাবি
উপরাজ্য পালের নিকট কমিউনিস্ট পার্টি (মাঃ)র স্মারকলিপি
আগরতলা, ১৪ জুলাই: শরণার্থীদের ত্রাণ কাজের নামে কমলপুরের মহকুমা শাসক রঞ্জিত দীঘল অবাধ দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছেন। মহকুমার বিভিন্ন শিবিরে আহার্য সরবরাহের জন্য তিনি নিজের খুশিমতাে সরবরাহকারীদের নিম্নতর ডাক বাতিল করে সর্বোচ্চ দর গ্রহণ করেছেন এবং নিজের আর্থিক আনুকূল্য পাচ্ছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ত্রাণ কাজের দায়িত্ব সেলেমা ব্লকের বি.ডি.এর উপর থাকার সময় প্রতি কুইন্টাল ডাল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, আলু ৯০ টাকা, তরকারি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, সরিষার তেল ৬০০ থেকে ৬২৫ টাকা হিসাবে প্রতি কুইন্টাল সরবরাহ করতেন। কিন্তু এরপর শ্রী দীঘল নতুন টেন্ডার ডেকে ডাল ১৯৭ টাকা, তরকারি ৮৫ টাকা, সরিষার তেল ৭২৫ টাকা প্রতি কুইন্টাল সরবরাহ নিচ্ছেন। যদিও অনেক সুলভমূল্যে সরবরাহ করার জন্য অনেকে ডাকে উপস্থিত ছিলেন। বাজারে যে কুমড়াে পঞ্চাশ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে তা কেনা হচ্ছে তিন টাকায়।
সালেমা সংলগ্ন ডলুছড়া শরণার্থী শিবিরের বন্টনকারী কোনাে হিসাবের নথিপত্র দেখাতে পারেননি। উপরন্তু শিবিরবাসীদের মধ্যে বিলিকৃত আহার্য দ্রব্যের মূল্য সর্বোচ্চ বাজার দর ধরলেও ৬৫ পয়সার বেশি হয় না তা বণ্টনকারী হাতেনাতে ধরা পড়ে স্বীকার করেছেন। সালেমা শিবিরের বণ্টনকারী স্বীকার করেছেন যে, প্রতিটি শরণার্থী দৈনিক ২৪ পয়সা করে কম পাচ্ছেন এবং তিনি অভিযােগ করেছেন যে মহকুমা শাসক স্থানীয় বাজার থেকে খাদ্যদ্রব্য ক্রয়ের অনুমতি দিচ্ছেন না। শিঙ্গিনালা শিবিরের নির্বিচারে পচা কাঁঠাল ও পচা আনারস শরণার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে এবং মুসুর ডালের পরিবর্তে মুগ ডাল অত্যন্ত কম পরিমাণে বিতরণ করা হচ্ছে। বাঘাইছড়া শিবিরে কোনাে মাপজোক ছাড়া খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি অভিযােগের ক্ষেত্রে শিবিরবাসীদের নামধাম তারিখসহ পূর্ণ বিতরণ স্মারকলিপিতে পেশ করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে অবিলম্বে উপরােক্ত অভিযােগগুলাের উপযুক্ত তদন্ত করে মহকুমা শাসকের অপসারণ দাবি করা হয়েছে।
সূত্র: দেশের ডাক
২৩ জুলাই, ১৮৭১