You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তান চেলাচামুণ্ডাদের অপপ্রচারণা - সংগ্রামের নোটবুক
মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও তার চেলাচামুণ্ডাদের অপপ্রচারণা
অপরিণামদর্শী, অবিমৃশ্যকারী জুলুমবাজ পাক শাসকচক্র—নিরীহ বাঙালি জাতির শক্তি ও শৌর্য সম্পর্কে অন্ধকারে ছিল, তাই চল্লিশ দিনের মধ্যে বাঙালি জাতিকে ঠাণ্ডা করার দিবাস্বপ্ন নিয়ে মাঝরাতের অন্ধকারে যে দানবীয় আক্রমণ ও আঘাত শুরু করেছিল, অপ্রত্যাশিত প্রত্যাঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তাদের দাম্ভিক ঘাের কেটে যেতে খুব বেশি সময় লাগল না। সে রাতে ঢাকা বা অন্য বড় বড় শহরে সংঘটিত নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী ছিলেন দেশি-বিদেশি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অসংখ্য সাংবাদিক এবং বিভিন্ন পেশাসূত্রে আগত বিদেশি লােকজন। তারা কেউ পাকবাহিনীর পৈশাচিক নৃশংসতার পুরাে চিত্র দেখতে পাননি বটে, কিন্তু আংশিক হলেও প্রত্যক্ষ করতে পেরেছেন। এই বিদেশিদের বরাত দিয়ে যখন বাঙালি নিধনযজ্ঞের খণ্ড খণ্ড চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে উন্মুক্ত হয়ে গেল, তখন মিথ্যাচার—যা পাকিস্তানি রাজনীতির অবিচ্ছেদ্য উপাদান, তা তারা সমস্বরে শুরু করল, একই সাথে দেশে এবং বিদেশে; ওই রাতের ঘটনার সূত্র ধরে তারা বলল, হ্যা, সে রাতে একটু গণ্ডগােল হয়েছে বটে, কিছু দুষ্কৃতিকারীকে দমন করতে গিয়ে সামান্য বলপ্রয়ােগ করতে হয়েছে। এতে দুষ্কৃতিকারীসহ গুটিকয় বেসামরিক লােকও নিহত হয়েছে, তবে এর সংখ্যা নিতান্তই কম। হিটলারের কুখ্যাত মন্ত্রী। গােয়েবলস—যিনি মিথ্যেকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার অপকৌশলে অপরিসীম দক্ষ ছিলেন, তিনিও বােধহয় ‘৭১ কালীন পাকিস্তানি মিথ্যাচার শুনে লজ্জায় মুখ লুকিয়ে ফেলতেন। ঐতিহাসিক নৃশংসতার প্রতীক চেঙ্গিস খান, হালাকু খান প্রমুখ খান বাকরুদ্ধ হয়ে যেতেন, তাদের উত্তরসূরি ইয়াহিয়া খান আর টিক্কা খানের বর্বরতা দেখলে। 

২৫ মার্চ, মাত্র একটি রাতের তাণ্ডবলীলায় পাকবাহিনী কর্তৃক কতজন বাঙালি নিহত হয়েছেন, এর সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা কঠিন। কারণ, মাত্র কয়েক ঘণ্টায় এত মৃত্যুর উদাহরণ মানব ইতিহাসে আর একটিও নেই। ওই একটি রাতের হত্যাকাণ্ডে নিহতদের সংখ্যা নিয়ে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটা হয়েছে অনুমানের ভিত্তিতে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে সে সংখ্যাটি পঁচিশ হাজার থেকে লক্ষাধিক পর্যন্ত ওঠানামা করেছে, কিন্তু ভণ্ড মিথ্যাবাদী পাক সরকারের ভাষ্যমতে, সে রাতে নিহতের সংখ্যা ৪০ থেকে ১০০ জন মাত্র। ইয়াহিয়া নিজেও জঘন্য মিথ্যাচারের শরিক, ২৬ মার্চ জাতির উদ্দেশে বেতার ভাষণে বললেন, বাঙালিদের একটা অংশ পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্র করছিল, ওই ষড়যন্ত্রীদের শায়েস্তা করার জন্য সে রাতে দেশপ্রেমিক পাকসেনারা যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছিল এবং এ ঘটনায় কিছু লােক নিহত হয়েছিল বটে, দেশদ্রোহিতায় যারা অভিযুক্ত ‘দে উইল নট গাে আনপানিসড’। ২৫ মার্চের রাতে সংঘটিত পৈশাচিক নৃশংসতার আংশিক চিত্র দেখে বিশ্ববাসী যখন স্তম্ভিত, শোকে মুহ্যমান, তখন পাকিস্তানের প্রচার মাধ্যম থেকে বলা হয়েছে, মার্চের মধ্যভাগ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে বসবাসকারী বিহারিদের স্থানীয় বাঙালিরা নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছিল। ওই আক্রান্ত বিহারিদের জানমাল ও ইজ্জত রক্ষার্থে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ওই রাতে সামান্য ‘অ্যাকশন’-এ যায়; এর ক’দিন পর ভারত থেকে কিছু ‘সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারী’ তথাকথিত ‘মুক্তিবাহিনী’ নামে পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করে এবং ভারতের পােষা রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ সহায়তায় পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব বিনাশের চক্রান্ত শুরু করে। তখন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ওই দুষ্কৃতিকারীদের দমন করতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়, এতে পূর্ব পাকিস্তানের কিছু লোক স্থানচ্যুত হয়ে ভারতে চলে যায়।

ওই স্থানচ্যুতরা এখন দেশে ফিরে আসার জন্য উতলা হয়ে উঠেছে, কিন্তু ভারত নিজের ব্যবসা ও স্বার্থ হাসিলের জন্য ওদেরকে শরণার্থী বানিয়ে ক্যাম্পের মধ্যে আটকে রেখেছে। এই তথাকথিত ‘রিফিউজি’দের সহায়তা করার নামে ভারত বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসছে এবং তা নিজেরাই আত্মসাৎ করছে। প্রকৃতপক্ষে, পূর্ব পাকিস্তানে ‘গণহত্যা’ বিষয়ে যেসব খবর প্রচার করা হচ্ছে, সেটা ভারতীয় মিডিয়া আর আওয়ামী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বানানাে গল্প ছাড়া আর কিছু নয়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ‘নাজিবাহিনী’র চেয়েও অধিকতর কৌশল প্রয়ােগ করে চরম মিথ্যাকে সত্য বলে চালিয়ে দিয়ে বিশ্বদরবারে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে চাইছে। ভারত যদি পূর্ব এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে স্থায়ী বিভক্তি রেখা টেনে দিতে পারে, তাহলে পাকিস্তান নামক মুসলিম দেশটির শক্তি অনেকাংশে কমে। যাবে এবং এই সুযােগে সে অবৈধভাবে দখলকৃত কাশ্মির এলাকায় নিজের অপশাসন পাকাপােক্ত করে নিতে পারবে। বর্তমানে পূর্ব পাকিস্তানে কোনাে ধরনের অশান্তি নেই, সবকিছুই ‘স্বাভাবিক’, ‘স্থানচ্যুতরা স্বস্থানে ফিরে আসুক’ —এটাই পাক কর্তৃপক্ষের আন্তরিক আহ্বান। উল্লেখ্য যে, পাকিস্তানের প্রচার মাধ্যমে ‘রিফিউজি’ কিংবা ‘মুক্তিযােদ্ধা’ প্রভৃতি শব্দ ব্যবহার করা হতাে, রিফিউজি’র বদলে ‘স্থানচ্যুত’, ‘মুক্তিযােদ্ধা’র বদলে বলা হতাে ‘ভারতীয় দুষ্কৃতকারী’।
‘মিথ্যাচার’ ও ‘ধোকাবাজি’, এই নিয়ে পাক রাজনীতি-এর প্রমাণ পাওয়া যায় জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আগা শাহীর কথাতেও। পাকিস্তানি বর্বরতা শুরু হওয়ার পর তিনি মার্কিন টেলিভিশন সংস্থা এবিসি-র সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রপাগান্ডায় কমপক্ষে এক লাখ ষাট হাজার সশস্ত্রবাহিনীর লােক (এদের সবাই বাঙালি) বিদ্রোহ ঘােষণা করার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে তার মােকাবিলায় সামরিকবাহিনীকে নামাতে হয়েছিল। ২৫ মার্চ সামরিক বাহিনীকে এই মর্মে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, এই এক লাখ ষাট হাজার সশস্ত্র লােকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করাে। এখন কীভাবে তারা ব্যবস্থা নেবে? স্বাভাবিকভাবেই তাদের শক্তি প্রয়ােগ করার সময় হয়েছে। আর এই শক্তি প্রয়ােগ করার সময় কিছু বেসামরিক লােকও নিহত হয়েছে। যদিও কিছু বেসামরিক লােক মারা গেছে, তবু এ কথা ঠিক যে, সামরিকবাহিনীর অনিচ্ছায় এরা নিহত হয়েছে। সামরিকবাহিনী কিন্তু বেসামরিক জনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করেনি। (বাংলাদেশ ডকুমেন্টস, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৯২-৯৫)।
৩০ আগস্ট, কাবুলের পাকিস্তান দূতাবাস থেকে এক নিউজ বুলেটিনে নির্জলা মিথ্যাচার করা হয়, A member of the British Parliament Mr. John Osborne has strongly asserted that Pakistan Army is in fact preserving law and order in East Pakistan. Mr. Osborne was replying to argument by Krishna Menon, Indian Defence Minister, during discussion between them broadcast by BBC Television on 19th August, 1971. Mr. Osborne said displaced persons were returning to their homes in East Pakistan and life in villages was returning to normal. He categorically rejected Krishna Menon’s contention that there was genocide in East Pakistan. –The Indian News media have beaten even NAZI Propagandists in concocting and circulating baseless stories about Pakistan. পাকিস্তানি মিথ্যাচারের জঘন্য স্বরূপ বােঝা যায় মার্কিনি সাপ্তাহিক নিউজ উইকের সাথে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাক্ষাৎকারটি পড়লে। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন (৮ নভেম্বর), শেখ মুজিব আমার ব্যক্তিগত শত্রু নয়, সে হচ্ছে পাকিস্তানের জনগণের শত্রু। অনেক লােকই আমাকে বিশ্বাস করবে না, আমার মনে হয় আমি যদি মুজিবকে ছেড়ে দিই, আর সে যদি পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে যায়, তাহলে তার নিজের লােকেরাই তাকে হত্যা করবে। এরা সব দুঃখ কষ্টের জন্য মুজিবকে দায়ী করছে। বাঙালির বিরুদ্ধে এই পাকিস্তানি মিথ্যাচার, যা শুরু হয়েছিল ভাষা আন্দোলনের সময় থেকেই, মুক্তযুদ্ধকালীন তা নির্লজ্জ শোচনীয় রূপ নিয়েছিল। 
পাকবাহিনীর পােষ্য, বঙ্গদেশীয় সংবাদপত্র ‘দৈনিক সংগ্রাম’ তখন মুক্তিযােদ্ধা এবং ভারতীয় নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে এমনই মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছিল, যা গােয়েবলসীয় ভণ্ডামিকেও হার মানিয়ে গেছে। ১৩ জুন সংগ্রাম তার সম্পাদকীয় কলামে মন্তব্য করেছিল, পাকিস্তান যাতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে এবং জনগণের দুঃখ-দুর্দশা অধিক বৃদ্ধি পায়, এজন্য হিন্দুস্থান ও তার অনুচরেরা আকাশবাণীর দ্বারা রাতদিন এখনাে গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। এমনকি যারা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনার জন্য শান্তি কমিটি গঠন করে কাজ করে যাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যেও আকাশি হুমকি, এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে চোরাগােপ্তাভাবে হত্যাকাণ্ডও চালাচ্ছে। ৮ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশের স্বীকৃতির হিন্দুস্থানি ধাপ্পা শিরােনামে দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, হিন্দুস্থান গত পরশু তার ‘হাওয়াই বাংলাদেশ’কে স্বীকৃতি দিয়েছে। যে দেশের কোনাে অস্তিত্ব নেই বরং নিজের ভূখণ্ডে কল্পিত দেশের পুতুল কর্মকর্তাদের স্থান, সে দেশ সম্পর্কে এরূপ একটি ঘােষণা মূলত ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।হাওয়াই বাংলাদেশের স্বীকৃতি পূর্ব । পাকিস্তানি একশ্রেণীর লােককে বিভ্রান্ত করার হিন্দুস্থানি চক্রান্ত, বিপথগামী ব্যক্তিরা অনুধাবন করে পাল্টা রুখে দাননার অনুভূতি ফিরে পাক, আমরা এই কামনা করি। কিন্তু হায়—দৈনিক সংগ্রামের হুমকি-ধমকি, চতুরতা-ভণ্ডামি, মিথ্যাচার-দালালি—কোনােটাই প্রত্যাশিত ফল বয়ে আনতে পারল না, ন্যায়ের সংগ্রামে মিথ্যেধারী সংগ্রাম পত্রিকা একসময় বাধ্য হলাে ডাস্টবিনে চলে যেতে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ‘জন-কয়েক ভারতীয় অনুচরের দেশবিরােধী ষড়যন্ত্র হিসেবে প্রতিপন্ন করার জন্য তখন পাক শাসকচক্রের পাশাপাশি কিছু ‘বুদ্ধিভ্রষ্ট বঙ্গসন্তান’ও সারা বিশ্ব চষে বেরিয়েছেন। এরা জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রভাবশালী সংস্থা, প্রচারমাধ্যম ও বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানকে বােঝাতে সচেষ্ট হয়েছিলেন যে, বর্তমানে পূর্ব পাকিস্তানে যা হচ্ছে, সেটা সন্ত্রাসনির্ভর বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, এর কোনাে জনসমর্থন নেই, এই আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য ইয়াহিয়া সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলাে। সর্বাংশে সঠিক, তারা এবং অধিকাংশ পূর্ব পাকিস্তানি পাক সরকারের বর্তমান অবস্থানের পক্ষে আছেন। এসব বিশ্বাসঘাতক বঙ্গসন্তান—যারা বহির্বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধবিরােধী প্রচারণায় লিপ্ত হয়েছিলেন, এদের মধ্যে অন্যতম ক’জন হলেন, হামিদুল হক চৌধুরী, শাহ্ আজিজুর রহমান, রাজিয়া ফয়েজ, বিচারপতি নূরুল ইসলাম, ড, সাজ্জাদ হােসাইন, জুলমত আলী খান, ড. কাজী দীন মুহম্মদ প্রমুখ। কিন্তু এরা সত্য-মিথ্যের ধূম্রজাল সৃষ্টি এবং উদ্দেশ্যপ্রণােদিত প্রপাগান্ডায় অংশ নিলেও, সত্যের এমনই একটি শক্তি আছে, যা সব মিথ্যেকে অপসৃত করে দিয়ে একদিন স্বমহিমায় আবির্ভূত হবেই হবে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তা-ই হয়েছিল। 

[বি. দ্র. : মিথাচারে পাকিস্তানিরা বরাবরই কুখ্যাত, এ অপকর্মে তাদের রাজনীতিকরা যেমন, তেমনি পারদর্শী জেনারেলরাও; ওদের একজন জেনারেল, তােজাম্মেল হুসাইন মালিক তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ “দি স্টোরি অব মাই স্ট্রাগল’-এ বলেছেন, ২১ মার্চ, ১৯৪৮ জিন্নাহ যখন রমনার জনসভায় ঘােষণা করেন, “উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’, তখন এই উক্তির বিরুদ্ধে কোনাে প্রতিবাদ উচ্চারিত হয়নি, মালিকের ভাষায়, “When he decleared that the state Language shall be Urdu, there was not a even murmur from any quarter. They had come there not to question his decision but only to have glimpse of their beloved leader.’ পাকিস্তানের অন্য একজন জেনারেল, নিয়াজিতার ‘দি বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক ও বেসামরিক লোেকদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য ভারত সরকার অনেক নর্তকী, সেবাদাসী ও পতিতা প্রেরণ করেছিল পূর্ব পাকিস্তানে। তবে তারা পশ্চিম পাকিস্তানিদের ‘সিডিউস’ করতে পারেনি, কিন্তু বিপুল সংখ্যক পূর্ব পাকিস্তানিকে বিপথে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি দৃঢ় বিশ্বাস পােষণ করেন, পাকিস্তানিরা কোনাে বাঙালি মেয়েকে ধর্ষণ বা শ্লীলতা করেনি (পরাজিত পাকিস্তানি জেনারেলদের দৃষ্টিতে মুক্তিযুদ্ধ : মুনতাসীর মামুন)।

সূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সত্য অসত্য অর্ধসত্য-বিনয় মিত্র