বাল্টিমোর সান, ২ নভেম্বর ১৯৭১
বাংলার যুদ্ধ চলছে
ভারতীয় সৈন্য পাকিস্তানী দের থামিয়ে দিতে চাইছে
– প্রিম সাভাল দিল্লি ব্যুরো অফ সান
নিউ দিল্লি- নিয়মিত সৈন্য জড়ো হবার প্রথম প্রধান ঘটনা। ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানি আর্টিলারিকে আক্রমণ করেছে যারা বাংলার সীমান্ত জুড়ে অগ্নিসংযোগ করছিল। একজন মুখপাত্র গত রাতে এ রিপোর্ট করেন।
আজ ভোরে ণয়াদিল্লিতে হেলিকপ্টার সহ আকাশপথে অনেক চলাচল দেখা যায়। এগুলো সব উত্তর ডিকে যাচ্ছিল।
রবিবার রাতে এবং গতকাল পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ব সীমান্তের একটি ছোট শহর কমলপুরের যা ঘটেছে তাকে কাউন্টারএকশন বলা যায় না।
মন্তব্য করতে রাজি হয়নি
সোর্স ধারণা করেছে যে প্লেনগুলো পশ্চিম সীমান্তে যাচ্ছে – যেখানে পাকিস্তান আক্রমণের হুমকি দিয়েছে – যদি ভারতীয় সৈন্য পূর্বাঞ্চলে আক্রমণ করে তবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাদের কার্যকলাপের উপর মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরা রাজ্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এখান থেকে পূর্ব থেকে পূর্ব পাকিস্তানে স্বল্প সময়ে যাওয়া যায়। এখানে পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে ভারত সমর্থিত গেরিলা বাহিনীর অনেক যুদ্ধ হয়েছে।
ভারতীয় মুখপাত্র আরো বলেন, পাকিস্তানি আর্টিলারি ভারতের ৪ মাইল ভিতরে কামালপুরে ১১ দিন ধরে শেলিং করছে। ভারত সীমান্ত ক্রস করেছে কিনা না জানালেও তিনি বলেন সেখানে কোন বিমান জড়িত হয় নি।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, পাকিস্তানিদের প্রচুর হতাহত হয়েছে তবে কোন বিবরণ পাওয়া যায়নি।
রেডিও পাকিস্তান কামাল্পুরের কথা না বললেও জানিয়েছে “ভারতের সৈন্য এবং তাদের সমর্থকরা” – সমর্থক বলতে বাঙ্গালী বিদ্রোহীরা – ভারতের আর্টিলারির সহায়তায় পূর্ব পাকিস্তানে প্রবেশ করছে।’
রেডিও সিলেট জেলার অংশ, যা ত্রিপুরার কাছে, , পূর্ব পাকিস্তানের উত্তর ও উত্তরপশ্চিম অংশে রাজশাহী ও দিনাজপুর জেলায় কিছু ঘটনার কথা বলে। এতে বলা হয়, ৭২ জন ভারতীয় ও বাঙ্গালী নিহত হয় এবং ৩৯ জনা হত হয়।
চুক্তি লঙ্ঘন
ভারতীয় বিবৃতি সুনির্দিষ্টভাবে প্রতিফলিত হয় রবিবার রাতে লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মন্তব্যে। তিনি বলেছেন, “পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে এবং সংকট আরো তীব্রতর হয়ে উঠছে।”
১৯৬৫ সালে যুদ্ধের পরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল যে তারা সীমান্তে যথেষ্ট দূরে অবস্থান করবে – কিন্তু সেই চুক্তি ভঙ্গ করে তারা অনেক কাছাকাছি দূরত্বে জড়ো হচ্ছে।
ভারত বলছে পূর্ব পাকিস্তানের সমস্যার সমাধান করতে এবং গত মার্চের সেনাবাহিনীর ক্রাশ একশনের পর থেকে যে ৯ লাখ শরনার্থি ভারতে প্রবেশ করেছে তাদের ফিরিয়ে নিতে।
পাকিস্তান ভারতকে হুমকি দিচ্ছে যদি ভারত পূর্ব পাকিস্তানের গেরিলাদের সাহায্য করে তাহলে পশ্চিম সীমান্তে ভারতকে আক্রমণ করা হবে – সেখানে পাকিস্তানের অবস্থান তুলনামূলক শক্তিশালী। তারা আরও বলছে গেরিলাদের কিছু অপারেটিং সেন্টার ভারতের ভিতরে অবস্থিত।
এযাবৎ ১৯৬৫ সালে ৩ সপ্তাহকালিন যুদ্ধে পশ্চিম সীমান্তের কাশ্মীরে পাকিস্তান থেকে গেরিলা ভারতে অনুপ্রবেশের কিছু ঘটনা ঘটেছে।
কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের উপর দিয়ে দ্বিতীয়বারের মত গতকাল পাকিস্তানী বিমান উড়তে দেখা যায় । সেটিকে এন্টিএয়ারক্র্যাফট দিয়ে তাড়ানো হয়।