You dont have javascript enabled! Please enable it! ভারতীয় মুসলমানরা কি বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়নি? - সংগ্রামের নোটবুক

ভারতীয় মুসলমানরা কি বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়নি?
প্রচলিত ধারণা এ রকম একটা ধারণা প্রচলিত যে, মুক্তিযুদ্ধের সময়, ভারতীয় মুসলমানরা বাংলাদেশকে সমর্থন দেয় নি, দিতে চায়নি। তবে, এ কথা পুরোপুরি সত্য নয়। মুসলমানদের একটি অংশ যারা ভারতে থেকেও মানসিকভাবে অনুগত ছিল পাকিস্তানীদের প্রতি, তারা ছাড়া সবাই বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছে যা আমাদের অনেকের অজানা। এখানে তার একটি উদাহরণ দিচ্ছি। জমিয়ৎ-উল-উলেমা ভারতীয় মুসলমানদের বেশ বড়সড় একটি রাজনৈতিক সংগঠন। আগস্ট মাসের শেষ দিকে তারা কলকাতায় একটি সম্মেলন করে। সম্মেলনে জমিয়াৎ-এর নেতৃবৃন্দ পাকিস্তানী প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে শুধু তীব্র নিন্দা নয়, তার বিচারেরও দাবি জানান। মুক্তিযুদ্ধকে তারা শুধু সমর্থনই নয়, ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি আহ্বান জানান, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য। এ বিষয়ে পত্রিকায় বিস্তারিত রিপোর্ট বেরিয়েছিল তার খানিকটা উদ্ধৃত করছি“সম্মেলনে বক্তৃতাকালে আই এন এ খ্যাত শানাওয়াজ খান ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক তাদের বিচারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন এবং বলেন যে, ইংরেজ তাকে ফঁসি দিতে শুধু ব্যর্থ হয়নি-ইংরেজকে ভারত ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে-তার গভীর বিশ্বাস ইয়াহিয়ার পরিণতিও সেরূপই হবে।নিখিল ভারত জমিয়ৎ-উল-উলেমার সাধারণ সম্পাদক মৌলানা এস এ মাসানি এম-পি গত ২৩ বছরব্যাপী পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব বাংলার উপর শোষণ ও অত্যাচারের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন। তিনি পবিত্র ইসলামের নামে ভারতের মুসলমান সমাজকে ৭৫ লক্ষ শরণার্থীদের ত্রাণের জন্য যথাসাধ্য। সাহায্য করার আবেদন জানান।জমিয়ৎ-সভাপতি মহম্মদ তাহের বলেন যে, রাষ্ট্রদ্রোহী যদি কাউকে বলতে হয়, সে হচ্ছে জেনারেল ইয়াহিয়া। মুজিবর যদি ভারতের এজেন্ট হয়, তবে গত ২৬ বছরব্যাপী বাংলাদেশের শোষণের জন্য কি ভারতই দায়ী? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ৬দফা দাবির মধ্যেই পাকিস্থানের ঐক্য নিহিত।
বাংলাদেশ মিশনের প্রধান হোসেন আলী এক বাণীতে বলেন যে, ইয়াহিয়া এবং তার তাবেদার শুধু ইসলামের মৌল শিক্ষাই অমান্য করেনি-ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হয়েছে। খায়াতুল্লা ‘আনসারি এমপি (ঙ্গেী) এবং খোন্দকার আবদুল গণিও বক্তৃতা করেন।
সূত্র : দৈনিক আনন্দবাজার, ৩০-০৮-১৯৭১।