///আত্মগােপনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন না।///
:::::::::::::::
শেখ মুজিব কয়েক দিনের জন্য গা-ঢাকা দেন। এ প্রসঙ্গে তার অনেক দিনের রাজনৈতিক সাথি তৎকালীন ন্যাপ নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন। আইয়ুবের সামরিক শাসন জারির সঙ্গে সঙ্গে আমরা শেখ মুজিবুর রহমানকে আত্মগােপনের পরামর্শ দিয়েছিলাম। কারণ, সামরিক সরকার শেখ সাহেবকে গ্রেপ্তার করতে দৃঢ়সংকল্প ছিল। আমরা একটা গাড়িতে চড়িয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে সীমান্তের ওপারে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু অন্য সঙ্গীদের সেখানে রেখে তিনি দেশের ভেতরে চলে এসেছিলেন। গ্রেপ্তার বরণের জন্য তিনি তৈরি হয়েই ছিলেন। তিনি হয়তাে আত্মগােপনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন না। ১০ অক্টোবর রাতে আবুল মনসুর আহমদকে দুর্নীতি দমন আইনে গ্রেপ্তার করা হয়। একই অভিযােগে শেখ মুজিব ১২ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন। মওলানা ভাসানীকে ১২ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে ধানমন্ডির একটি সরকারি বাসায় অন্তরীণ করে রাখা হয়। ২০ অক্টোবর জেলে থাকা অবস্থায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে শেখ মুজিবকে নিরাপত্তাবন্দী হিসেবে দেখানাে হয়। এই আইনে তিনি জামিন-অযােগ্য বলে বিবেচিত হন।
নিম্ন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে নয়টি মামলা হয়েছিল। আটটি মামলাই খারিজ হয়ে যায়। একটি মামলায় ঢাকার জেলা ও সেশন জজ আবদুল মওদুদ ১৯৬০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দেওয়া রায়ে দুর্নীতির দায়ে শেখ মুজিবকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। তার মামলা পরিচালনা করেছিলেন সােহরাওয়ার্দী। ১৯৬১ সালের ২১ জুন শেখ মুজিব হাইকোর্টের রায়ে ওই মামলা থেকে মুক্ত হন।
সূত্রঃ আওয়ামী লীগ-উত্থান পর্ব-১৯৪৮-১৯৭০ – মহিউদ্দিন আহমদ