ভারতের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখার জন্যই বাঙলাদেশের স্বীকৃতির প্রয়ােজন
বুদবুদের জনসভায় জ্যোতি দাশগুপ্তের ভাষণ
বুদবুদ (বর্ধমান), ১৫ মে (নিজস্ব)-বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সমর্থনে ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাঙলাদেশকে অবিলম্বে ভারত কর্তৃক স্বীকৃতির দাবিতে বুদবুদে এক বিরাট মিছিল ও জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির বুদবুদ আঞ্চলিক কমিটি এই আয়ােজন করেছিল।
সভায় ভাষণদান প্রসঙ্গে ‘কালান্তর সম্পাদক শ্রীজ্যোতি দাশগুপ্ত বলেন যে, একদিন স্বাধীনতাকামী ভারত স্পেন ও চীনের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ঘােষণা করে নিজের স্বাধীনতা আন্দোলনকে শক্তিশালী করেছিল। আজ ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সমর্থন ভারতের নিজের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখার জন্যই অতীব প্রয়ােজন। শ্রীদাশগুপ্ত বলেন যে, বাঙলাদেশের প্রতি সমর্থনে ও স্বীকৃতিতে ভারতের বিরুদ্ধে নয়া-উপনিবেশবাদীদের যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ে একথা জেনেই আমরা কমিউনিস্টরা বাঙলাদেশকে স্বীকৃতি দেবার দাবি জানাই। সি-পি-এম’এর স্লোগানগুলিকে ও আচরণকে বিশ্লেষণ করে শ্রীদাশগুপ্ত তার সুবিধাবাদী মুখােস খুলে দেন। বাঙলাদেশের ঘটনা থেকে ইন্দিরার শিক্ষা গ্রহণ করা কর্তব্য বলে যে প্রচার সি-পি-এম করে, শ্রীদাশ গুপ্ত তার ব্যাখ্যায় বলেন যে, গণতান্ত্রিক উপায়ে মানুষের আকাঙ্খ পূরণে ব্যর্থ হলে সশস্ত্র বিপ্লব অবশ্যম্ভাবী বলে শ্রীমতী গান্ধী নিজেই নির্বাচনী প্রচারে নেমেছিলেন। সিপিএম নেতৃত্ব এ ব্যাপারে আদৌ কোন মৌলিকত্ব দেখাচ্ছেন না। কিন্তু বাঙলাদেশের ঘটনা থেকে সি-পি-এম’এরও জাতীয় ঐক্যের শিক্ষা গ্রহণ করা কর্তব্য। আওয়ামী লীগ ও ন্যাপ নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে কিন্তু জাতীয় প্রয়ােজনে মুহুর্তের মধ্যে ন্যাপ আওয়ামী লীগ সরকারকে নিশ্চয়ই সমর্থন জানিয়েছে।
বুদবুদের এই সভায় শ্রীআবদুল হালিম সভাপতিত্ব করেন। সর্বশ্রী সুনির্মল চ্যাটার্জি এবং এম এল সিং সভায় ভাষণ দেন।
সূত্র: কালান্তর, ১৭.৫.১৯৭১