৭ জানুয়ারি ১৯৭১
- প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এবং সফররত কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো রাওয়ালপিন্ডিতে বিশ্ব শান্তির প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেন এবং উভয় দেশের সাধারণ স্বার্থ নীতিসমূহের সাদৃশ্যের কথা উল্লেখ করেন। ইয়াহিয়া খান কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সম্মানার্থে ভোজসভার আয়োজন করেন। উক্ত ভোজসভায় নেতৃদ্বয় পাকিস্তান এবং কানাডার মধ্যে বর্তমান বন্ধুসুলভ সম্পর্ক, সহযোগিতা ও সমঝোতার কথাও উল্লেখ করেন। ভোজসভায় মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, প্রধান নির্বাচনী কমিশনার বিচারপতি আব্দুস সাত্তার এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারিবৃন্দ যোগদান করেন। প্রেসিডেন্ট কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে একজন বন্ধু, বিশ্ব রাষ্ট্রনায়ক এবং এক মহান দেশের নেতা হিসেবে স্বাগত জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন যে, তাঁর সফর দুুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করবে। তিনি বলেন, উভয় দেশই বিশ্বশান্তি ও শুভেচ্ছা অক্ষুন্ন রাখতে আগ্রহী এবং কমনওয়েলথের ভিতরে বাইরে সাধারণ স্বার্থসংশ্লিষ্ট অধিকাংশ ব্যাপারে অনুরূপ নীতির অনুসারী। প্রেসিডেন্ট প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বন্ধত্বসুলভ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। অবশ্য তিনি প্রতিবেশী ভারতের সাথে সম্পর্ক কাশ্মীর এবং ফারাক্কা বিরোধের নিষ্পত্তি না হওয়ার দরুন মনোমালিন্যপূর্ণই রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক সমিতি গঠন করা হয়। ভূঁইয়া মোহাম্মদ ইকবাল ও চিন্ময় মুৎসুদ্দিকে যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে সমিতির ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহক পরিষদ নির্বাচিত করা হয়। উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক সংবাদপত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কার্যরত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই প্রথম এ জাতীয় একটি সমিতি গঠন করলেন। শীঘ্রই সমিতির কার্যনির্বাহক পরিষদের সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে অভিষিক্ত হবেন।
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগে রাতে জনৈক যুবককে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যুবকটি স্বীকার করেছে যে, সে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্যই গিয়েছিলো। সে আরও স্বীকার করে, সংগঠিত দলের (গ্যাং) পক্ষ থেকে তাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং বঙ্গবন্ধুর প্রাণনাশের জন্য ট্রেনিং ও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা যায় যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সুযোগের সদ্ব্যবহারের জন্য একটি অত্যন্ত শক্তিশালী সংগঠিত চক্র বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন রয়েছে।
-
Source: Bangladesh Liberation War Museum